আজ ১৮ ডিসেম্বর। রাজবাড়ী হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনটিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর অবাঙালি বিহারিদের কবল থেকে মুক্তি পায় রাজবাড়ী জেলা।
রাজবাড়ী রেলের শহর হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের সময় বিহারি ও অবাঙালিদের ঘাঁটি ছিল মজবুত। যে কারণে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগিতায় পুরো শহর দখলে নেয় বিহারিরা। নির্বিচারে চালাতে থাকে জ্বালাও, পোড়াও এবং গণহত্যা। তারা ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বরের পর থেকে অতিমাত্রায় তৎপর হয়ে উঠেছিল।
পুরো শহর দখল করে রেখেছিল তারা। ৯ ডিসেম্বর শহরের লক্ষ্মীকোল এলাকায় বিহারিদের সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।বিহারিদের গুলিতে সেদিন বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক, শফিক ও সাদিক শহীদ হন।বিহারিরা ১৩ ডিসেম্বর শহরের বিনোদপুর বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রহরীকে হত্যা করে।
১৬ ডিসেম্বর সারাদেশে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করলেও রাজবাড়ী শহর তখনও অবাঙালি বিহারিদের দখলে। পরে জেলার সব অঞ্চল থেকে মুক্তিবাহিনী রাজবাড়ীতে যুদ্ধের উদ্দেশে সংগঠিত হতে থাকে।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজবাড়ীর কমান্ডার কামরুল হাসান লালী জানান, সারা দেশে ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের পতাকা উড়লেও রাজবাড়ী মুক্ত হয় ১৮ ডিসেম্বর। পাকিস্তানিরা পিছু হটলেও বিহারিরা অত্যাচার চালাতে থাকে। রেলের শহর হওয়ায় শহরের নিউ কলোনি, লোকোসেডসহ বেশকিছু জায়গায় ঘাঁটি ছিল বিহারিদের। তারা অত্যাধুনিক অস্ত্রে সুসজ্জিত ছিল। যে কারণে কিছুতেই পরাজয় মেনে নিচ্ছিল না তারা।
এরপর ১৬, ১৭, ও ১৮ ডিসেম্বর বিহারিদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মাগুরা, পাংশা, গোয়ালন্দ ও রাজবাড়ীসহ বেশ কয়েকটি সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেন। এতে শহীদ হন রফিক, শফিক ও সাদিকসহ সাত মুক্তিযোদ্ধা। বিহারি ক্যাম্প থেকে উদ্ধার করা হয় ১৯ নারীকে। পরে ১৮ ডিসেম্বর বিকালে পরাজয় মেনে আত্মসমর্পণ করে বিহারিরা।
বিবার্তা/মিঠুন/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]