শিরোনাম
রোহিঙ্গা সঙ্কটের আশু সমাধান চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০১৮, ২২:৩৩
রোহিঙ্গা সঙ্কটের আশু সমাধান চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

রোহিঙ্গা সঙ্কটের আশু সমাধান চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে নির্যাতনের মাধ্যমে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পুরো চাপ বাংলাদেশ একাই সামলাচ্ছে।


মঙ্গলবার বিকেলে লন্ডনে ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (ওডিআই)-এ ‘বাংলাদেশ’স ডেভেলপমেন্ট স্টোরি : পলিসিজ, প্রগ্রেসেজ অ্যান্ড প্রসপেক্টস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তৃতা উপস্থাপনকালে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এ সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ, টেকসই ও আশু সমাধান চায়।


তিনি বলেন, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী দমন অভিযান শুরু করার পর বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লোকদের সংখ্যা এখন ১১ লাখ। বাংলাদেশ মানবিক বিবেচনায় তাদের আশ্রয় দিয়েছে।


শেখ হাসিনা সরেজমিনে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিজ চোখে দেখেছেন উল্লেখ করে বলেন, অনেক বিশ্বনেতা কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেছেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত কয়েক বছরে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশাল সাফল্য অর্জন করা সত্ত্বেও এই সাফল্যকে টেকসই করতে হলে বাংলাদেশকে আরো অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে।


তিনি বলেন, আমাদের সাফল্যের মানে এই নয় যে, আমাদের সামনে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। ...বাংলাদেশের ভেতর ১০ লক্ষাধিক দেশান্তরী মিয়ানমার নাগরিকের অভিবাসনের পাশাপাশি আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদ মোকাবেলায় লড়াই করছি।


জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু দূষণে খুবই নগণ্য ভূমিকা সত্ত্বেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সবচেয়ে মারাত্মক শিকারে পরিণত হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের জন্য অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ স্থানচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এই গ্রহ, আমাদের জীববৈচিত্র্য এবং আমাদের জলবায়ু সুরক্ষিত করা বিশ্ব সম্প্রদায়ের অভিন্ন দায়িত্ব।


শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমন ও ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০ প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।


সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। তাঁর দল ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় আসে, তখন রাজনৈতিক অস্থিরতা, জঙ্গিবাদের উত্থান, প্রাকৃতিক দুযোর্গ, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাসহ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নানা সংকট মোকাবেলা করতে হয়েছে।


শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য আমাদের রোডম্যাপ ভিশন-২০২১ প্রণয়ন করেছি। দীর্ঘ, মধ্য ও স্বল্প মেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তর করতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করি।


তিনি বলেন, তার সরকার ৬ষ্ঠ পঞ্চম বার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে। এতে পল্লীর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এবং পল্লী এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে এসএমই’র জন্য তহবিল সংগ্রহ করছি।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য উৎপাদনে দেশকে স্বাবলম্বী করতে কৃষি সেক্টরে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি এবং খাদ্য শষ্য, মৎস্য, পোল্ট্রি ও শাকসবজি উৎপাদনে বিশেষ ইনসেন্টিভ দেয়া হচ্ছে।


শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ। আমাদের পোশাক কারখানাগুলোকে নিরাপদ করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৬৭ টি লিড সনদধারী তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে। ৭টি পরিবেশ বান্ধব কারখানা ও বস্ত্র কারখানা রয়েছে।



প্রধানমন্ত্রী পররাষ্ট্র নীতির উল্লেখ করে বলেন, তার সরকার ব্যাবসা বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং কূটনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সব দেশের সঙ্গে বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।


তিনি বলেন, রুপান্তরযোগ্য প্রযুক্তির জন্য আমাদের জ্ঞান ও ইনোভেশন অংশীদারিত্বের প্রয়োজন। আমরা জীবন যাত্রার মান উন্নত করেছি। বাংলাদেশকে একটি সুখী সমৃদ্ধশালী ও শান্তিপূর্ণ দেশ করতে ভিশন-২০৪১ প্রণয়ন করা হয়েছে। সূত্র : বাসস


বিবার্তা/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com