হস্তশিল্পকে বর্ষপণ্য ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:০১
হস্তশিল্পকে বর্ষপণ্য ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখায় এ খাতে বিশেষ নজর দিতে ‘হস্তশিল্প’কে ‘বর্ষপণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।


তিনি বলেন, “আমি হস্তশিল্পকে ২০২৪ সালের পণ্য হিসাবে ঘোষণা করছি। কারণ এটি নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। মহিলাদের অর্থনৈতিকভাবে আত্মনির্ভরশীল করে তুলছে এবং তাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। হস্তশিল্প দারিদ্র্য বিমোচনেও অবদান রাখছে”।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ জানুয়ারি, রবিবার সকালে ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।


রাজধানীর উপকণ্ঠে পূর্বাচল নিউ টাউনে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন করেছে।


প্রতিবারই কোন না কোন পণ্যের প্রমোশনের জন্য বর্ষপণ্য ঘোষণার রেওয়াজ থাকার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “হস্তশিল্পকে ২০২৪ সালের বর্ষপণ্য হিসেবে ঘোষণা করছি।”


কেন হস্ত শিল্পকে বর্ষপূর্ণ করা হলো তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, এবারের যে বর্ষপণ্য অর্থাৎ হস্তশিল্প পণ্য সেটা আমাদের নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াবে এবং এর মাধ্যমে তারা স্বাবলম্বী হবে। যারা গৃহকর্মে নিযুক্ত তারা গৃহকর্মের পাশাপাশিও কিছু কাজ করতে পারবেন। সে কর্মসংস্থানের সুযোগও তাদের জন্য সৃষ্টি হবে। আর একটা জাতিকে উঠে দাঁড়াতে হলে, যেখানে আমাদের অর্ধেকই নারী তাদেরকেও আমাদের স্বাবলম্বী করতে হবে। নারীদের স্বাবলম্বিতা আমাদের আরো বেশি প্রয়োজন। এক্ষেত্রে এটা তাদের সহায়ক হবে।


এজন্য প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, তাঁর সরকার তৃণমূলে অনলাইন ব্যবহারের শিক্ষা দিচ্ছে, এমনকি সকলের হাতেও মোবাইল ফোন রয়েছে। তাছাড়া সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছে, সেখানেও অনেক সুবিধা রয়েছে। নারীরা বহুপণ্য উৎপাদন করে বাজারজাত করতে পারে। সেক্ষেত্রে তাঁর সরকার জয়িতা ফাউন্ডেশন করে দিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।


একেবারে তৃণমূলের মানুষ যে উৎপাদন করবে সেটাই তারা বাজারজাত করবে। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোডে চমৎকার একটি ভবন করে দিয়ে বাজারজাত করার ব্যবস্থাও তিনি করে দিয়েছেন এবং এটি জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সম্প্রসারণ করে দেবেন বলেও উল্লেখ করেন।


তিনি বলেন, এখন যেমন কিছু এনজিও টাকা দেয় তারা (মহিলারা) মুড়ি, চিরা তৈরি করে। তারা শুধু মুড়ি-চিড়া তৈরি করবে কেন, মানুষেরতো এখন খাদ্য চাহিদাও বদলে গেছে। আমাদের নারীদের যদি আমরা প্রশিক্ষণ দেই তাহলে তারা একদিকে চিড়া মুড়ি খই এর পাশাপাশি পিঠাপুলি তৈরি করতে পারবে, আচার, ফুচকা, নুডুলস, স্পেগেটি এগুলো তৈরি করা কোন কঠিন ব্যাপার হবে না। তাছাড়া পোশাক পরিচ্ছদ তৈরি করতে পারবে। পোশাক পরিচ্ছদে এমব্রয়ডারি করা, নানা সুতার কাজ করা সেই সাথে উলের তৈরি করা জিনিস, কাটার কাজ, তামা, কাসা, পিতল, মাটি, কাঠ, খড়, গমের ডাটা, কাঁশফুল, কাঁশফুলের ডাটা, বেত, সুপারি গাছের ছাল, পাতা, কচুরিপানা দিয়ে কাগজসহ অনেক পণ্য তৈরি হচ্ছে, কলা গাছের থোর দিয়ে সুতা বানিয়ে সেটা দিয়ে শাড়ি, আনারস গাছের পাতা থেকেও খুব ভালো সিল্ক তৈরি করা যায়, তাছাড়া বাঁশসহ অন্যান্য জিনিসের ব্যবহার করে ঘরে বসেই পণ্য তৈরি করতে পারবে।


তিনি আরো বলেন, অনেক কাজ মেয়েদের করার সুযোগ আছে। শুধু তাদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। কখন কোন ধরনের রং, ডিজাইনের প্রয়োজন। কখন কোন ধরনের রং এবং ডিজাইনের ব্যবহার করতে হবে সেটার নির্দেশনাটা দেয়া। আরো একটি বড় প্রয়োজন সেটা হচ্ছে অনলাইনে কেনাবেচার ব্যবস্থা করে দেয়া। ইতোমধ্যে আমাদের শিক্ষা দেয়া চলছে। এই শিক্ষা আমরা আরো ভালোভাবে দেব, এতে করে প্রতিটি নারীরই আলাদা কিছু উপার্জন থাকবে। আর উপার্জন থাকলে তার পরিবারে, সমাজে, সংসারে একটা অবস্থান থাকবে। এভাবে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র বিমোচনতো হবেই, নারীর ক্ষমতায়নেও এই শিল্প যথেষ্ট সুবিধা এনে দেবে।


বিবার্তা/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com