শিরোনাম
‘শান্তিরক্ষায় খরচ ও কর্মী কমালে লক্ষ্য বাধাগ্রস্ত হবে’
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:১৬
‘শান্তিরক্ষায় খরচ ও কর্মী কমালে লক্ষ্য বাধাগ্রস্ত হবে’
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মর্যাদা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ এর সংস্কারকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। আমাদের অবশ্যই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মর্যাদা সমুন্নত রাখার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।


তিনি বলেন, এই বাহিনীতে সেনা ও পুলিশ সদস্য পাঠানোর দিক থেকে অন্যতম শীর্ষ অবদানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের সংস্কারের প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে।


বিশ্বনেতাদের সতর্ক করে শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বরাদ্দ কমানো হলে তা বিশ্বের বিরোধপূর্ণ এলাকাগুলোতে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে বাধাগ্রস্ত করবে।


তিনি আরো বলেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে খরচ এবং কর্মীর সংখ্যা কমালে তা শান্তি মিশনের কাজে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। শান্তিরক্ষায় সামনের সারিতে যারা কাজ করছে, তাদের উদ্বেগের বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে শুনতে হবে।


জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের উদ্যোগে অ্যাকশন ফর পিসকিপিং (এফোরপি) এর ওপর একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সদরদফতরের ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে গুতেরেসও বক্তব্য রাখেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা একটি বৈশ্বিক জনকল্যাণমুখী সেবা। এই বাহিনীর মর্যাদা ধরে রাখতে আমাদের সকলকে অবশ্যই একটি ইতিবাচক চিন্তাধারা নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। এটা অনেকের জীবনের আশার আলো জ্বালিয়েছে। আমাদের অবশ্যই এই আশার আলোকে সম্মান জানাতে হবে।


তিনি বলেন, এই বাহিনীতে সেনা ও পুলিশ সদস্য পাঠানোর দিক থেকে অন্যতম শীর্ষ অবদানকারী দেশ হিসেবে আমরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের সংস্কারের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।



শেখ হাসিনা বলেন, শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের এখন নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে মোতায়েন করা হচ্ছে। ওই সব স্থানে শান্তি বজায় রাখার মতো পরিস্থিতি নেই। রাষ্ট্রবিরোধী সন্ত্রাসী ও বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে তারা ক্রমবর্ধমান হুমকির শিকার হচ্ছে। জাতিসংঘের মিশনগুলো প্রায়ই বিভিন্ন মান ও ধরনের বাহিনীর সঙ্গে কাজ করে থাকে। আর এটা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযানগুলোকে আরো জটিল ও বিপজ্জনক করে তুলছে।


তিনি আরো বলেন, এজন্য শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া উচিত। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে যে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের মতো ক্ষমতা ও সরাঞ্জামাদি তাদের দেয়া উচিত।


শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, কোনো রাষ্ট্রের সদস্যদের মোতায়েনের ক্ষেত্রে তাদের প্রতিশ্রুতি এবং সেই অনুযায়ী কতটা নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছে তা বিবেচনা করা উচিত।


তিনি বলেন, তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার অবশ্যই উত্তরণ ঘটাতে হবে। আমরা আশা করছি এ ফোর পি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীকে তাদের ‘লক্ষ্য পূরণে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে’ সহায়তা করবে। দি ডিক্লিয়ারেশন অব শেয়ার্ড পিসকিপিং কমিটমেন্টস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল বয়ে এনেছে।


এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দেয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, শান্তি রক্ষায় জাতিসংঘের আহবানে সাড়া দিতে বাংলাদেশ কখনো ব্যর্থ হয়নি। শান্তিরক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের অনেক শান্তিরক্ষীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তবু দায়িত্ব পালনে আমরা কখনো পিছ পা হইনি। এখন আমরা সম্ভব স্বল্পতম সময়ে আমাদের শান্তিরক্ষী মোতায়েন করতে পারি। যে কোনো চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির দ্রুত মোকাবেলা করার মতো প্রশিক্ষণ তাদের দেয়া হয়। যেখানে তারা যায়, মানুষের হৃদয় ও মন জয় করতেই তারা কাজ করে।


শান্তি মিশনে যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথাও বৈঠকে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com