বিএনপির দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।

তিনি বলেন, বিদেশি প্রভুদের ধরনা দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ করে, বার্তা প্রেরণ করে আপনারা ভেবেছিলেন বিদেশি প্রভুরাই আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবেন। কিন্তু সেটাও ব্যর্থ হয়ে গেছে। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবারও বিজয়ী হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আজকে সকালে পত্রিকায় দেখলাম বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল গতকাল একটি মহিলা সমাবেশে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখছিলেন। উনি বললেন, বাংলাদেশ এখন পরাশক্তিদের কর্তৃত্ববাদের প্রতিযোগিতার মধ্যে এবং এই যে কর্তৃত্ববাদী প্রতিযোগিতা চলছে এর জন্য দায়ী বর্তমান সরকার। কী কথা বলতে চাইছেন উনি নিজেও বুঝতে পারেন নাই। তবে তার কথায় এটা প্রমাণিত হয়েছে, বাংলাদেশ বিশ্বরাজনীতিতে একটি মর্যাদাশীল জাতিতে পরিণত হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলোর কাছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে যার কারণে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা দিয়ে বিবেচনা করছে, দেখছে এবং কথা বলছে সেটাই উনি মূলত বোঝাতে চেয়েছেন। মির্জা ফখরুল সাহেব আপনার ভেতরের অন্তর্জ্বালা আমরা বুঝি।

হানিফ বলেন, বাংলাদেশকে আপনারা ক্ষমতায় থাকতে চরম দরিদ্র দেশে নিয়ে গেছেন, ভিক্ষুকের রাষ্ট্র বানিয়েছিলেন, সন্ত্রাসের রাষ্ট্র বানিয়েছিলেন, জঙ্গিবাদের রাষ্ট্র বানিয়েছিলেন। বাংলাদেশকে নিয়ে তখন কেউ ভাবত না, কথা বলত না। বিশ্ববাসী জানত এই দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্র, জঙ্গিবাদের রাষ্ট্র, সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। সেই বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্বের কারো মাথাব্যথা ছিল না।

আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, আজকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দিয়ে বাংলাদেশকে যেভাবে এগিয়ে নিয়েছেন, অন্ধকার থেকে আলোতে উদ্ভাসিত করেছেন চরম দরিদ্র রাষ্ট্র থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। ২০৩১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে উপনিত হবে সেজন্য আজকে বাংলাদেশ গোটা বিশ্বের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা পাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুলকে বলি আপনাদের আন্দোলন-আন্দোলন খেলা শেষ হয়েছে। আপনারা ভেবেছিলেন সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে জনগণের সমর্থন পাওয়া যাবে। কিন্তু আপনাদের এই মিথ্যাচার জনগণ গ্রহণ করেনি। যার কারণে আপনাদের এই আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়েছে। পরে আপনারা ধরনা দিলেন বিদেশি প্রভুদের কাছে। বিদেশি প্রভুদের ধরনা ধরে লবিস্ট নিয়োগ করে, বার্তা প্রেরণ করে ভবেছিলেন বিদেশি প্রভুরাই আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবেন। কিন্তু সেটাও ব্যর্থ হয়ে গেছে।

হানিফ বলেন, আমি আজকেই একটা সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখলাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুই কংগ্রেসম্যান তারা একটি আলোচনা সভায় বলছেন, আমরা অবাক হয়ে যাই যে তারেক রহমানের মতো একটা সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে বিএনপির মতো একটা দল কেন তাদের নেতা হিসেবে নির্বাচন করেছেন এটাই বুঝে পাই না। এটা আজকে তাদের যারা জেনেছে তারা বুঝতে পারছে। এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এম্বাসেডর জেমস বোরিয়াটি ২০০৮ সালে উনি তার দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছিলেন সেখানে তিনি লিখেছিলেন যে বিএনপির নেতা তারেক রহমান একজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী এবং দুর্নীতিবাজ এটা দেশের জন্য এবং বহির্বিশ্বের জন্য সন্ত্রাসী হিসেবে একটা ক্ষতিকারক সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচিত। এই ব্যক্তিকে কখনো দেশের মানুষ গ্রহণ করে না। বিদেশিরাও গ্রহণ করে না।

তিনি বলেন, আপনাদের অনেকের হয়তো স্মরণে আছে নাহলে মিডিয়াতে খোঁজ করে দেখবেন। ২০১৩ সালে যখন বিএনপি আন্দোলন করলেন সরকারের বিরুদ্ধে আমি দাঁড়িয়ে বলেছিলাম বিএনপির উদ্দেশ্যে ২০১৪ সালের নির্বাচনে নয় ২০২৯ সালেও ক্ষমতায় আসা যায় কি-না সেটা নিয়ে ভাবতে হবে আপনাদের। এর ক্ষমতা থেকে আওয়ামী লীগকে সরানোর কোনো সুযোগ নেই। আজকে এই বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলে যাই যতদিন তারেক রহমানের মতো সন্ত্রাসী নেতা আপনাদের থাকবে, যতদিন দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার মতো নেত্রী আপনাদের থাকবে ততদিন এই বিএনপির বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় বসার কোনো সুযোগ নাই। আসতে পারবে না পারবে না, বলেন তিনি।

হানিফ বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব অহেতুক কেন মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আপনার কর্মীদের বিপদের মুখে ঠেলে দিতে চান। আপনারা জানেন যে আন্দোলন করে আপনারা সফল হবেন না। আপনারা সন্ত্রাসের পথ বাছার চেষ্টা করছেন। আমাদের ছোট ভাই ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বললেন যে বিএনপি এখন সন্ত্রাসের পথ খুঁজছে। তাদের সব সন্ত্রাসীকে বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়ে এসে দেশে আবার অরাজকতা করার চেষ্টা করছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি বলবো মির্জা ফখরুলকে আগুন নিয়ে খেলা করবেন না। সন্ত্রাসী নিয়ে যদি এই দেশকে আবারও অস্থিতিশীল করেন তাহলে সেটাকে কীভাবে কঠোরভাবে দমন করতে হয় তা আওয়ামী লীগ জানে, সরকার জানে। অহেতুক আপনার কর্মীদেরকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিপদের মুখে ঠেলে দেবেন না। আগামী ২০ বছরের মধ্যেও আপনারা রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে পারবেন না। খালি খালি তাদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হবে। আমি আপনাদের বলবো ষড়যন্ত্রের মেঘ কিন্তু কেটে যাচ্ছে। আবার সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছে।

বিবার্তা/ছাব্বির/সোহেল/এমজে