বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এই ঈদ আনন্দর মধ্যে সরকারি নিপীড়নের কোন কমতি নেই। অসহিষ্ণুতা, সীমাহীন লোভ আর উদ্ধত রাষ্ট্রশক্তির আশ্রয় করে শুধুই একটি হিংসার বিকৃত রূপ দেখা যায় সরকারের আচরণে। ঈদের প্রাক্কালেও হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্বেও আমাদের কারাবন্দী নেতাদের মুক্তি দেয়া হয়নি। গায়েবী মামলা অব্যহত চলছে। সারাদেশে পুলিশের ছত্রছায়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চলছে নারকীয় আক্রমন।
বুধবার (২৮ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ঈদুল-আজহার প্রাক্কালে জনজীবনে নাকাল অবস্থা বিরাজ করছে। একদিকে যানজটে অসহনীয় ভোগান্তি অন্যদিকে সকল প্রকার খাদ্য পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। ভোটার বিহীন সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দল ও ভিন্নমতের মানুষদের উপর দমনপীড়নে যতোটা দক্ষ ততোটাই ব্যর্থ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দামসহ জনজীবনের সকল প্রকার ভোগান্তি কমাতে বিষ্ময়কর মুদ্রাস্ফীতি নিম্ন ও মধ্যভিত্তের স্বল্পআয় গিলে খাচ্ছে।
তিনি বলেন, জনম্যান্ডেটহীন আওয়ামী সরকার সিন্ডিকেট-হিতৈষী সরকার বলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দ্রুত বেগে ধাবমানতা আটকাতে পারছে না। অবৈধ সরকারের দুঃশাসনের যাতাকলে পড়ে স্বভূমির সীমানায় কেউ শান্তিতে নেই।
রিজভী কলেন, সিন্ডিকেট বান্ধব সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী ‘সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সংকট তৈরি হবে’ যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে সিন্ডিকেটে জড়িতরা আরো বেশি স্ফীতকায় ও ক্ষমতাবান হয়ে উঠবে, আরো বেশি প্রনোদিত ও উৎসাহিত হয়েছে। আসলে দেশবাসী সকলেই জানে যে, সিন্ডিকেটের সাথে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরাই জড়িত, সেজন্যই বানিজ্যমন্ত্রীকে সিন্ডিকেটের পক্ষে পক্ষাবলম্বন করতে হয়েছে।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, সারা বিশ্বে বর্তমানে খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও দেশে কেন লাগামহীন অবস্থা ? কারণ যে দেশের অর্থনীতি, টাকা পাচার আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হরিলুটের নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত সেখানে খাদ্যপণ্যের লাগাম টানা যায় না। মেগাদুর্নীতির ভাবধারা থেকে উৎসারিত তথাকথিত মেগা উন্নয়ন করতে গিয়ে মানুষকে কিনতে হচ্ছে ছোট মুরগী, ছোট ডিম, ছোট সাবান, ছোট রুটি। পাশাপাশি চাল, চিনি, মাংস ও সবজীর ওজন কমে যাচ্ছে। অর্থাৎ গরীব মানুষের আয় থেকে প্রয়োজনীয় পরিমান খাদ্যপণ্য কিনতে পারছে না। সরকারের বাজেট পূর্বের বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেলেও মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষদের ব্যক্তিগত বাজেট যথেষ্ট পরিমানে হ্রাস পেয়েছে।
রিজভী বলেন, বিদ্যমান অর্থনীতির এই নৈরাজ্যের মধ্যে এবারের কোরবানীর ঈদ পালিত হতে যাচ্ছে। খাদ্যপণ্যের অসহনীয় দাম, আইনশৃক্সখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। মানুষের ঈদ আনন্দ অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে। গত কয়েক মাসের মধ্যে চাল, চিনি, ডাল, শাক-সবজীর দামের বৃদ্ধি অনেক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁয়াজ ও কাচা মরিচসহ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম গ্যালাক্সিতে পৌঁছেছে। যার কারণে এবার পশুর হাটে তেমন বেচা-বিক্রি নেই, পশুরহাট জমে ওঠেনি। স্বভূমির সীমানায় কেউ শান্তিতে নেই। বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্য প্রভূত্বের ও জনগণকে অধীন করে রাখার প্রকাশ পায়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারীসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিবার্তা /এমই/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]