শিরোনাম
বিশ্বব্যাংক আইএমএফের বার্ষিক সভা
রোহিঙ্গাদের জন্য অনুদান চাইবে বাংলাদেশ
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০১৮, ২০:৪৮
রোহিঙ্গাদের জন্য অনুদান চাইবে বাংলাদেশ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এবারের বার্ষিক সম্মেলনে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য অনুদান চাইবে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে এসব রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যেন নিরাপদে ও সম্মানের সাথে নিজ জন্মভূমিতে ফিরে যেতে পারে সেজন্য বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের হস্তক্ষেপ কামনা করবে।


এছাড়া বিশ্বব্যাংকের দ্য ইন্টারনাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) বিশেষ সুবিধার ঋণ ও অনুদানের পরবর্তী পর্বে বাংলাদেশকে অন্তর্ভূক্ত করার প্রস্তাব করবে বাংলাদেশ।


অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।


আগামী ১২ থেকে ১৪ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ার বালিতে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভায় যোগ দিতে আজ রাতে বালির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এই সভায় যোগ দেবেন।


প্রতিনিধি দলে থাকছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মো. ফজলে কবির, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব কাজী শফিকুল আযম, ভারপ্রাপ্ত অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বিশ্বব্যাংকের বিকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ। জাকার্তাতে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আজমল কবির সম্মেলনে যোগ দেবেন।


এই সম্মেলন উপলক্ষে ১০ দিন বালিতে অবস্থান করবেন অর্থমন্ত্রী। এ সময় বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভার গুরত্বপহৃর্ণ কয়েকটি বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। এছাড়া কয়েকটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নেবেন। সভা চলাকালে অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করবেন অর্থমন্ত্রী।


ওই বৈঠকেই বাংলাদেশের স্বার্থসংশিম্লষ্ট বিষয়গুলো তুলে ধরবেন অর্থমন্ত্রী ও প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এর পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরার চেষ্টা করবেন বলেও জানা গেছে।


ইআরডি সূত্র জানায়, এবারের বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সাধারণ সভায় বাংলাদেশের মহল লক্ষ্য আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পাশে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশকে সম্পৃক্ত করা। কারণ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন পীড়নের মুখে গত বছরের অক্টোবর থেকে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী জীবন বাঁচাতে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা বেশি। যারা মানবেতর জীবন যাপন করছে।


এই ব্যাপক জনগোষ্ঠীর খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসাসহ মৌলিক প্রয়োজন মেটানো বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাড়িয়েছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়া কক্সবাজার জেলার আইন শৃংখলা রক্ষাও এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গারা নিরাপদে জন্মভূমিতে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে আন্তর্জাতিক মহল উদ্যোগী হবে। আর বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গাদের প্রয়োজন মেটাতে অনুদান দেবে। যদিও ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন মেটাতে ৪৮ কোটি ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, এর মধ্যে ৮ কোটি ডলার ছাড় হয়েছে।


এছাড়া বর্তমানে বিশ‌বব্যাংকের স্বল্প সুদের ঋণ আইডিএ-১৮ স্কীম চলছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে ২০১৯-২০২০ অর্থবছর পর্যন্ত চলবে এ স্কীম। বাংলাদেশ এর পরের স্কীমে অর্থাৎ আইডিএ-১৯ এও থাকতে চায়। মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ায় বিশ্বব্যাংক আইডিএ ঋণের দেশগুলোর তালিকা থেকে বাংলাদেশকে আলাদা করে রাখার পক্ষে। ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ এ বিশেষ সুবিধার ঋণ পাবে। তবে পরিমান ধীরে ধীরে কমে আসবে। কিন্তু বাংলাদেশ চায় আরও কিছুদিন এই সুবিধা যাতে অব্যহত থাকে।


উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ বিশ‌বব্যাংক থেকে ২৯০ কোটি ডলার ঋণ ও অনুদান পেয়েছে, যা এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ। চলতি অর্থবছরের আগষ্ট পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ প্রায় ৫৬ কোটি ডলার ঋণ ও অনুদান পেয়েছে। গত শুক্রবার বিশ্বব্যাংক গ্রামীণ সড়ক, বনায়ন ও সামুদ্রিক মৎস খাতের জন্য ৫১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে। আইডিএ ঋণের সুদ হার দশমিক ৭৫ শতাংশ। বাংলাদেশ গত অর্থবছর থেকে স্কেল আপ ফ্যাসিলিটি (এসইউএফ) বা বেশি সুদ হারে ঋণ নেওয়া শুরু করেছে। এসইউএফের সুদ হার প্রায় ৪ শতাংশের কাছাকাছি।


বিবার্তা/কাশেম/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com