অনলাইন জুয়া ওয়ান এক্স বেট: মাসে ২০ কোটি টাকা পাচার
প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১:৪৮
অনলাইন জুয়া ওয়ান এক্স বেট: মাসে ২০ কোটি টাকা পাচার
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িত থাকায় ওয়ান এক্স বেটের ম্যানেজারসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সোমবার রাতে সিআইডির একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। এ সময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ১৭টি বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবাইল ফোন ও এজেন্টসহ ২২টি সিম উদ্ধার করা হয়েছে।


অনলাইন জুয়া ওয়ান এক্স বেটের মাধ্যমে প্রতিমাসে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা লেনদেন হয়। এই টাকার সিংহভাগ দেশের বাইরে পাচার হচ্ছে। ওয়ান এক্স বেটসহ বাংলাদেশে প্রচলিত যতগুলো বেটিং সাইট রয়েছে তার বেশিরভাগই মূলত রাশিয়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য ম্যানেজার নিয়োগ করা হয়। ম্যানেজার বাংলাদেশে জুয়ার এজেন্ট হিসেবে বিশ্বস্তদের নিয়োগ দেয়।ওয়ান এক্স বেট জুয়া সাইটের অন্যতম একজন বাংলাদেশী এজেন্ট হচ্ছে বরিশালের তারেক রহমান ওরফে তুহিন নামক এক ব্যক্তি। এছাড়াও এ চক্রের আরো সদস্য রয়েছে।


গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সাইফ বিন ওহিদুল ওরফে বিপু (৩০), মো. জামিল হোসেন (৪২), মো. রাসেল শেখ (২৩), মো. সাব্বির হোসেন (২২), মো. সোহাগ হোসেন (২৪), মাইনুদ্দিউদ্দিন শিকদার ওরফে ছোটন (২৫) এবং মো. ইমন হোসেন (২৩)।


৫ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান (মিডিয়া) এই তথ্য জানিয়ে বলেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।


যেভাবে চলে অনলাইন জুয়া:


সিআইডি জানায়, অনলাইন জুয়া খেলার জন্য আলাদা আলাদা বেটিং সাইট বা ওয়েবসাইট রয়েছে। এসব ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রথমেই একজন ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। রেজিস্ট্রেশনের পরে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দেয়া হয়। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অঙ্কের একটি ব্যালেন্স যোগ করতে হয়। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে নির্দিষ্ট নম্বরে টাকা পাঠালে ব্যালেন্স যোগ হয়ে যায়। ব্যালেন্স যুক্ত হওয়ার পরে সাইটগুলোতে বিভিন্ন ধরনের জুয়া খেলার যে অপশন রয়েছে সেগুলো থেকে যেকোনো একটি পছন্দ অনুযায়ী অ্যাকাউন্ট হোল্ডার খেলতে পারেন।


এক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তি জিতলে অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স জমা হবে। আর হেরে গেলে টাকা চলে যায় জুয়ার সাইট পরিচালনার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে।


গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডি জানতে পেরেছে, ওয়ান এক্স বেটসহ বাংলাদেশে প্রচলিত যতগুলো বেটিং সাইট রয়েছে তার বেশিরভাগই মূলত রাশিয়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য ম্যানেজার নিয়োগ করা হয়। ম্যানেজার বাংলাদেশে জুয়ার এজেন্ট হিসাবে বিশ্বস্তদের নিয়োগ দেয়। আবার জুয়ার এজেন্টরা এ সমস্ত অ্যাপস পরিচালনা করতে পারে টেকনিক্যালি দক্ষ এমন লোক নিয়োগ দেন।


ওয়ান এক্স বেটের অন্যতম একজন বাংলাদেশী এজেন্ট হচ্ছেন বরিশালের তারেক রহমান ওরফে তুহিন নামের একজন। জুয়ার এজেন্টের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তিনি গ্রেপ্তার সাইফ বিন ওহিদুলকে ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দেন এবং পরে তাকে পার্টনার হিসেবে এজেন্টশিপ দেন। বিপু আবার এই কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য গ্রেপ্তার বাকি ৬জনকে নিয়োগ দেন। তারা টেকনোলজিতে বেশ দক্ষ। তারা বিপু এবং তুহিনের জুয়ার চ্যানেলে সকল লেনদেন এবং অ্যাপস পরিচালনা করে থাকেন।


ওয়ান এক্স বেটের অন্যতম একজন বাংলাদেশী এজেন্ট পলাতক তুহিনসহ চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে সিআইডি।


গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে সিআইডি আরও জানায়, অনলাইন জুয়া ওয়ান এক্সবেটের মাধ্যমে এই চক্র প্রতিমাসে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা লেনদেন করে। অনলাইন জুয়ার লেনদেনের এই টাকার সিংহভাগ দেশের বাইরে পাচার হচ্ছে। দেশের হাজার হাজার লোক অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িত হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছে।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com