শিরোনাম
জয়ের জন্মদিন ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনে শেষ পারিবারিক উৎসব
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০১৮, ২০:১৭
জয়ের জন্মদিন ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনে শেষ পারিবারিক উৎসব
মাহফুজা জেসমিন
প্রিন্ট অ-অ+

বঙ্গবন্ধুর জীবনে শেষ পারিবারিক উৎসব ছিল ’৭৫-এর ২৭ জুলাই দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগদান। খুবই সাদামাটা এই অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব এদিন সজিব ওয়াজেদ জয়ের সাথে ছবি তোলেন। শিশু জয়ও সেদিন নানার টুপি মাথায় নিয়ে পোজ দেয়। সেটিই যে তাদের পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসাথে আনন্দ উদযাপনের শেষ দিন তা কি কেউ কল্পনাও করেছিলো!


জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন সেদিনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, পুরো জুলাই মাস জুড়েই বঙ্গবন্ধু পরিবারে ছিল উৎসব। ২৭ জুলাই বড় মেয়ে শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিনের সাদামাটা অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুও উপস্থিত ছিলেন।


তার দু’দিন পর ৩০ জুলাই শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিয়ে জার্মানির উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান। সেদিন শেখ হাসিনা অনিচ্ছাসত্বেও স্বামী পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার কর্মস্থলে চলে যেতে বাধ্য হন।


ছাত্রজীবন থেকে একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ শেখ মুজিবুর রহমান দেশের সাধারণ মানুষের মঙ্গল চিন্তাই করেছেন সবসময়। বাবা, মা, স্ত্রী ও পুত্র-কন্যাদের সময় দিয়েছেন খুব কম। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ফসল হিসেবে ১৯৭১ এ স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জনের পর পাকিস্তান কারাগার থেকে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু দেশ ও জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খাতকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেন। সেই অনুযায়ী তিনি কাজ ও এগিয়ে নেন।


বাংলাদেশ রাষ্ট্রের দায়িত্ব গ্রহণের সাড়ে তিন বছর পর তিনি নিজের পারিবারিক দায়িত্ব পালনেও ব্রতী হন এবং দুই ছেলে শেখ কামাল ও শেখ জামালের বিয়ের আয়োজন করেন। এই জুলাই মাসেই তিন দিনের ব্যবধানে বড় ছেলে শেখ কামাল এবং মেজ ছেলে শেখ জামালের বিয়ে দেন।


ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই পারিবারিকভাবে বঙ্গবন্ধুর জ্যৈষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী দবির উদ্দিন আহমেদের ছোট মেয়ে সুলতানা আহমেদ খুকুর বিয়ে হয়। বিয়েতে যেসব মূল্যবান উপহার পাওয়া গিয়েছিল, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তার প্রায় সবই সরকারি তোষাখানায় জমা দেয়া হয়।


শেখ কামালের বিয়ের ৩ দিন পর ১৭ জুলাই এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে ফুফাতো বোন সৈয়দ হোসেনের মেয়ে রোজীর সঙ্গে শেখ জামালের বিয়ে হয়।


কিন্তু এক মাসের মধ্যেই সব কিছু কেমন স্তব্ধ হয়ে যায়। কুচক্রীদের নির্মম বুলেট গুড়িয়ে দেয় জাতির জনকের সাধের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন। চুরমার হয়ে যায় শেখ কামাল ও শেখ জামালের নতুন সংসার। নব পরিণীতা দুই নববধুর মেহেদীর রঙ মিশে যায় রক্তস্রোতে। চিরতরে হারিয়ে যায় শেখ রাসেলের কচি কণ্ঠের আর্তনাদ। গভীর এক অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় সমগ্র জাতি। সৌজন্যে : বাসস


বিবার্তা/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com