দ্রুত বিচার আইন স্থায়ী করতে সংসদে বিল
প্রকাশ : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:৪৪
দ্রুত বিচার আইন স্থায়ী করতে সংসদে বিল
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দ্রুত বিচার আইন স্থায়ী করতে জাতীয় সংসদে ‘আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার-সংশোধন) বিল-২০২৪’ উত্থাপন করা হয়েছে।


২৯ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে বিলটি উত্থাপন করেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।


এসময় বিরোধী দলের পক্ষ থেকে আপত্তি জানান বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। তবে সেই আপত্তি কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। পরে বিলটি অধিকতর পরীক্ষার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটিকে আগামী দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।


বিলের বিরোধিতা করে সংসদে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ২০০২ সালে বিএনপি যখন আইনটি করে, তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এবং সব দলের পক্ষ থেকে এ আইনের সমালোচনা করা হয়েছিল। দ্রুত বিচার আইন নাম হলেও কোর্টে কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খুব কম মামলা শেষ হয়। সিআরপিসি মামলা যেভাবে চলে, সেভাবেই চলে। শুধু গ্রেফতারের বেলায় আইনটা মনে করা হয়।


তিনি আরও বলেন, এ আইনটা দিয়ে সরকারের যদি ইনটেনশন থাকে, সাধারণ মানুষ বা প্রতিপক্ষকে হেনস্তা করার সুযোগ আছে। আপনি আজকে ক্ষমতায় আছেন, কাল ক্ষমতায় যদি অন্য কেউ আসে, এ আইনের মাধ্যমে আপনারাই হয়রানির শিকার হবেন। তিনি বলেন, আইনটি স্থায়ী করবেন না। প্রত্যাহার করেন প্রয়োজনে। এক থেকে দুই বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ান। আপনারা ভুগবেন, মানুষ ভুগবে।


জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, যখন এ আইন ২০০২ সালে পাস করা হয়, তখন এর উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য বিরোধী যেসব দল ছিল, তাদের অত্যাচার করার জন্য। কিন্তু গত ১৫ বছরে এ আইনের প্রয়োগ যেভাবে হয়েছে, সেখানে কিন্তু তার (চুন্নু) বক্তব্য সেটা সঠিক নয়।


তিনি আরও বলেন, এ আইনটা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজন। এ আইন থাকার কারণে অনেক ধরনের বিশৃঙ্খলা গত ১৫ বছরে হয়নি। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই আইন শুধু রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত রাজনৈতিক কর্মী বা নেতাদের জন্য ব্যবহার করা হয়নি। অনেক রকম সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা এই আইন প্রতিহত করেছে। এ কারণে এই আইনটি স্থায়ী করা উচিত।


বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে দ্রুত ও কার্যকর ভূমিকা পালনের উদ্দেশ্যে চাঁদাবাজি, যানবাহন চলাকালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, যানবাহনের ক্ষতিসাধন, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিনষ্ট করা, ছিনতাই, দস্যুতা, ত্রাস ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি, দরপত্র ক্রয়, বিক্রয়, গ্রহণ বা দাখিলে জোরপূর্বক বাধা দেয়া, যা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ইত্যাদি গুরুতর অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অধিকতর উন্নতির লক্ষ্যে ‘আইন- শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন-২০০২’প্রণয়ন ও জারি করা হয়েছিল।


আইনটি প্রণয়নের সময় এর মেয়াদ ছিল ২ বছর। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয়তার নিরিখে ক্রমান্বয়ে ৭ বার এর মেয়াদ বাড়িয়ে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল ১৭ বছর থেকে ২২ বছর বাড়ানো হয়, যার মেয়াদ আগামী ৯ এপ্রিল শেষ হবে। দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও অধিকতর উন্নতির জন্য এ আইনটি মেয়াদ শেষে বারবার সময় বাড়িয়ে স্থায়ীভাবে আইনে পরিণত করা প্রয়োজন।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com