
ভারতীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি আদানি গ্রুপ বাংলাদেশকে ৪ দিনের মধ্যে বকেয়া ৮৫০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে বলেছে। তা না হলে ৭ নভেম্বরের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে এই গ্রুপটি।
৩ নভেম্বর, রবিবার এক প্রতিবেদনে ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৩১ অক্টোবর বকেয়া পরিশোধের নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র খোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে উল্লিখিত শর্ত পূরণ করেনি বিপিডিবি।
এর আগে বকেয়া পরিশোধ না করায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দেয় ভারতের আদানি গ্রুপ। গত বৃহস্পতিবার দিনে প্রতিষ্ঠানটির ঝাড়খণ্ডের গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে গড়ে মাত্র ৫৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়েছে বাংলাদেশ। যদিও গত বুধবার পর্যন্ত গড়ে এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো।
বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের কারণে অস্থিরতা ও ডলার সংকটের কারণে সময়মতো তারা অর্থ পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে বলেও টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সক্ষমতা এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। আদানির পাওনা প্রায় ১০ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া দেশের কয়লাভিত্তিক বড় দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র এস আলম ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও উৎপাদন কমেছে।
সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি আদানি পাওয়ারের (ঝাড়খণ্ড) প্রতিনিধি ও যৌথ সমন্বয় কমিটির সভাপতি এম আর কৃষ্ণ বকেয়ার বিষয়ে সরকারকে চিঠি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ১৭ কোটি ডলারের জন্য প্রয়োজনীয় এলসি প্রদান করেনি এবং ৮৪ কোটি ৬০ লাখ ডলারের (১০ হাজার ৮৬ কোটি টাকা) বকেয়াও শোধ করেনি। সময়মতো এলসি না দেওয়া এবং বকেয়া পরিশোধ না করায় চুক্তির ব্যত্যয় ঘটেছে, যা আদানি বিদ্যুতের সরবরাহ বজায় রাখতে বাধাগ্রস্ত করছে। বকেয়া পরিশোধ ও এলসির অভাবে কয়লা সরবরাহকারী এবং কেন্দ্র পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় মেটানো যাচ্ছে না। চিঠিতে আদানি পিডিবিকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানায়। না হলে ৩১ অক্টোবর থেকে সরবরাহ বন্ধ করা হতে পারে বলেও জানায়।
প্রসঙ্গত, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুতের বকেয়া বিল পরিশোধ করতে বিশেষ বন্ড ইস্যু করেছিল। সে সময় বন্ডের মাধ্যমে ২০ হাজার ৬২০ কোটি টাকা বাজার থেকে নিয়েছিল সরকার। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বকেয়া দায় পরিশোধের লক্ষ্যে এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত ছিল সিটি ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক।
পরে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বকেয়া পরিশোধের জন্য অনুরোধ জানিয়ে আসছিল আদানি। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান গৌতম আদানি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়ে বিদ্যুতের অর্থ পরিশোধের অনুরোধও জানিয়েছিলেন।
বিবার্তা/এনএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]