জানা গেল দেশের ইন্টারনেট সেবায় ধীরগতির কারণ
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ২২:৩৬
জানা গেল দেশের ইন্টারনেট সেবায় ধীরগতির কারণ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দেশের ১৯টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) কোম্পানির কাছ থেকে বকেয়া আদায় করার জন্য ব্যান্ডউইডথ সেবা ডাউন করে দিয়েছে সাবমেরিন কেবল কোম্পানি। যারফলে দেশের গ্রাহকদের অনেকে ধীরগতির ইন্টারনেট সেবার মুখে পড়েছেন।


বিল বকেয়া থাকায় দেশের ৩৪টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯টির ব্যান্ডউইথ ডাউন করে দিয়েছে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি। ফলে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকরা অনেকে ধীর গতির ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছেন।


১৯টি আইআইজি’র কাছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস পিএলসি’র (বিএসসিপিএলসি) পাওনা ৩৮৪ কোটি টাকা। বকেয়া পরিশোধ না করায় বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) মধ্যরাতের পরে বিএসসিপিএলসি আইআইজিগুলোর গড়ে ২৫ শতাংশ ব্যান্ডউইথ তথা ৬২৫ জিবিপিএস ডাউন (সীমিত) করে দেয়। আর এতেই ধীর গতির ইন্টারনেট সেবার পাচ্ছেন অনেক ব্যবহারকারী।


প্রসঙ্গত, দেশের মোট ব্যবহৃত (৫১০০ জিবিপিএস) ব্যান্ডউইথের মধ্যে ২৫০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে বিএসসিপিএলসি।


ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, যেখানে গ্রহাকের স্বার্থ জড়িতে সেখানে এরকম সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সরকারের ভাবা উচিত। কারণ এই ক্ষতির প্রভাব অনেক। ইতোমধ্যে বিভিন্ন আইএসপি ফোন করে ইন্টারনেট ধীরগতির কারণে অভিযোগ করছে।


খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইটিসির (ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল ক্যাবল) ব্যাকআপ থাকায় ইন্টারনেটে সেবায় ধীরগতির প্রভাব খুব একটা বোঝা যাচ্ছে না। ছুটির দিন হওয়াও একটা কারণ। ছুটির দিনে অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় ইন্টারনেট ব্যবহার কম হয়। শনিবারও (২৫ নভেম্বর) এই অবস্থা থাকবে। রবিবার মূল প্রভাবটা বোঝা যেতে পারে।


এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএসসিপিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মির্জা কামাল আহমেদ বলেন, আইটিসির (ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল ক্যাবল) ব্যাকআপ থাকায় খুব একটা প্রভাব পড়ছে বলে আমাদের মনে হয় না।


মির্জা কামাল আহমেদ বলেন, যে সব আইআইজির টাকা বকেয়া আছে তাদের সাথে অনেকবার মিটিং করা হয়েছে। কিন্তু কোন অগ্রগতি না হওয়ায় উপর মহলের নির্দেশে ১৯টি আইআইজির ৫০০ জিবিপিএস ব্যান্ড উইথ লিমিটেড করা হয়েছে। ১৯ টি আইআইজির মোট ৩৮০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বলেও জানান তিনি।


তিনি আরও বলেন, পাওনা আদায়ে গত ১৩ জুলাই টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দেয় বিএসসিপিএলসি। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ৯ আগস্ট বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠি দেয়। এরপরও সাড়া দেয়নি সংশ্লিষ্ট আইআইজি প্রতিষ্ঠান।


মির্জা কামাল আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যে একটি আইআইজি টাকা পরিশোধ করায় ১০০ জিবিপিএস ব্যান্ড উইথ আপ করা হয়েছে। বাকিগুলো আগামী রবিবারের মধ্যে পাওনা পরিশোধ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।


এ বিষয়ে আইআইজিএবির মহাসচিব আহমেদ জুনায়েদ গণমাধ্যমকে বলেন, যে ৯টি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তার বাইরে আরও অনেকের ব্যান্ডউইথ সীমিত করা হয়েছে। তাদের আগাম নোটিশ দিতে পারত। সীমিত করার আগে অন্তত জানাতে পারত। আইএসপিএবি’র সভাপতি ইমদাদুল হকের মতামতই একই। তিনি বলেন, আমার জানা অনেক আইআইজি আছে যাদের কোনো নোটিশ প্রদান করা ছাড়াই ব্যান্ডউইথ ডাউন করা হয়েছে।


আরও জানা গেছে, নিয়ম আছে এক মাসের বিল বিএসসিপিএলসিতে বকেয়া রাখা যাবে। বিএসসিপিএলসি যে হিসাব দিয়েছে তাতে করে দেখা যায় আইআইজিগুলোর প্রায় ৮ মাসের বিল বকেয়া রয়েছে।


দেশে এখন মোট ব্যান্ড উইথের চাহিদা ৫১০০ জিবিপিএস তার মধ্যে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস সরবরাহ করে ২৪৮৫ জিবিপিএস।


উল্লেখ্য, সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির কাছ থেকে ব্যান্ডউইথ কেনে কয়েকটি আইএসপি ও আইআইজিগুলো। আইআইজি থেকে ব্যান্ডউইথ কিনে সরাসরি গ্রাহককে সেবা দেয় ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) ও মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com