শিরোনাম
চামড়ায় মিলছে না দাম, লোকসানের মুখে ব্যবসায়ীরা
প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০১৮, ১০:৫০
চামড়ায় মিলছে না দাম, লোকসানের মুখে ব্যবসায়ীরা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

তৈরি পোশাক শিল্পের পর দেশের অন্যতম সম্ভাবনায় খাত চামড়া। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে পশুর চামড়ায় বিনিয়োগ করেন অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী বা ফড়িয়ারা। চলতি বছরে পশুর চামড়া ব্যবসায় বিনিয়োগ করে এখন বড় ধরণের লোকসানের মুখে এই ফড়িয়ারেরা। বেশি দামে কেনা চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে দাম পাচ্ছেন না তারা।


চলতি বছর সরকার প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয় ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। বেশ সতর্ক অবস্থানে থেকেই পাড়া মহল্লা থেকে চামড়া কিনেছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। তবুও পাইকারদের কাছ থেকে দাম না পাওয়ায় বিপাকে পরেছেন তারা।


এ বছর সরকার ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ফুট প্রতি ৪৫ থেকে ৫০, ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০, খাসি ১৮ থেকে ২০ এবং বকরির চামড়ার দাম ১৩ থেকে ১৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু বর্গফুট নয় আকারের ওপর নির্ভর করে নির্ধারিত দামের চেয়ে গড়ে চামড়া প্রতি ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা বেশি দিয়ে গতকাল বুধবার দিনব্যাপী পাড়া-মহল্লা ঘুরে চামড়া কিনেছেন ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা।


সাধারণত একদম মাঠ পর্যায় থেকে চামড়া সংগ্রহ করেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। তাদের কাছ থেকে সেসব চামড়া কিনে নেন পাইকাররা। আর পাইকাররা সেগুলো সরবরাহ করেন ট্যানারি কারখানাগুলোতে। কাঁচা চামড়া যেহেতু বেশি সময় সংরক্ষণ করা যায় না এবং ফড়িয়ারদের কাছে চামড়া সংরক্ষণের কোন উপায় থাকে না তাই তারা দ্রুত সেগুলো পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দিতে চান।


অন্যান্য বছরের কোরবানি ঈদের সময়গুলোতে রাজধানীতে পাইকারদের ঘুরে ঘুরে চামড়া কিনতে দেখা গেলেও চলতি বছর মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বরং উলটো পাইকার খুঁজে চামড়া বিক্রির চেষ্টা করছেন। রাজধানীতে পশুর চামড়া কেনাবেচার সবথেকে বড় আসর বসে সায়েন্সল্যাব ও ঢাকেশ্বরী মোড়ে। বুধবার বিকেল থেকে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত অস্থায়ী এই দুইটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ীই নিজেদের কেনা দামের থেকে কমে চামড়া বিক্রি করে দিচ্ছেন।


ফড়িয়া চামড়া ব্যবসায়ী আবদুল মজিদ জানান, পাড়া-মহল্লা থেকে গড়ে দুই হাজার থেকে ২৩শ' টাকা দামে কাঁচা চামড়া কিনেছেন। তাদের কাছে বর্গফুটের কোনো হিসাব নেই। এখন পর্যন্ত চামড়া জড়ো করছে তার লোকজন।


কাশেম মিয়া নামের এক মৌসুমী ব্যবসায়ী জানান, তিনি রাজধানীর পল্লবী থেকে চামড়া কিনেছেন। গড়ে তার কেনা চামড়ার দাম পরেছে প্রায় নয়শ টাকা। কিন্তু চামড়া বিক্রি করতে এসে পাইকারদের থেকে সাতশ এর উপরে দাম পাচ্ছেন না তিনি। এসময় তিনি পাইকাররা ‘সিন্ডিকেট’ করছে বলে অভিযোগ করেন।


তবে পাইকার ও ট্যানারি মালিকদের দাবি, তারা সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া কিনছেন। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারেও চামড়া দাম কম। তাই চাইলেও বেশি দামে চামড়া কিনতে পারছেন না তারা।


সানাউল্লাহ নামের এক ট্যানারি মালিক বলেন, “চামড়ার আন্তর্জাতিক বাজার মন্দা। বিগত কয়েক দশকের মধ্যে এবারই চামড়ার বাজার সবথেকে খারাপ। তারমধ্যে আমাদের ট্যানারিও শিফট (স্থানান্তর) হয়েছে। সব মিলিয়ে আমরাও চাপে আছি। এখন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা যদি বেশি দামে চামড়া কিনে আনেন তাহলে আমরা কী করতে পারি?”


পাইকার ও ট্যানারি মালিকরা বলছেন, আজ ঈদের দ্বিতীয় দিনে রাজধানী ও এর আশেপাশের এলাকাগুলো থেকে আরও বেশি চামড়া যাবে তাদের কাছে। তখন চামড়ার প্রকৃত মূল্য বোঝা যাবে।


বিবার্তা/শারমিন/শাহনাজ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com