‌'শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন বলে আজ বাংলাদেশ আলোয় উদ্ভাসিত'
প্রকাশ : ১৭ মে ২০২৩, ০৯:৩৪
‌'শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন বলে আজ বাংলাদেশ আলোয় উদ্ভাসিত'
মোছা. রোজিনা খাতুন
প্রিন্ট অ-অ+

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যা করা হয়। সেই সময়ে শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন। যার ফলে তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন তাঁর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা।



১৯৮১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে থাকা অবস্থায় শেখ হাসিনা খবর পান, ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে তাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে। এর এক সপ্তাহ পরে আওয়ামী লীগের সেই সময়ের শীর্ষ নেতারা দিল্লি যান। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কয়েকটি বৈঠক করেন তারা। শেখ হাসিনা দেশে ফেরার জন্য মার্চ মাসের দুটো সম্ভাব্য তারিখও প্রস্তাব করা হয়। যদিও পরে বহু প্রতিবন্ধকতার পথ মাড়িয়ে ১৭ মে বিকেলে কলকাতা থেকে ঢাকায় পৌঁছান শেখ হাসিনা।



সেদিন প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে লাখো জনতা জড়ো হয়েছিল তেজগাঁওয়ের পুরনো বিমানবন্দরে। বিমানবন্দর থেকে শেখ হাসিনাকে নিয়ে যাওয়া হয় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে। সেখানে লাখো জনতার উপস্থিতিতে এক সমাবেশে শেখ হাসিনা বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলেছিলেন, সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির জনকের হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই। আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেলসহ সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি। আমি আপনাদের মাঝেই তাদেরকে ফিরে পেতে চাই।


দেশে ফেরার পর থেকে দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে টানা চার দশকের বেশি সময় ধরে সফলভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া থেকে শুরু করে নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আজকের অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছেন শেখ হাসিনা। তাঁর দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বে চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রক্ষমতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে ১৯ বছর ধরে দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।


আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দেশে যখন খুন, হত্যা, রাহাজানি চলছিল। গণতন্ত্র যখন নির্বাসিত ছিল। ঠিক সেই সময়ে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের জন্য জীবনের মায়া ত্যাগ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলার মাটিতে পা রাখেন। অন্ধকার সেই সময় পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের আলোয় উদ্ভাসিত। চরম দারিদ্রপীড়িত দেশ থেকে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে কাছে উন্নয়নের রোল মডেল।



শত বাঁধা-ভয় উপেক্ষা করে দেশে ফিরেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা: হানিফ



১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবার হত্যার পর আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার কার্যক্রম শুরু করেছিল। আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা, গুম করা হয়েছিল। এরকম এক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হলেন। শত বাঁধা-ভয় উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে তিনি আওয়ামী লীগের হাল ধরেন।


দলকে সুসংগঠিত করার পাশাপাশি জনগণকে ধীরে ধীরে সামরিক স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করেন। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম শেষে ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজিত হলেও ২০০৮ সালের সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারো ক্ষমতায় নিয়ে আসেন। এরপর থেকে টানা তিনবারের মত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। আজকে বাংলাদেশ সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ চরম দারিদ্রের দেশ থেকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। আমরা মনে করি এটা জাতির জন্য বিরাট এক প্রাপ্তি।


মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।



বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা: বি এম মোজাম্মেল



বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির স্বাধীনতার লক্ষ্যকে, মূল্যবোধকে এবং চেতনাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিল খুনী মোশতাক ও জিয়াউর রহমান। নিরাপদ, সুন্দর বাংলাদেশের ধারণাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, মুক্তিযুদ্ধে চেতনা যারা ধারণ করে সেই সব মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই সময়ে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন করে গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করা হয়েছে। মানবাধিকারকে হত্যা করা হয়েছে। তখনই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হলেন এবং বাঙালি জাতির মাঝে ফিরে আসেন।


বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ২০ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সবকিছু উপেক্ষা করে তিনি আমাদের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার জন্য লড়াই করেছেন এবং তা ফিরিয়ে এনেছেন। কোনো কিছুই তাকে দাবায়ে রাখতে পারেনি। আজকে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ বদলে গেছে। যে দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ, ব্যর্থ রাষ্ট্র বলা হত- সেই দেশ আজকে উন্নয়নের মডেল। উন্নয়নে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।


বি এম মোজাম্মেল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।



শেখ হাসিনা ফিরে এসেছিলেন বলে আজ বাংলাদেশ আলোয় উদ্ভাসিত: আফজালুর রহমান



১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে না আসলে এই বাংলাদেশ অন্ধকারাচ্ছন্নই থাকত। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার পর আওয়ামী লীগ তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। সেই সময়ে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি ফিরে এসেছিলেন বলে আজ বাংলাদেশ আলোয় উদ্ভাসিত। আজকের বাংলাদেশে যত মেগা প্রকল্প হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকায় এসবের বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে যদি উন্নয়নের রূপকার কেউ থাকেন তিনি হলেন শেখ হাসিনা।


বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শুধু ঘুরেই দাঁড়ায়নি; উন্নয়নে পৃথিবীতে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। সারা পৃথিবীতে নিজেকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। যারা মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছেন, আজকে তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাহস নিয়ে সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন।


একেএম আফজালুর রহমান বাবু, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ।



বাংলাদেশকে সমৃদ্ধিশালী শান্তিপূর্ণ জনপদে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা: নাদেল



১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পিতা-মাতা-ভাই পরিবারের সবাইকে হারিয়েছেন শেখ হাসিনা। ঘটনাক্রমে দেশে না থাকায় ছোট বোন শেখ রেহানাসহ তিনি প্রাণে বেঁচে যান। আকস্মিক সুনামির মতোই তিনি জন্মদাতা পিতা-মাতাকে হারিয়েছেন।বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করার পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকেও হত্যা করা হয়। আর এর মধ্য দিয়ে নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সংবিধান, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন ভেঙে পড়েছিলো। সামরিকতন্ত্র স্থায়ী আসন গেড়ে বসে ছিল।


বাংলাদেশে তখন ঘোর অমাবস্যা। এমনই এক পটভূমিতে ১৯৮১ সালে তার অনুপস্থিতিতে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দীর্ঘ নির্বাসন থেকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে শিশুপুত্র-কন্যাকে ফেলে দেশের ডাকে, জাতির প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন তিনি। অগণিত রাজনৈতিক কর্মী নতুন দিশার সন্ধান পায়। সেই যে লক্ষ্য নির্ধারণ তারই সফল জীবনচরিত আজকের সফল প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের মতো দারিদ্র্যপীড়িত ও ভঙ্গুর গণতান্ত্রিক একটি দেশকে উন্নয়নের পথে, মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করে একটি সমৃদ্ধিশালী শান্তিপূর্ণ জনপদে পরিণত করেছেন।


শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।


বিবার্তা/সোহেল/রোমেল/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com