গণঅভ্যুত্থান অবশ্যম্ভাবী, সরকারকে প্রিন্স
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:২০
গণঅভ্যুত্থান অবশ্যম্ভাবী, সরকারকে প্রিন্স
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ক্ষসতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, গ্রাম ও শহরের জনপদে অধিকার হারা, নিরন্ন বুভুক্ষ মানুষের যে পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে তাতে গণঅভ্যুত্থান অবশ্যম্ভাবী।


সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।


তিনি বলেন, সরকারকে দমন-নিপীড়ন করে আন্দোলন নসাৎ করার পথ পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছি এবং জনদুভোর্গ সৃষ্টিকারী, গণতন্ত্র হরণকারী সরকারকে দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্রের বৃহত্তর স্বার্থে সংঘাত উস্কানির পথ পরিহার করে গণদাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের পথ সুগম করার ও জনগণের স্বাধীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্ত্বশীল সরকার, সংসদ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাই। অন্যথায় গ্রাম ও শহরের জনপদে অধিকার হারা, নিরন্ন বুভুক্ষ মানুষের যে পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে তাতে গণঅভ্যুত্থান অবশ্যম্ভাবী।


এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে হামলাবাজ, মামলাবাজ সরকার ও ক্ষমতাসীনদল আওয়ামী লীগ বরাবরের মতই বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে, কোথাও কোথাও অঘোষিতভাবে পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে, গাড়ীর রির্জাভেশন বাতিলসহ যাত্রী পরিবহনের গাড়ীতেও নেতাকর্মীদের আসতে দেওয়া হয়নি। নেতাকর্মীরা কষ্ট করে পায়ে হেটে, ভ্যানে চড়ে, নৌকায় করে বা অন্য কোন বিকল্প উপায়ে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।


তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপির কর্মসূচির দিনে শান্তি সমাবেশের নামে পাল্টা সমাবেশ দিয়ে, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে মহড়া দিয়ে অশান্তি, সংঘাত সৃষ্টি করে। এবারও তারা একই পথ অবলম্বন করেছে। বিভিন্ন জায়গায় তারা মহড়া দিয়ে সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের উপর নির্মম হামলা করেছে, নেতাকর্মীদের আহত করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলাকারীদের গ্রেফতার না করে উল্টো আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এবং মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এমনকি ঘটনাস্থলে ছিলেন না, এমন অনেক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে।


'আমরা এই গ্রেফতার, দমন-নিপীড়ন, মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এসব বন্ধ করে গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে, হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। জনবিচ্ছিন্ন সরকার গণআন্দোলনের ভয়ে ভীত হয়ে এই নিষ্ঠুর দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। দমন-নিপীড়ন করে জনগণ এবং নেতাকর্মীদের ভয় দেখানো যাবে না। যারা সমাবেশ, পদযাত্রার মত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে ভয় পায় তারা জনবিচ্ছিন্ন এবং আন্দোলনের ভয়ে ভীত।'


প্রিন্স বলেন, এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নাই, মাথার উপর থেকেও ছায়া সরে যাচ্ছে। এজন্য তারা দমন-নিপীড়ন করে আন্দোলন দমনের পথ বেছে নিয়েছে। আমরা দ্ব্যার্থহীন ভাষায় বলতে চাই, গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা, দমন করে আন্দোলন নস্যাৎ করার দিন শেষ। জনগণ আজ জেগে উঠেছে।


এই সরকার জনগণের সরকার নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই সরকার গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। দুর্নীতি, লুটপাট করে জনগণের অর্থ পাচার করে দেশ-বিদেশে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ছে। অন্যদিকে সর্বগ্রাসী সংকটে জনগণ দিশেহারা। সরকার ও তার অনুগতদের দুর্নীতি, লুটপাটের কারণে বিদ্যুৎ, গ্যাসের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। সরকার ও তার অনুগতদের দুর্নীতির মাশুল দিতে হচ্ছে জনগণকে। জনগণের চরম দুর্দিনে তাদের পকেট কেটে নিজেদের দুর্নীতির ফলে সৃষ্ট ঘাটতি পূরণ করছে সরকার।


নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে মন্তব্য করে বিএনপির দফতর সম্পাদক বলেন, মানুষের আয়-ইনকাম সংকুচিত হয়ে গেছে। টিসিবি-ওএমএস এর গাড়ীর পেছনে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তসহ আয়-ইনকাম বিহীন মানুষের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হচ্ছে। সেখানেও সকলকে চাল দেওয়া যাচ্ছে না। চাল না পেয়ে নিরন্ন বুভুক্ষ মানুষ ট্রাকের উপর পড়ে থাকা ছড়ানো ছিটানো চাল কুড়িয়ে নিচ্ছে। নিদারুণ কষ্টে আছে সাধারণ মানুষ, অত্যন্ত মানবেতর অবস্থায় তারা দিন যাপন করছে। অথচ সরকার নির্বিকার, মিথ্যা অহমিকা ও মিথ্যাচার করে দেশের প্রকৃত চিত্র তারা আড়াল করতে চায়।


বিবার্তা/কিরণ/জেএইচ


সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com