শিরোনাম
‘তরুণ প্রজন্ম রুখে দাঁড়ালে দেশ দুর্নীতিমুক্ত হতে বাধ্য’
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৫:৪৭
‘তরুণ প্রজন্ম রুখে দাঁড়ালে দেশ দুর্নীতিমুক্ত হতে বাধ্য’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশপ্রেম, নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে দুর্নীতির মূলোৎপাটনে তরুণ প্রজন্মসহ সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।


দুর্নীতির মূলোৎপাটনের সুফল দেশের প্রতিটি নাগরিক ভোগ করবে এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আমাদের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।


আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস-২০১৮ উদযাপন উপলক্ষে রবিবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আয়োজিত শিক্ষার্থী ও সততা সংঘের সদস্যদের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা অডিটরিয়ামে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।


প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশপ্রেমের মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে দুর্নীতি কমিয়ে আনা সম্ভব। দুর্নীতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করছে। সবাইকে একযোগে দুর্নীতিকে না বলতে হবে এবং বয়কট করতে হবে।


তিনি বলেন, বিজয়ের এ মাসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, মহান স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করছি। আরো স্মরণ করছি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগকারী ৩০ লাখ শহীদদের।


দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের বৈশ্বিক অভিযাত্রার অংশ হিসেবে এই মহতী অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য প্রধান বিচারপতি দুদককে অভিনন্দন জানান।


সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। আমার বিশ্বাস আজকের এই অনুষ্ঠানে সততা সংঘের সদস্যসহ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আমাদের দুর্নীতিমুক্ত করার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।


তিনি বলেন, দুর্নীতিবিরোধী গণজাগরণে জাতির আগামী প্রজন্মকে সম্পৃক্তকরণে দুদকের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। দুর্নীতি আমাদের একটি জাতীয় ব্যাধি। এটি সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করে ও সুষম রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন ব্যাহত করে। জাতীয় এই সমস্যা প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে দুদককে একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির ফলে ক্ষমতাবান দুর্নীতিবাজরা শংকিত হয়ে পড়ে।


তিনি আরো বলেন, দেশপ্রেম, আদর্শ ও নৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধের আন্দোলনকে সার্বজনীন করার লক্ষ্যে জাতিসংঘ বছরের একটি দিনকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।


প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষেরা অনেক ত্যাগ ও কষ্টের বিনিময়ে আমাদেরকে এই স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। এই দুর্নীতি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও চেতনাকে অবমাননা করছে। সমাজ হতে দূরে সরে যাচ্ছে আদর্শ ও নৈতিকতা। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে এদেশের যুবসমাজ সবচেয়ে বড় শক্তি এবং অপার সম্ভাবনা।


তিনি বলেন, অদম্য আগ্রহ, সৃজনশীলতা ও সুন্দর বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে তাদের সর্বাত্মক অংশগ্রহণ আজ সময়ের দাবি।


তিনি আরো বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে আমাদের ছাত্রসমাজের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আমাদের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করেছে। আত্মশক্তি বিকাশের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থী সমাজ তথা তরুণ প্রজন্ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে দেশ দুর্নীতিমুক্ত হতে বাধ্য।


প্রধান বিচারপতি তার বক্তৃতা শেষ করার আগে হয়রত আলী (র.)’র উক্তি উল্লেখ করেন, তা হলো, দেশের বিদ্বান ব্যক্তিরা লোভী হলে, দেশের নেতারা ঐশ্বর্যের পেছনে ছুটলে, দেশের ব্যবসায়ীরা অসাধু হলে, দেশের প্রশাসন এবং ন্যায়দণ্ডধারী বিচারকরা দায়িত্বহীন হলে দেশ ও দেশের নিপীড়িত জনগণকে কে রক্ষা করবে?


দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুদকের কমিশনার ড. মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক খান, কমিশনার এ. এফ. এম আমিনুল ইসলাম, সচিব ড. শামসুল আরেফিন, সততা সংঘের সদস্যরা।


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com