মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা আমদানিতে দরপত্র প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশনা
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৪, ২০:৫৮
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা আমদানিতে দরপত্র প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশনা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানি ও সরবরাহের দরপত্র প্রক্রিয়ায় কোনো প্রকার চুক্তি সম্পাদন না করতে নির্দেশনা দিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।


মঙ্গলবার (১১ জুন) প্রকল্প বাস্তবায়নকারী রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানিকে (সিপিজিসিবিএল) এক চিঠির মাধ্যমে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।


চিঠিতে বলা হয়, পাবলিক প্রকিউরম্যান বিধি মালা-২০০৮ অনুযায়ী সরকার কর্তৃক গঠিত রিভিউ প্যানেল হতে একটি আপিল চলমান থাকায় বিধিমালা অনুযায়ী চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারি করা হতে বিরত থাকার অনুরোধ করা হলো।


সম্প্রতি দরপত্র প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দিয়েছেন দরপত্রে অংশ নেওয়া একটি আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম।


একই কনসোর্টিয়াম সম্প্রতি আইএমইডিতেও সংশ্লিষ্ট দরপত্র পুনঃমূল্যায়ন জন্য আবেদন করেন।


গত এপ্রিলে আইএমইডি মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কয়লা আমদানির দরপত্র প্রক্রিয়ায় আদর্শমান বজায় রাখা হয়নি জানিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।


বৃহস্পতিবার (৬ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, দরপত্রে অংশ নেওয়া চারটি কনসোর্টিয়ামের আর্থিক প্রস্তাবনা মূল্যায়ন না করেই সকলকে বাতিল ঘোষণা করা হয়। চলমান দরপত্রটিতে বাছাই প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্ব মূলক আচরণ উল্লেখ করে চিঠিতে আরও বলা হয়, বাতিলকৃত একটি আর্থিক প্রস্তাবনাকে পুনর্বহাল করার জন্য কিছু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কতিপয় বোর্ড সদস্য সংঘবদ্ধভাবে বিশেষ কোম্পানিটির সঙ্গে অবৈধভাবে দেশের প্রচলিত আইন ও বিধিমালা অমান্য করে গত ৫ জুন বিকেলে নেগোশিয়েশন মিটিং করে। যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অবৈধ।


বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের মহেশখালীতে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন চলতি মাস থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। জাপানের আর্থিক সহায়তায় নির্মিত দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পর দ্বিতীয় ইউনিটও পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করেছে। গত বছর ২৪ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলেও প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে একই মাসের ২৬ তারিখ থেকে।


দরপত্র অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো সূত্রে জানা গেছে, দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি চার প্রতিষ্ঠান যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রস্তাবনা দাখিল করলেও ‘আর্থিক সক্ষমতা নেই’ অযুহাতে প্রথমেই তিন প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২৭ মে কারিগরি কমিটির সভায় চারটি কনসোর্টিয়ামের সবগুলোর আর্থিক প্রস্তাবনা বাতিল হয়। সর্বশেষ ৩১ মে সিপিজিসিবিএল’র বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জাতীয় গুরুত্ব বিবেচনায় বাতিলকৃত ইউনিক সিমেন্ট কনসোর্টিয়ামকে নিয়ে সমঝোতা করার অনুমোদন দেওয়া হয়।


যদিও প্রকল্প কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতায় বাতিল হওয়া তিন কনসোর্টিয়ামের একটি গত ২৯ মে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে দরপত্র পুনর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি কোনো প্রকার উত্তর পায়নি।


দরপত্রের প্রাথমিক শর্তানুযায়ী, কমপক্ষে ১২ মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লা আমদানির অভিজ্ঞতার শর্ত উল্লেখ ছিল, যা কয়লা আমদানি সংশ্লিষ্ট দরপত্রের জন্য একটি প্রাসঙ্গিক শর্ত। কিন্তু একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠানকে অনৈতিক সুবিধা প্রদানের উদ্দেশ্যে উক্ত শর্তটি শিথিল করে ১২ মিলিয়ন মেট্রিক টন লোহা, সার, কেমিক্যাল, সিমেন্ট অথবা খাদ্য শস্য আমদানির অভিজ্ঞতাকে যোগ্যতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা একটি অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করে।


বিবার্তা/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com