
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ভারতের বিষয় হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। মূলত, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সাহিত্য উৎসবে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মন্তব্যের বিপরীতে জবাব হিসেবে এমন মন্তব্য করেছেন মো. তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, সংখ্যালঘু সম্পর্কে জয়শঙ্কর আবারও কথা বলেছেন। তবে, সংখ্যালঘু বিষয়টি হচ্ছে যে, এই অভিযোগগুলো প্রধানত ভারতীয় মিডিয়া যে বিকৃত তথ্য প্রবাহ সৃষ্ঠি করেছে, তার ভিত্তিতে এগুলো বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন জন বলে বেড়াচ্ছে। তার চেয়েও বড় কথা হলো, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ভারতের বিষয় হতে পারে না। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু বাংলাদেশের বিষয়। যেমন, ভারতের সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করা হচ্ছে, সেটি ভারতের বিষয়। কাজেই আমি মনে করি, হস্তক্ষেপ না করার নীতি অনুসরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের সংখ্যালঘুদের বিষয়টি আমরা দেখছি। তারা বাংলাদেশের নাগরিক। আমার যতটুকু অধিকার আছে, তাদের প্রত্যেকের ততটুকু অধিকার আছে। সরকার সেটাই বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবে।
‘ভারতের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক হবে, সেটি বাংলাদেশকেই ঠিক করতে হবে,’ জয়শংকরের এমন মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, অবশ্যই বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে ভারতের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক চায়। একইভাবে ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে— তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। এটি দুপক্ষের বিষয় এবং এটা বলাতে দোষের কিছু নেই। আমার মনে হয়, এ বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত আছে। আমরা ভারতের সঙ্গে ভালো কার্যকর সম্পর্ক চাই। সেটার ভিত্তি হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও স্বার্থ। এ বিষয়ে আমাদের কোনও অস্পষ্টতা নেই।
তিনি বলেন, জয়শঙ্কর কিন্তু বলেছেন যে, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন জন আপত্তিকর কথাবার্তা বলছে, সরকারের ভেতর থেকে ভারতবিরোধী কথা বলছে।’ আমি এ নিয়ে ন্যায়-অন্যায়, উচিত-অনুচিত বিচার করতে চাই না। আমার কথা হলো, এ রকম কথা আমাদের এখান থেকে বলছে, তাদের ওখান থেকেও বলছে। তাদের মুখ্যমন্ত্রী তো পারলে বাংলাদেশে জাতিসংঘ দল পাঠিয়ে দেয়। শান্তিরক্ষী দল পাঠিয়ে দেয়। তাদের একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অহরহ বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এগুলো চলতে থাকবে ধরে নিয়েই সম্পর্ক ভালো করা যায় কিনা, সেই চেষ্টা করছি। কাজেই আমাদের অবস্থান হচ্ছে এটাই যে, আশেপাশে থেকে দুই-চারজন কী বললো না বললো, সেটাতে মনোযোগ না দিয়ে বরং আমরা আমাদের সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করি।
তিনি আরও বলেন, সম্পর্ক ভালো করতে গেলে, বরং আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওখানে ভারতীয় আতিথেয়তায় থেকে যেসব কথাবার্তা বলছেন, সেগুলো তো আসলে ক্ষতিকর। সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। ঠিক আছে, আমাদের অস্থিতিশীলতা বা এ ধরনের কিছু আমাদেরকেই সামাল দিতে হবে। কিন্তু তার বক্তব্য যে আগুনে ঘি ঢেলে দিচ্ছে, সেটি তো স্বীকৃত বিষয়। সবাই জানে এটি। একইভাবে ভিসার বিষয়ও। ভিসা সম্পূর্ণভাবে তাদের নিজস্ব বিষয়। তারা কাউকে না দিলে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু যখন ভিসা দেওয়া হচ্ছে না, বা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে সাংঘাতিকভাবে, আমরাতো বিকল্প খুঁজে নেবোই।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]