শিরোনাম
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে
'লোক দেখানো মশার ওষুধ নয়, প্রয়োজন আসল ওষুধের প্রয়োগ'
‘অবস্থা আশঙ্কাজনক, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সামগ্রিকভাবে কাজ করতে হবে’
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৩, ১০:১৩
'লোক দেখানো মশার ওষুধ নয়, প্রয়োজন আসল ওষুধের প্রয়োগ'
মহিউদ্দিন রাসেল
প্রিন্ট অ-অ+

"চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে ইতোমধ্যেই ৩০ জনের উপরে ডেঙ্গু জ্বরে মারা গেছেন। এটা খুবই আশঙ্কার বিষয়। তাছাড়া অনেক রোগীর পরীক্ষাও হচ্ছে না। ফলে আমরা তাদের তথ্যগুলো পাচ্ছি না।


তাই আমি মনে করি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রীয়ভাবে সিটি কর্পোরেশন আর আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা ২/৩টা বাসায় গিয়ে পানি পেলাম আর তাদের জরিমানা করলাম। এভাবে এর সমাধান আসবে না। আমাদের মাথায় রাখতে হবে, কেন আমি জরিমানার মধ্যে যাবো?


কেন আমি নিজের ঘরটা নিজে পরিষ্কার করতে পারি না? আর এক্ষেত্রে আমি সিটি কর্পোরেশনকে অনুরোধ করবো, বাসায় বাসায় পানি পরিষ্কার না করে রাস্তা-ঘাটের ড্রেনের মধ্যে মশার ওষুধ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। আমি কিন্তু আমার এলাকায় এখন পর্যন্ত মশার ওষুধ ছিটানোর শব্দ শুনতে পাইনি!


আর এটা শুনতে না পারায় সিটি কর্পোরেশনের বড় মাপের একজন কর্তা, যার নাম বলতে চাই না, তাকে জিজ্ঞেস করলাম- কেন আপনারা ড্রেনসহ উৎপত্তিস্থলগুলোতে মশার ওষুধ দিচ্ছেন না? তিনি জবাব দিলেন, এটা দিলে নাকি মাছ-টাছ মরে যাবে। এটা আমার কাছে হাস্যরসাত্মক উত্তর মনে হয়েছে। দেশ মরে যাচ্ছে, তারা মাছ বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আমি মনে করি ব্যাপকভাবে উদ্যোগ নিয়ে ওষুধ দিতে হবে। আর ওষুধের মধ্যে অবশ্যই উপকরণ থাকতে হবে, কোনভাবেই যেন লোক দেখানো না হয় অর্থাৎ সত্যিকারের ওষুধ যেন হয়। সর্বোপরি আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, ডেঙ্গুর বিষয়ে আমাদের সামগ্রিকভাবে সর্তক হয়ে কাজ করতে হবে। অন্যথায়, এটা কন্ট্রোলের বাহিরে চলে যাবে।"


কথাগুলো বলেছেন অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ। যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এমবিবিএস, এফসিপিএসসহ (মেডিসিন) সহ নানা উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেছেন। হয়েছেন গোল্ড মেডেলিস্টও। মেডিসিন এই বিশেষজ্ঞ বর্তমানে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের ডেঙ্গু চিকিৎসায়ও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি বিবার্তা২৪ডটনেটের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতি, নিয়ন্ত্রণের উপায়সহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বিবার্তা প্রতিবেদক মহিউদ্দিন রাসেল।


বিবার্তা: চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণ কী বলে আপনি মনে করেন?


ডা. আবুল কালাম আজাদ: এবার সামগ্রিক পরিবেশ এবং সিজনের কারণে এমন হয়েছে। আর এমনিতেই জুন থেকে সাধারণত এই সিজনটা শুরু হয়। আর সেপ্টেম্বরকে বলা হয় পিক সিজন। কারণ এই সময়টাতে একদিকে বৃষ্টি হয়, অন্যদিকে গরমও থাকে। ফলে রোদ-বৃষ্টির এই সময়টাতে পিক সিজন থাকে। তবে এটা ঠিক যে, এবার কিন্তু বাংলাদেশে সবকিছু শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকেই, যেটা হওয়ার কথা ছিল না। শীতের সময়েও এবার ডেঙ্গ ছিল। আগে পিক সিজনের সময় ডেঙ্গ যে আকার ধারণ করতো, এবার তার আগে থেকে অর্থাৎ এই সময় থেকে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আর এবার বেড়ে যাওয়ার কারণ কী?



কারণ হচ্ছে, দেখেন– আপনি কি মশকের জন্য ওষুধ নিধনের কার্যক্রম কি দেখছেন? হয়তো তেমন দেখছেন না! ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে হলে মশাকে মারতে হবে। তার লাভাকে ধ্বংস করতে হবে। আর মারতে হলে তো মশার ওষুধ দিতে হবে। কিন্তু মশার ওষুধ যেন কোনো জায়গায় নেই! এখন যেটা করা হচ্ছে - সেটা হলো কোন এলাকায় যদি ডেঙ্গু রোগী আক্রান্ত হয় তাকে ট্রেস করা হচ্ছে অর্থাৎ তার বাসার আশপাশে মশার ওষুধ দেয়া হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে তেমন কিছু করা হচ্ছে না। অথচ ১০ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু ৬০টি জেলায় ছড়িয়ে গেছে। ফলে এটা নিয়ন্ত্রণে তো আমাদের ব্যাপক একটা উদ্যোগ নেওয়া দরকার। আমি দুইটা জায়গায় গেলাম, দুইটা বিল্ডিংয়ের উপর পানি পেলাম। এরপর ২ লাখ টাকা জরিমানা করলাম। এটা দিয়ে তো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ হবে না। এটা তো লোক দেখানো সস্তা জনপ্রিয়তা ছাড়া আমার কাছে কিছু মনে হয় না।



বিবার্তা: অন্য বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গুর উপসর্গের ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য পর্যবেক্ষণ করেছেন কি না?


ডা. আবুল কালাম আজাদ: হ্যাঁ, অবশ্যই। আমি যদি বলি যে ক্ল্যাসিকেল ডেঙ্গ অর্থাৎ শুরুতেই যেটা ছিল সেখানে হাই ফেভারে জ্বর আসত। ১০৩-১০৪ ডিগ্রী জ্বর থাকতো। এটাকে আমরা হাড্ডি ভাঙ্গা জ্বর বলতাম। তারপর ৩ দিন জ্বর থাকার পরে ২-৭ দিন আমরা বলতাম জ্বরটা কমে যাচ্ছে বা কমে যাবে। কিন্তু এটা রিপিয়ার করতো। এই যে হাইগ্রেড ফেভারটা এটা এবার আমরা কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে পাচ্ছি, আবার কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে পাচ্ছিও না। তাহলে আমরা বলতে পারি এটা একটা ভিন্নতা।


তাছাড়া ডেঙ্গুতে প্রথমদিকে যেটা হত, শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা, মাথা ব্যথাসহ আরও নানা ব্যথা থাকত। তাছাড়া খাবারে অরুচিসহ বমি থাকত। কিন্তু গত ২/৩বছর ধরে আমরা পাচ্ছি ডায়রিয়াটা। আর এবারের ডেঙ্গুতে ডায়রিয়ার প্রকোপটা অনেক বেশি। প্রত্যেকদিন হাসপাতালে বিশাল একটা গ্রুপ আসছে ডায়রিয়া নিয়ে। তাহলেই ডেঙ্গুর আলামত হিসেবে ডায়রিয়াটা গত দুই বছরের ন্যায় এবারও আছে। এক্ষেত্রে রোগীদের খাবার গ্রহণের বিষয়গুলো বুঝাতে আমাদের সমস্যা হয়ে যায়। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, এবার ডেঙ্গুতেও বিগত দুই বছরের ন্যায় সর্দি-কাশি নিয়ে আসতেছে, পরে ডেঙ্গু ধরা পড়ছে। এই লক্ষণটা ডেঙ্গুর শুরুর দিকে ছিল না। যেহেুতু এখনো কোভিডও পুরোপুরিও নির্মূল হয়নি, সেহেতু এর আলামতের সাথে ডেঙ্গুরও কিছু আলামত মিলে যায়।


বিবার্তা: কোভিডের জ্বর আর ডেঙ্গুর জ্বরের মধ্যে কী পার্থক্য রয়েছে?


ডা. আবুল কালাম আজাদ: দুই জ্বরের মধ্যে পার্থক্য হলো– কোভিডের ক্ষেত্রে সাধারণত লো গ্রেড ফেভার হয়, আর ডেঙ্গুতে হাইগ্রেড ফেভার হয়।


বিবার্তা: কোন পর্যায়ে গেলে একজন ডেঙ্গু রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন?


ডা. আবুল কালাম আজাদ: দেখুন, ডেঙ্গুর যে রোগীগুলো মারা যাচ্ছে তাদের মধ্যে দেখা যায়, কারো লিভার ফাংশন খারাপ হয়ে গেছে, কারো নিউরোলজিক্যাল মেইনফ্রেসট্রেশন হচ্ছে, সিভিয়ার হেডঅ্যাক হচ্ছে! আমার আন্ডারে একটা বাচ্চা মেয়ে ভর্তি আছে, তার ৮ জিপিটি লিভার ফাংশন হয়ে গেছে প্রায় ২ হাজারের মতো! এভাবে এক্সপেন্ডেড ডেঙ্গুতে নানাজনের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ নানা অঙ্গ ক্ষতির চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন।


আরেকটা বিষয়, যদিও এখন আমরা ডেঙ্গুর ট্রিটমেন্ট করি এ, বি, সি ভাগ দিয়ে। আগে এটা করা হতো হেমোজিন ফেভার যেটাতে সবাই অভ্যস্ত ছিল। সেজন্য বলছি, ডেঙ্গুতে দুইটা বিষয় জড়িত, একটা হেমোজিন ফেভার আরেকটা ডেঙ্গুর শক সিন্ড্রম। আর এক্ষেত্রে হেমোজিন ফেভারটা হচ্ছে যখন প্লাটিলেড কমে গিয়ে ব্লেডিং হয় সেই অবস্থা। সহজ ভাষায় আমি যদি বলি, এটা দাঁতের গোড়া দিয়ে হতে পারে, নাক দিয়ে হতে পারে, কালো পায়খানা হচ্ছে-রক্তও যেতে পারে অথবা চামড়ার নিচে কতগুলো অ্যাশ আসতে পারে। এসব কারণে আমরা পরীক্ষা করি, ট্রনিকও টেস্ট করি। আবার ব্লাড প্রেশার মাপার মেশিন দিয়ে মেপে দেখি কতগুলো ছোট ছোট ফেটিক্যাল হয়।



আরেকটা হচ্ছে শক। এটা খুবই খারাপ জিনিস। যেমন ধরেন– আমার ব্লাড প্রেশার ১২০/৮০ কিন্তু ডেঙ্গুতে যে জিনিসটা হয় পোলিডটা লস হয়। ফলে ব্লাড প্রেশারটা কমে যেতে থাকে। যেমন ধরেন- আগে আমার প্রেশার ১২০/৮০ থাকলেও আমি যখন খারাপের দিকে যাবো তখন হয়ে যাবে ৯০/৮০ বা ১০০/৮০। তার মানে এটা খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা একটা সিভিসি পরীক্ষা করে নেই অর্থাৎ ডেঙ্গুর শুরুতেই যদি সিভিসি করা থাকে তাহলে আমাদের জন্য বুঝতে সুবিধা হয়ে যায়, আমার হেমাটকিকটা বাড়লো কিনা। যদি ২০ শতাংশ এর উপরে বেড়ে যায় তখন আমরা বলি যে, ফ্লিটটা লস হচ্ছে বেশি। এই রোগীগুলো শক এর দিকে চলে যাচ্ছে বলে আমরা বলতে পারি। আর এই রোগীগুলোর জন্য আমাদের পোলিডটা ম্যানেজ করতে হবে। কারণ ডেঙ্গুতে যেটা হয়, শরীরের রক্তের পানিগুলো বের হয়ে চলে যায়। কোথায় যায়? থার্ড স্পেসে চলে যায়। অথচ থাকার কথা ছিল রক্তের ভেতরে কিন্তু চলে গেল পেটে। ফলে পেট ফুলে যায়, খাবারে প্রচণ্ড অরুচি আসে। এদিকে পিত্তথলিও ফুলে প্রচণ্ড পেইন হয়। তাছাড়া ফুসফুসেও পানি চলে আসে, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। আর এই জিনিসগুলো বেশি আকার ধারণ করলে মানুষ মারা যেতে পারে।



একটা জিনিস আমাদের মাথায় রাখতে হবে পোলিড ডিপ্লেসমেন্ট হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। পোলিডের ক্ষেত্রে আমরা বলি, ৪ দিন সাধারণত জ্বর থাকে। এরপর ক্রিটিক্যাল ফেসে চলে যায়। ফলে এই সময় পোলিড হ্যান্ডেলে খুবই সতর্ক হতে হয়। আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ ও খবর নিয়ে জানা যায়, যারা ডেঙ্গুতে মারা গেছেন তাদের মধ্যে পোলিড ওভারলোড একটা বড় কারণ। রোগীর অবস্থা বুঝে পোলিডটাকে অ্যাসেস করতে হয়। আর এর মধ্য দিয়ে যে পানিটা থার্ড স্পেসে চলে গিয়েছে সেটা আবার রক্তের মধ্যে ঢুকা শুরু করে। পোলিড কম হলে শক এ মারা যাবে আর বেশি হলে পানি ওভারলোড হয়ে মারা যেতে পারে। তার মানে এই সময়টাতে একটু সতর্কতার সাথে ক্যালকুলেড করে চিকিৎসা দেওয়া দরকার। আমি মনে করি এই রোগীগুলোকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা উচিত।


বিবার্তা: অনেক রোগী টেস্ট করাতে অনাগ্রহী আবার অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হতে চান না। আপনি এর পেছনে কী কারণ দেখেন?


ডা. আবুল কালাম আজাদ: এখানে আমি দুইটি জিনিস বলতে চাই – বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে পরীক্ষা না করার একটা প্রবণতা আছে এবং একইসাথে একটা ভুল ধারণা আছে যে, পরীক্ষা দিলেই মনে করে ডাক্তার লাভের জন্য পরীক্ষা দিচ্ছে।


আবার আমাদের অনেক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে বললেও তারা ভর্তি হতে চান না। আবার আরেকটা গ্রুপ আছে যাদের দরকার না থাকলেও ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। অথচ যার আসলেই ভর্তি হওয়া দরকার সে অর্থনৈতিক কারণে হোক, আত্মীয়-স্বজন না থাকার কারণে হোক অথবা না বোঝার জন্য হোক ভর্তি না হয়ে বাসায় গিয়ে মারা যাচ্ছে। আরেকটা বিষয় ডেঙ্গু যখন শক এ চলে যায়, আসলেই তখন সেখান থেকে রিভার্স করার সুযোগ থাকে না। এই রোগীগুলো যখন আমাদের কাছে খারাপ হয়ে আসে, তখন চিকিৎসা করলেও খুব একটা কিছু করার থাকে না। কিছু ক্র্যাইটেরিয়া আছে যেগুলো দেখা দিলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দরকার।


বিবার্তা: কোন লক্ষণগুলো দেখা দিলে রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত?


ডা. আবুল কালাম আজাদ: আমরা কাদের রিস্ক ফেক্টর বলবো, আমি সহজ ভাষায় বলি একটা হচ্ছে ছোট বাচ্চা আরেকটা হচ্ছে বড় বাচ্চা। এক্ষেত্রে বড় বাচ্চা হচ্ছে বয়স্ক লোক। বাচ্চাদের খাওয়ানোসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। আর বয়স্কদের কিডনি ডিজইজ, হার্টে ডিজইজ,লিভারে রোগ, শ্বাসকষ্টের রোগসহ নানা রোগ থাকে। সবচেয়ে বড় কথা হলো আমরা যে পানিটা দিয়ে থাকি সেটা হ্যান্ডেল করে কে? কিউনিই করে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে যাদের কিডনিটাও দুর্বল থাকে। তার মানে এটা তারা হ্যান্ডেল করতে পারে না। ফলে তারা বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। তাছাড়া প্রেগনেন্সি অবস্থায় সতর্ক থাকতে হবে। যদি কেউ কনসিভ করা থাকেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের ফলোআপে থাকতে হবে। আর ডাক্তার মনে করলে সাথে সাথে ভর্তি হয়ে যেতে হবে।



আরেকটা বিষয় আমাদের অনেকের ছেলে-মেয়েরা বাইরে থাকেন কিন্তু আমরা বাসায় থাকি, আমাদের সাথে হয়তো কেয়ারটেকাররা থাকেন কিন্তু তারা তো এই বিষয়গুলো বুঝবেন না। ফলে এই পরিস্থিতিতে যারা থাকেন তাদের মধ্যে বয়স্কদের হাসপাতালে থাকাটাই ভালো। এছাড়া যাদের লিভার, কিডনিসহ নানা জটিলতা শরীরে রয়েছে তাদেরও হাসপাতালে থাকা উচিত। তাছাড়া যে রোগীগুলো শক এর দিকে চলে যাচ্ছে তাদেরকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। যদি কোন ব্লেডিং এর মেনিফেস্ট্রিকেশন থাকে,পেটে কোন তীব্র ব্যথা থাকে, কোন নিউরোলজিক্যাল ফিচার থাকে, ৬ ঘণ্টার বেশি ইউরিন আউটপুট বন্ধ হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই ভর্তি হতে হবে।



বিবার্তা: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আপনার পরামর্শ কী থাকবে?


ডা. আবুল কালাম আজাদ: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগও নিতে হবে। ঘরের কোণে টবে পানি যাতে না জমে সেই দিকে নজর দিতে হবে। তা না হলে এবার ডেঙ্গুটা কিন্তু আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। এই মাসের মধ্যে অর্থাৎ ১০ দিনে অলরেডি ৩০ জনের উপরে মারা গেছেন। এটা খুবই আশঙ্কার বিষয়। তাছাড়া অনেক রোগীর পরীক্ষাও হচ্ছে না। ফলে আমরা জানছিও না অনেক তথ্য। তাই আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, ডেঙ্গুর বিষয়ে আমাদের সামগ্রিকভাবে সর্তক হয়ে কাজ করতে হবে। অন্যথায়, এটা কন্ট্রোলের বাইরে চলে যাবে।


বিবার্তা: বিবার্তাকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।


ডা. আবুল কালাম আজাদ: আপনাকেও ধন্যবাদ। বিবার্তার জন্য শুভকামনা রইলো।


বিবার্তা/রাসেল/এসবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com