
সনদ জালিয়াতির ঘটনায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর।
২৩ এপ্রিল, মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ দাবি করেন।
এর আগে দুপুর পৌনে ১২টায় ডিবি কার্যালয়ে আসেন তিনি। সনদ জালিয়াতির ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ডাকা হয়েছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে কী জানতে চাওয়া হয়েছে- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী এ কে এম শামসুজ্জামান অবৈধভাবে যে সার্টিফিকেট দিয়েছেন সে সম্পর্কে ডিবি আমার কাছে জানতে চেয়েছে। এই ঘটনায় আমার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল কি না সেটি জানতে চেয়েছে। আমি মনে করি একটি ঘটনা যেহেতু ঘটেছে, সেজন্য সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে আসল দোষীদের শাস্তির মুখোমুখি করা উচিত। তবে বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই লজ্জিত এবং দুঃখিত। এ বিষয়ে কোনো কিছুই জানি না।
সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামানের বিষয়ে অভিযোগ দেয়ার পরও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ওয়েবসাইটে এমন কোনো কাগজ আছে কি না সেটি খুঁজে দেখেছি। ওয়েবসাইটে তেমন কোনো কাগজপত্র পাইনি। এর বেশি আমি কিছু বলতে চাই না।
আপনি দায়িত্বে থাকার পরও কীভাবে এমন ঘটনা ঘটলো- জানতে চাইলে কারিগরি বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, আমি অপরাধীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। ভেতরে-ভেতরে (প্রাতিষ্ঠানিকভাবে) কাজ করার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করেছি।
এ প্রসঙ্গে ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, হাজার হাজার সার্টিফিকেট বাণিজ্যের কারণে গ্রেফতার হন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খানের স্ত্রী। এরপর চেয়ারম্যান পদ থেকে আলী আকবর খানকে ওএসডি করা হয়।
এর আগে ১ এপ্রিল কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ জালিয়াতির অভিযোগে প্রথমে গ্রেপ্তার হন সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী এ কে এম শামসুজ্জামান। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে একে একে উঠে আসে এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বোর্ড সংশ্লিষ্ট অনেক ছোট-বড় কর্মকর্তা এবং দেশের কয়েকটি কারিগরি স্কুল এবং কলেজের প্রধান আর অধ্যক্ষদের নাম।
সবশেষ গত শনিবার (২০ এপ্রিল) সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী শামসুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গ্রেপ্তারের পরদিন রোববার (২১ এপ্রিল) চেয়ারম্যানকে ওএসডি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ডিবি সূত্র বলছে, শামসুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদে সেহেলা পারভীনের নাম উঠে আসে।
শামসুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে গত ৪ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান বলেন, সনদ বাণিজ্যের নানা প্রক্রিয়ায় তার কাছে গ্রাহক নিয়ে আসতেন দেশের আনাচে-কানাচে গড়ে ওঠা কারিগরি স্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক ও প্রিন্সিপালরা। যেসব প্রধান শিক্ষক ও প্রিন্সিপাল মধ্যস্থতা করে গ্রাহক নিয়ে আসতেন, তাদের নামের দীর্ঘ তালিকা এসেছে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে। এছাড়া নাম আসছে বেশকিছু দুদকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]