প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বর্তমানে বহুমুখী ও বহুমাত্রিক সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় আসীন। ভবিষ্যতেও এই দুই দেশ সব সহযোগিতা বিদ্যমান রাখবে এবং বাংলাদেশ-ভারতের এ সম্পর্ক বিশ্ববাসীর সামনে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের মডেল হিসেবে গণ্য হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
ভারত সফরে শান্তিনিকতেনের বিশ্বভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি একথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্য দিয়ে দুই দেশের অমীমাংসিত সমস্যার সমাধান করা হবে।
মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান কোনো দিন ভুলে যাওয়ার নয়। এ সময় মুক্তিযুদ্ধকালীন ভারতে এক কোটি বাংলাদেশি শরণার্থীকে আশ্রয় ও মুক্তিযুদ্ধাদের ট্রেনিং দেয়ার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধ ও ছিটমহল বিনিময়সহ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সৌহর্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা দুই প্রতিবেশী দেশ সব সময় একসাথে চাই। আমাদের শত্রু একটাই সেটা হলো দারিদ্র। আমরা সকলে মিলেই এই দারিদ্রতা দুর করতে হবে।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তিনি বলেন,আমার বোন রেহানা আমাকে বলল তুমি ১৬ কোটি মানুষের মুখে ভাত দিতে পার, আর ৫-৭ লাখ মানুষের ভাত দিতে পারবা না? আমাদের যা আছে তা ভাগ করে খাব। আমরা রোহিঙ্গাদের নিয়ে চিন্তিত নই।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, কবি গুরুর হাতে গড়া এই শান্তিনিকেতন। তিনি শুধু ভারতের কবি নন, তিনি আমাদেরও (বাংলাদেশ) কবি। তার (রবীন্দ্রনাথ) অধিকাংশ কবিতা বাংলাদেশে বসে লেখা। তাই কবি গুরুর ওপর বাংলাদেশের অধিকারও বেশি।
ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সোহার্দ্য ও আনন্দ উল্লাসের মধ্য দিয়ে ছিটমহল বিনিময়- বিশ্বে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
আজ শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে কলকাতার স্থানীয় সময় ৯টা ২৫ এ নেতাজী সুভাস চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান শেখ হাসিনা।
সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে বীরভূমে শান্তিনিকেতনে পৌঁছালে বিশ্ব ভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক সবুজ কলি সেন তাকে অভ্যর্থনা জানান।
এই সমাবর্তন ঘিরে বিশ্বভারতীকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র ভবনে শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যিনি বিশ্বভারতীর আচার্য।
বিশ্বকবী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা যোগ দিচ্ছেন ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে। সমাবর্তনস্থলে যাওয়ার আগে তিনি রবীন্দ্র চেয়ারে শ্রদ্ধাও জানিয়েছেন।
ভারতের সরকারপ্রধান ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, গভর্নর কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, বিভিন্ন দেশের পণ্ডিত ব্যক্তি, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধি এবং সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হয়েছেন এ সমাবর্তনে।
বিবার্তা/শারমিন/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]