সকাল থেকে ছিটেফোঁটাও বৃষ্টির দেখা নেই। কিন্তু কাজে বেরোনোর ঠিক আগে এমন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এল যে, রাস্তাঘাট একেবারে কাদা প্যাচপেচে হয়ে একাকার কাণ্ড। কোথাও কোথাও আবার একটু বৃষ্টি মানেই জল জমে রাস্তা আর নর্দমা একাকার অবস্থা। ঠিক এ কারণেই বর্ষাকাল পছন্দ করেন না অনেকে। নোংরা জল পেরিয়ে বাইরে যেতেই কেমন যেন গা ঘিনঘিন করে।
বৃষ্টির আসল মজাটাই উবে যায় শহরে থাকলে। আচ্ছা এমন কোথাও কি যাওয়া যায়, যেখানে বৃষ্টি হবে অথচ জল দাঁড়াবে না? বর্ষার ঘন কালো মেঘ দেখে রাস্তার পাশে জমা জল-কাদার কথা মনে পড়বে না?
মেঘালয় রাজ্যের ছোট্ট শহর হল চেরাপুঞ্জি। একটা সময়ে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হত এই চেরাপুঞ্জিতেই। তবে এখন সেই খ্যাতি কেড়ে নিয়েছে মৌসিনরাম।
প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য এবং মেঘ, বৃষ্টির খেলা দেখতে দেখতে সময় কেটে যাবে অনায়াসে। গুহা, লেক, পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা ঝর্না— কী নেই চেরাপুঞ্জিতে? রাস্তা দিয়ে যেতে যেতেই চোখে পড়তে পারে ‘সেভেন সিস্টার্স ফল্স’।
এখানে এলে একবার ঘুরে দেখতেই হবে ডউকি লেক। বিশ্বের সবচেয়ে স্বচ্ছ জলের নদী এই ডউকি। এই লেকের জল এতটাই স্বচ্ছ যে নৌকার ছায়া দেখা যায় জলের গভীর পর্যন্ত। নৌকাবিহার করতে করতেই দেখা যায় জলের তলায় মাছেদের আনাগোনা।
এখানে মেঘ উড়ে বেড়ায় আপন মনে। রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন? হঠাৎ রিমঝিম বৃষ্টিতে ভিজে একাকার! মেঘের ছিটেফোঁটাই ঝরেছে বৃষ্টি হয়ে। এখানে এমন বৃষ্টি নিত্যদিনের ব্যাপার। বৃষ্টিকে সঙ্গে নিয়ে গুটিগুটি পায়ে পথ চলছেন। হঠাৎ কুলকুল শব্দে চোখ তুলে তাকালেই দেখবেন একদম রাস্তার পাশেই ঝরনার উচ্ছ্বাস! মেঘ, বৃষ্টি আর ঝরনার শহর এটি। বলছি মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জির কথা, যেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। চেরাপুঞ্জি ঘুরে আসতে চাইলে এখনই সময়।
শিলং থেকে ৫৬ কিলোমিটার দূরে বৃষ্টির শহর চেরাপুঞ্জি। চেরাপুঞ্জির চলতি পথের সৌন্দর্যের কোনও তুলনা হয় না। এখানে ছোটখাট ঝরনা চোখে পড়ে পথ চলতে চলতেই। এছাড়াও সেভেন সিস্টার্স ফলস রয়েছে যা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। দেখতে পারবেন রামকৃষ্ণ মিশন।
প্লাস্টিক, আবর্জনাহীন এই জায়গা দেখলে মনে হবে যেন রূপকথার গল্পে বর্ণিত। এ ছাড়াও ঘুরে দেখতে পারেন লিভিং রুট ব্রিজ এবং এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম মওলিনলং।
কীভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে ট্রেনে বা বিমানে গুয়াহাটি কিংবা শিলং পৌঁছনো যায়। শিলং থেকে গাড়িতে চেরাপুঞ্জি যেতে সময় লাগে দেড় ঘণ্টার মতো। পাহাড়ের গা বেয়ে তৈরি রাস্তা দিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে পৌঁছে যাওয়া যায় চেরাপুঞ্জি। থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোটেল এবং রিসর্ট রয়েছে, তবে আগে থেকে থাকার জায়গা ঠিক করে রাখাই ভালো।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]