গণঅধিকার পরিষদে অস্থিরতা, পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৩, ১৭:৩৪
গণঅধিকার পরিষদে অস্থিরতা, পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার
মো. ইলিয়াস
প্রিন্ট অ-অ+

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ। দেশের রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ করে নতুন রাজনৈতিক দল ‘গণঅধিকার পরিষদ’। প্রতিষ্ঠার দুই বছর না পেরুতেই ভাঙনের সুর বাজছে এই দলে। চলছে বহিষ্কার পাল্টা বহিষ্কারের খেলা। দলটির আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়াকে সরিয়ে ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খানকে দলটির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হয়।


সোমবার (১৯ জুন) রাতে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কার্যনির্বাহী পরিষদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু এর একদিন পর মঙ্গলবার (২০ জুন) সদস্য সচিব নুরুল হক নুর ও মো. রাশেদ খানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্যদিকে নুর-রাশেদ ও রেজা কিবরিয়ার বিরোধের জেরে তাদের কার্যক্রম তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি করেছেন দলের অন্যরা।



জানা গেছে, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পরস্পরবিরোধী অবস্থানের কারণে দলটিতে অস্থিরতা চলছে অনেকদিন ধরেই। বিভিন্ন সময় তারা প্রকাশ্যেও বিরোধে জড়িয়েছেন। সম্প্রতি দলের দুই শীর্ষ নেতা একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বিবৃতি দিয়েছেন। তারা নিজেদের ফেসবুক ওয়ালেও পোস্ট দিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন।


সোমবার (১৯ জুন) রেজা কিবরিয়া এক ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘গতকাল ১৮ জুন ২০২৩ রোববার সন্ধ্যা ৭টায় গুলশান ২ এর ৫৫ রোডস্থ ২০নং বাড়িতে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার আহ্বানে তার সভাপতিত্বে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সদস্য সচিব ভিপি নুরুল হক নুরসহ গুরুত্বপূর্ণ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা রাত ৯.৩০ মিনিট পর্যন্ত চলে। সভায় দলীয় শৃঙ্খলা আনয়নের ক্ষেত্রে সদস্য সচিবকে আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগের কারণ ব্যাখ্যা চেয়ে আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া মতামত দিলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি উদ্ভব হয়। বয়োজ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ এমন পরিস্থিতিতে চরম অস্বস্তিতে পড়েন। এমতাবস্থায় সভার সভাপতি সভা স্থগিত করে সভাস্থল ত্যাগ করেন।’


রেজা কিবরিয়া আরও বলেন, ‘সভা চলাকালীন প্রবাসী অধিকার পরিষদের কমিটি পুর্নগঠন, ইতোমধ্যে সংগৃহীত অর্থের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং সুষ্ঠু হিসাব ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করা, দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে হুমকি এমন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও ইসরাইলের বিতর্কিত মোসাদ সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সাথে গোপন বৈঠক, দলীয় নেতৃবৃন্দদের নিয়ে সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে অসত্য সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে সদস্য সচিব ভিপি নুরুল হক নুরকে দায়ী করা হয়। দল পরিচালনার ক্ষেত্রে একক কর্তৃত্বের পরিবর্তে যৌথ নেতৃত্বের বিকাশে দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক উচ্চতর পরিষদ ও নির্বাহী পরিষদ গঠনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরবর্তী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে অভিমত প্রকাশ করা হয়।’


এর পরেই পাল্টা এক ফেসবুক পোস্টে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, ‘বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট পরিচয়ে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার পৃষ্ঠাপোষকতায় জনৈক মাসুদ করিম/এনায়েত করিমের বিএনপি ভাঙা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উকিল আব্দুস সাত্তার মডেলে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিতে কথিত সরকারবিরোধী প্রোগ্রামের নামে রেজা কিবরিয়ার ব্যাংকক, কাঠমুন্ডুতে একাধিকবার মিটিংয়ে অংশ নেওয়া এবং দেশে এসে মনোনয়ন বিক্রি ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা শওকত মাহমুদের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ এবং সর্বশেষ ইনসাফের প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার বিষয়ে গতকাল রেজা কিবরিয়ার বাসায় জরুরি মিটিংয়ে এসব বিষয়ে জবাবদিহিতা চাইলে তিনি সদুত্তর না দিয়ে নেতৃবৃন্দের প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে বাসার ছাদের মিটিং স্থান ত্যাগ করে বাসায় ঢুকে আর মিটিংয়ে আসেনি। যে কারণে আমরা তার উপস্থিতিতে আর মিটিং করতে পারিনি। তাই উপস্থিত সদস্যদের মতামতে আমরা বাকি আলোচনা সম্পন্ন করে আজকে পূর্ব নির্ধারিত মিটিংয়ে অসমাপ্ত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে সকলে একমত হই যে, মিটিং এখনো কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চলমান।’


নুর আরও বলেন, ‘নিজের অপকর্ম ঢাকতে আমাকে নিয়ে রেজা কিবরিয়ার অসত্য বক্তব্য ও মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ। রেজা কিবরিয়া কতটুকু অযোগ্য সেটা তার কাজকর্মে ইতোমধ্যে আপনারা পর্যবেক্ষণ করেছেন। গণঅধিকার পরিষদের মতো একটা সম্ভাবনাময় দলের আহ্বায়ক হয়েও তিনি ঐভাবে দলের মিটিং-মিছিল, কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন না। বরং টাকার লোভে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার ফাঁদে পড়ে তিনি বিএনপি ভেঙে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দুঃস্বপ্নে বিভোর। আমরা সেটাতে সমর্থন না দেওয়ায় আমাকে নিয়ে মিথ্যাচার করে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে গণঅধিকার পরিষদে ভাঙন ও সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। নিশ্চয়ই আপনারা অবগত আছেন, এই রেজা কিবরিয়ার কারণেই গণফোরামও ভেঙেছিল।’


এর পরপরই গণঅধিকার পরিষদের ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁনকে আহ্বায়ক ঘোষণা করে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় দলটি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অদ্য ১৯ জুন তারিখে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পূর্বনির্ধারিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্য সচিব মোহাম্মদ আতাউল্লাহ এর সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন সদস্য সচিব নুরুল হক নুর। সভায় সাংগঠনিক আলোচনা ছাড়াও গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার বিভিন্ন রাজনৈতিক তৎপরতায় উদ্ভূত পরিস্থিতি ও দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা সভায় নিম্নলিখিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সুশৃঙ্খলভাবে দলের নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার নিমিত্তে ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খাঁনকে সর্বসম্মতিক্রমে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে মনোনীত করা হয়।’


এরপর মঙ্গলবার (২০ জুন) পাল্টা বিজ্ঞপ্তিতে গণঅধিকার পরিষদ থেকে নূরুল হক নুর ও রাশেদ খাঁনকে অব্যাহতি দেওয়ার পর হাসান আল মামুনকে নতুন সদস্য সচিব হিসেবে ঘোষণা করেন ড. রেজা কিবরিয়া। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আমি ড. রেজা কিবরিয়া, আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ। সাংগঠনিক ক্ষমতাবলে পরবর্তী নির্বাহী সংসদের সভার আগ পর্যন্ত সদস্য সচিব হিসেবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও গণঅধিকার পরিষদের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা হাসান আল মামুনকে (মো. আল মামুন) ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব হিসেবে মনোনীত করছি। একই সঙ্গে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি এবং নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আন্দোলন বেগবান করার নির্দেশনা দেওয়া হলো।’


এর প্রতিক্রিয়ায় নুরুল হক নুর বলেন, ‘রেজা কিবরিয়া গণঅধিকার পরিষদের ১২১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির ২১ জনকেও ভালোভাবে চিনেন না, নামও বলতে পারবেন না। ৫৪ জেলা কমিটির ১০ জনকে চিনেন কি না সন্দেহ! গত পৌঁনে দুই বছরে রেজা কিবরিয়া সংগঠনে পৌঁনে দুই লাখ টাকাও খরচ করেননি, ২০টা প্রোগ্রামেও ছিলেন না। গণঅধিকার পরিষদ কিংবা গণঅধিকার পরিষদের অঙ্গসংগঠন/ভ্রতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদ, যুব অধিকার পরিষদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদ, প্রবাসী অধিকার পরিষদ, পেশাজীবী অধিকার পরিষদ গঠনে রেজা কিবরিয়ার কোনো ভূমিকা নাই। সব কিছু গুছিয়ে আমরাই তাকে একটা গোছানো প্ল্যাটফর্মে এনেছিলাম। তিনি সে সম্মান ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। সুতরাং গণঅধিকার পরিষদের সংগঠকদের কাউকে বহিষ্কার করা বা গণঅধিকার পরিষদকে বিভক্ত করার যোগ্যতা রেজা কিবরিয়া রাখেন না। বিদেশ বসে মাতাল হয়ে তিনি কী প্রেস রিলিজ দিলেন তাতে আমাদের কিচ্ছু যায়/আসে না। আমরা কেন্দ্রীয় মিটিং ডেকে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করেছি।’


জানতে চাইলে গণঅধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ‍রাশেদ খান বিবার্তাকে বলেন, আমাকে দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কিন্তু আমি দায়িত্ব নিতে চাইনি। আমাদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া দেশের বাইরে থাকায় আমাকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি নিতে চাইনি, বলেছি আমি বিতর্কিত হতে চাই না। তারপরও আমার উপর তারা দায়িত্ব অর্পণ করেছে। এরপর দেখছি রেজা কিবরিয়া আমাকে এবং নুরকে বহিষ্কার করেছে। বহিষ্কার করতে হলে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং এর দরকার হয় এরপর সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কিন্তু তিনি কিভাবে কি করলেন জানি না।


পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার এবং অভিযোগ করা হচ্ছে এতে দলের মধ্যে ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যারা কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছি তাদেরকে নিয়েই মূলত এই দলটি গঠন করা হয়েছে। আমরা সকলের সাথেই কথা বলছি, খোঁজখবর নিচ্ছি- এটার সমাধান হয়ে যাবে। আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি বিষয়গুলো নিয়ে বসেছি এবং আরও বসব। আশা করছি খুব শিগগিরই এসব বিষয় নিষ্পত্তি হবে।


গণঅধিকার পরিষদের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব হাসান আল মামুন বিবার্তাকে বলেন, অনেক আগেই কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে আমরা বলেছি যদি কেউ সংগঠন বিরোধী কোন কার্যক্রমের সাথে যুক্ত থাকে তাহলে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হোক। পরে যদি দল মনে করে তার কার্যক্রম সংগঠন বিরোধী, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু নুরুল হক নুর তখন সেটা আমলে নেয়নি। এখন তাদের দুইজনের ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে একে অপরের ওপরের দোষারোপ করছেন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও বহিষ্কার করা হলো। আমরা কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছি, আমাদের এই দলের জন্মই হয়েছে সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।


তিনি বলেন, নুর ইসরায়েলি এজেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছে। আবার তার বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগও রয়েছে। আবার রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ এনেছেন অনেকে। আমরা চাই এসবের তদন্ত হোক। এরপর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আপনি কাউকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়া এভাবে বহিষ্কার করতে পারেন না। রেজা কিবরিয়া দলের আহ্বায়ক- কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়া এভাবে কাউকে বহিষ্কার করতে পারেন না।


দলের মিডিয়া সমন্বয়ক আবু হানিফ বিবার্তাকে বলেন, ড. রেজা কিবরিয়া আর্থিক অস্বচ্ছতার যে অভিযোগ এনেছেন তা ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাদের দলের আর্থিক কমিটি রয়েছে, সকল লেনদেন অর্থ কমিটির মাধ্যমে হয়। আর দলের যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে- তা শীঘ্রই শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাধান হয়ে যাবে। গণঅধিকার অধিকার পরিষদকে ঘিরে মানুষ যে স্বপ্ন দেখে তা বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা কাজ করে যাব। চলমান ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে আরো সোচ্চার হবে গণঅধিকার পরিষদ।


এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ড. রেজা কিবরিয়া দেশের বাইরে অবস্থান করায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।


পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বিবার্তাকে বলেন, রেজা কিবরিয়াকে তরুণরা খুব আশা নিয়ে দলে এনেছিলাম। তিনি আসলে রাজনীতির মানুষ নয়, এ কারণে দলকে তেমন সময় দিতেন না এবং এগিয়ে নেওয়ার জন্য কখনো কাজও করেননি। তিনি ড. কামাল হোসেনের ২৬ বছরের গণফোরাম ভেঙে দিয়েছেন। এখন গণঅধিকার পরিষদ এবং বিএনপি ভেঙে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। যেখানে বিএনপির সাথে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করছি, সেখানে তিনি বিএনপি থেকে বহিষ্কৃতদের সাথে ইনসাফ পার্টিতে সক্রিয় ভুমিকা পালন করছেন। এমনকি দলের অনেক নেতাকর্মীদের টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে থাকার জন্য প্রলুব্ধ করেছিলেন। যেহেতু তরুণদের দিয়েই এই দল গড়ে উঠেছে- যেখানে আমি রয়েছি তাই তিনি বুঝতে পেরেছে এখানে প্রভাব বিস্তার করা সম্ভব নয়, তাই দল ভাঙার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি আমাদের জন্য বিপদজনক ব্যক্তি হয়ে উঠছেন। তখন আমরা দল বাঁচাতে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেই- ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও কাউন্সিল করার বিষয়ে। কিন্তু তিনি এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিদেশ থেকে প্রেস রিলিজ দিয়ে আমাকে ও রাশেদকে বহিষ্কার করেন। তিনি বিদেশে বসে তো সদস্য সচিবকে বহিষ্কার করতে পারেন না। আমরা যেটা করেছি- সেটা সকলে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উনি যেটা করেছেন এটা অমানবিক। ওনাকে আমরা এই প্লাটফর্মে এনেছিলাম, কিন্তু তিনি সেই যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারেননি।


অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা উনি ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থেকে করেছেন। যেহেতু উনি বুঝতে পেরেছেন এই দলটা তরুণদের আর তরুণদের নিয়ন্ত্রণে ভিপি নুর। সুতরাং তাকে বিতর্কিত করা গেলে, তাকে নিয়ে প্রশ্ন তোলা গেলে তার সাথে কিছু লোক ভেড়াতে পারবেন। এই কারণে তিনি মূলত এই কাজগুলো করেছেন। এরকম কিছু হলে তিনি এতদিন জানাননি কেন? তাকে বহিষ্কার করার পরে তিনি এসব কথা বলছেন। এসব কথা একেবারে ভিত্তিহীন, অবাস্তব।


বিবার্তা/এমই/রোমেল/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com