শিরোনাম
শেষ মুহূর্তেও বাঁচার জন্য আকুতি
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০১৮, ১৪:০৯
শেষ মুহূর্তেও বাঁচার জন্য আকুতি
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোমবার দুপুরে বিধ্বস্ত ইউএস বাংলার বিমানটির যাত্রীরা বাঁচার জন্য তীব্র আকুতি জানিয়েছিলেন। ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলে সাহায্য চেয়েছিলেন। কেউ আবার ইংরেজিতে বলছিলেন- হেল্প মি, প্লিজ হেল্প মি...। উদ্ধারকারী সেনা কর্মকর্তা বালকৃষ্ণ উপাধ্যায় এসব তথ্য জানিয়েছেন।


উপাধ্যায় জানান, পুরো ঘটনাটিই ছিল বিভীষিকাময়। আমি নেপালি সাংবাদিক ভদ্র শর্মার সঙ্গে বিমানবন্দরে যাই। ফটকের বাইরে পাথরের নুড়ির স্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে দেখছিলাম, আগুন বের হওয়া বিমানে পানি ছিটানো হচ্ছে।


বিমানবন্দরে একটি জ্বালানি কোম্পানিতে ড্রাইভার হিসেবে কাজ করেন কৈলাশ অধিকারী। তিনি বলেন, বিধ্বস্ত বিমানটি থেকে বোমা বিস্ফোরণের মতো শব্দ হয়েছে। আগুন নেভাতে দমকলকর্মীদের ১৫ মিনিট সময় লেগেছে। তবে তারা যদি আরেকটু আগে আসতেন, তাহলে আরও বেশি লোককে প্রাণে বাঁচানো যেতো।


বিধ্বস্ত বিমানের বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশি যাত্রী শাহরিন আহমেদ (২৯)। কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অগ্নিদগ্ধ এ যাত্রী। তার শরীরের ১৮ শতাংশ পুড়ে গেছে।


‘উড়োজাহাজটি নামার আগমুহূর্তে কাত হয়ে যায়। যাত্রীরা চিৎকার করতে শুরু করেন। হঠাৎ করে পেছনে আগুন দেখতে পাই আমরা। আমার বন্ধু আমাকে বলে, “চলো দৌড়ে সামনে যাই।” কিন্তু আমরা যখন দৌড়ে সামনে যাচ্ছিলাম, আমার বন্ধুর গায়ে আগুন ধরে যায়। সে পড়ে যায়।’


এভাবেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন শাহরীন আহমেদ। ২৯ বছরের শাহরীন এক বন্ধুর সঙ্গে নেপালে বেড়াতে যাচ্ছিলেন।


কাঁদতে কাঁদতে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন শাহরিন। বলেন, ‘মানুষগুলো পুড়ে যাচ্ছিল। তারা চিৎকার করছিল। কয়েকজন পড়ে যায়। জ্বলন্ত বিমান থেকে তিনজনকে লাফ দিতে দেখি। এটা ভয়ানক ছিল। সৌভাগ্যবশত কেউ আমাকে টেনে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যায়।


পেশায় শিক্ষক শাহরীন যাচ্ছিলেন কাঠমান্ডু ও পোখারায় ঘুরতে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছে, শাহরীনের ডান পায়ে আঘাত লেগেছে এবং তার শরীরের ১৮ শতাংশ পুড়ে গেছে। অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।


আরেক বাংলাদেশি যাত্রী মেহেদি হাসান কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন তার স্ত্রী, এক বোন ও বোনের মেয়ের সঙ্গে। জীবনের প্রথম বিমান ভ্রমণ যে এতটা ভয়বহ অভিজ্ঞতার মুখে ফেলবে, তা কখনো ভাবেননি মেহেদি হাসান।


মেহেদি হাসান বলেন, ‘আমার সিট পেছনের দিকে ছিল। যখন আগুন দেখতে পাই, আমার পরিবারের দিকে তাকাই আমি। আমরা জানালার কাচ ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু পারছিলাম না। আশা করছিলাম, কেউ এসে আমাদের উদ্ধার করবে। দুর্ঘটনায় আমি আর আমার স্ত্রী বেঁচে গেছি। তবে আমার কাজিন ও তার মেয়ের কোনো খোঁজ পাচ্ছি না।’


মেহেদি হাসানও এখন কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।


সূত্র: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস, হিমালয়ান টাইমস


বিবার্তা/শারমিন/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com