প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন মুক্ত ও স্বাধীন একটি প্রতিষ্ঠান এবং তিনি আশাবাদী তারা একটি স্বচ্ছ সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন।
তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। দেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশও রয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তিন সিটি নির্বাচন এর প্রমাণ।
ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের সঙ্গে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি সমাজ, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও রোহিঙ্গা সংকটসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয় তুলে ধরেন। জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থানকালে মার্কিন এই গণমাধ্যম প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার নেয়।
ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার আকাঙক্ষা নেই দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নেই কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। ক্ষমতায় থাকার আকাঙ্খা নেই।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথে উন্নয়ন করবেন এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, বাবা যেভাবে চেয়েছিলেন ঠিক সেভাবে উন্নয়ন করে যাবো। যদি সেটা করতে পারি, তাহলে মনে হবে ওটাই হচ্ছে বাবার খুনের সবচেয়ে প্রতিশোধ নেয়া যে। কারণ বঙ্গবন্ধুর খুনিরা বাংলাদেশ স্বাধীন-সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসেবে ঘুরে দাঁড়াক সেটি চায়নি।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের তিনটি সিটিতে (রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট) যে নির্বাচন হলো, সেটি যদি আপনি পর্যালোচনা করেন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে স্বীকার করতে হবে যে, বর্তমানে নির্বাচন করার মতো সুষ্ঠু পরিবেশ দেশে আছে এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশন সেই নির্বাচন করতে পারবে।
দেশে নির্বাচন করার মতো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের সরকার প্রধান বলেন, কিছুদিন আগে তিনটা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়ে গেল, সেখানে জনগণ যখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে এবং এর দুটোতে আওয়ামী লীগ জিতেছে, একটা বিএনপি জিতেছে। তো এটা কি প্রমাণ করে না যে, এখন নির্বাচন করবার মতো সুন্দর পরিবেশ আছে?
সাক্ষাৎকারে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা এবং নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতায় সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে হয়েছে। মানুষ ভোট দিতে চায়।
দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সঠিক পরিকল্পনায় এগিয়ে চলছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। জিডিপির প্রবৃদ্দি আজ সাড়ে ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে। দেশের অর্থনীতি শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে।
ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত রকমের সুযোগ দেয়ার, আমরা তাদের সেক্টরকে দিয়ে দিচ্ছি। তবে কাজ করতে গেলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো যে কথাগুলো আসে, হ্যাঁ সে সমস্যা হয়তো থাকতে পারে। কিন্তু সেই সমস্যা কি আমার অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারছে? তা তো পারছে না।
ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে অবৈধ অভিবাসীদের বাংলাদেশে পাঠানো সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তো মনে করি না যে, আমাদের কোনো অবৈধ বাংলাদেশি সেখানে আছে। আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী, যথেষ্ট মজবুত; তারা সেখানে গিয়ে কেন অবৈধ হবে? এটি তাদের পলিটিক্স।
বিষয়টি নিয়ে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার কথা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাদের প্রাইম মিনিস্টারের সঙ্গে, আমার কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, না, কাউকে ফেরত পাঠানোর চিন্তা তাদের নেই।
তিনি রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করেন।
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]