
প্রকাশনায় ডিজিটাল ও অডিও মাধ্যম সংযোজনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ভাষা-সাহিত্যসহ সবকিছুকে স্মার্ট করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল চারটার পর রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এবার সরকারের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ। তাই ভাষা সাহিত্যসহ সবকিছুকে স্মার্ট করতে হবে।
তিনি বলেন, রক্ত দিয়ে আমরা যে ভাষার অধিকার আদায় করেছি সেটা এখন সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি যখন আমরা পেলাম, তখন আমি সিদ্ধান্ত নেই-এখানে একটা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলব। ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করি। আমার সঙ্গে জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনান ছিলেন। কাজ শুরু করি, ২০০১ এ ক্ষমতায় আসতে পারিনি, তখন খালেদা জিয়া সেই কাজটি বন্ধ করে দিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই তাকে (খালেদা), বন্ধ করে দিয়েছিলেন, ভালো হয়েছিল। কারণ, দ্বিতীয়বার যখন আমি সরকারে আসি সেটা প্রতিষ্ঠা করি। এখন সারা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। সেটা যেন আরো সমৃদ্ধ হয়, সেটা আমি চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের ভাষা আন্দোলনের মাস। এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির সত্তা জাগ্রত হয়। এই পথ বেয়েই আমরা পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা। আমরা বাঙালি বাংলা ভাষায় কথা বলি, মায়ের ভাষায় কথা বলি। এই অধিকারটাও আমাদের রক্ত দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে।
বাংলা একাডেমি অনেক আন্দোলনের সূতিকাগার মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে স্বাধীনতা এসেছে। জাতির পিতা ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অনুসরণ করে জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাবার পথ অনুসরণ করে এ পর্যন্ত যত ভাষণ দিয়েছি। অন্তত ১৯-২০ বার হবে। আমি কিন্তু বাংলা ভাষায় বক্তব্য দিয়েছি।
অনুষ্ঠানে বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব ছড়িয়ে দিতে অনুবাদে জোর দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন সরকারপ্রধান।
বইমেলা উদ্বোধনের আগে ১৬ বিশিষ্টজনের হাতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার তুলে দেন শেখ হাসিনা। সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১১টি ক্যাটাগরিতে ১৬ বিশিষ্টজনকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
এছাড়া বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘কালেক্টেড ওয়ার্কস অব শেখ মুজিবুর রহমান: ভলিউম-২’সহ কয়েকটি নতুন গ্রন্থ উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু উদ্বোধন হতে যাওয়া মাসব্যাপী বইমেলায় এবার ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০টি প্রতিষ্ঠান ১৭৩টি ইউনিট এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠান ৭৬৪টি ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। কয়েক বছর ধরে মেলার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছিল বিভিন্ন ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান। এবার বাংলা একাডেমি নিজেই বইমেলার সার্বিক আয়োজনের দায়িত্বে থাকছে।
ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে বইমেলা। তবে রাত সাড়ে ৮টার পর কেউ বাইরে থেকে মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবে না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর শহিদ দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। এ ছাড়া প্রতি শুক্র ও শনিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত থাকবে ‘শিশুপ্রহর’
বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ, বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন ছোটন।
বিবার্তা/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]