দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৮ সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে পড়া ১৮৬ আবেদন শুনানির নিষ্পত্তি শেষ হলো চার ধাপে।
রবিবার (১৪ মে) শেষ ধাপে বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের আবেদনের নিষ্পত্তি মধ্য দিয়ে শেষ হয়। নিষ্পত্তিগুলো ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন ভবন অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম এসব কথা বলেন।
সংসদীয় আসনের শুনানি আজ শেষ হলো উল্লেখ করে জাহাংগীর আলম বলেন,' কমিশন আবার বসে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে । জুন মাসটা আমাদের হাতে আছে। জুনের মধ্যে এটা আমরা শেষ করবো।'
পার্বত্য চট্টগ্রামে আসন বৃদ্ধির দাবির দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘এটা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের আসন সংখ্যা তিনশটি। এর বেশি আসন বানানোর সক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নেই। এটা যখন চূড়ান্ত হবে তখন বলা যাবে বাড়বে না কমবে।’
কমিশনের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চতুর্থ ধাপে শুনানি হয় সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১২.৩০ টা পর্যন্ত। তৃতীয় ধাপে কিশোরগঞ্জে নতুন আসন সৃষ্টিকরণ, ফরিদপুর -১,২,৩ ও ৪ আসন, ঢাকা-৪ ও১৯, গাজীপুর -২ ও ৪, নারায়ণগঞ্জ -৪ ও ৫ আসনের শুনানি হয় সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১২.৩০ টা পর্যন্ত। কুমিল্লা অঞ্চলের যে আবেদনগুলো হয়েছে সেই আবেদনগুলো ৩ মে শুনানি হয়। আর রাজশাহী অঞ্চলের শুনানি হয় গত ৭ মে।
সারাদেশ থেকে সংসদীয় আসনের সীমানা সংক্রান্ত ১৮৬ দাবি-আপত্তির আবেদন জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে। সীমানার আপত্তি নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৮৪টি আবেদন জমা পড়েছে কুমিল্লা অঞ্চল থেকে। রাজশাহীতে ৪৩টি, বরিশালে ২৯টি, ঢাকা অঞ্চলে ১৮টি আবেদন জমা পড়েছে। এ ছাড়া খুলনা ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে পাঁচটি করে আবেদন পড়েছে। অন্যদিকে সিলেট ও রংপুর অঞ্চল থেকে কোনো আবেদনই জমা পড়েনি।
নির্বাচন কমিশন জানায়, ৩৮ সংসদীয় আসনে প্রকাশিত খসড়া ইসির পক্ষে ৬০ আবেদন পড়েছে। বিপক্ষে পড়েছে ১২৬ আবেদন।
আবেদনের এসব শুনানি নির্বাচন কমিশনের সভাকক্ষে হয়। এর জন্য একটা গেজেট প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কোনটা কোন তারিখে অনুষ্ঠিত হবে তার গণবিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে ৷ যারা আপত্তি দাখিল করেছিলেন তারা তাদের যৌক্তিক প্রমাণাদিসহ শুনানিতে উপস্থাপন করতে হবে।
এদিকে বিদায়ী নুরুল হুদা কমিশনের রেখে যাওয়া সংসদীয় আসনের সীমানা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের খসড়া সীমানা হিসেবে গেজেট প্রকাশ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ১৯ মার্চ পর্যন্ত সংক্ষুব্ধরা এ বিষয়ে আবেদন করেছিল। সীমানাসংক্রান্ত প্রাপ্ত আবেদনের শুনানি শেষে জুনের মধ্যে সীমানা চূড়ান্ত করতে চায় বর্তমান কমিশন।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমানে যে তিনশটি আসন রয়েছে সেই আসনগুলোর সীমানার খসড়া প্রকাশ করেছিল। সেই গেজেটে বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছিল ১৯ মার্চের ভিতরে সে আপত্তিগুলো উপস্থাপন করতে। নির্দিষ্ট সময়ের ভিতরে ১৮৬টি আবেদন পেয়েছি। যার ভিতরে পক্ষে এবং বিপক্ষে রয়েছে। এই আপত্তিগুলো শুনানি করে নিষ্পত্তি করার জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সভাতে চারটি দিনে আপত্তিগুলো নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় কর্তৃক ২৬ ফেব্রুয়ারি জারিকৃত প্রজ্ঞাপন জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এলাকা ভিত্তিক নির্বাচনি এলাকাসমূহের পুনঃনির্ধারিত সীমানা সম্পর্কে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে যারা নির্বাচন কমিশনে লিখিত আপত্তি বা পরামর্শ দাখিল করেছেন, নির্বাচন কমিশন প্রকাশ্য শুনানির মাধ্যমে তাঁদের আপত্তি বা পরামর্শসমূহ নিষ্পত্তি করবেন।
প্রজ্ঞাপনে অনুযায়ী, শুনানিতে শুধুমাত্র গেজেটে বর্ণিত নীতিমালার ব্যত্যয় সংক্রান্ত আপত্তি/পরামর্শসমূহ বিবেচনা করা হবে। নতুনভাবে উত্থাপিত কোন আপত্তি/পরামর্শ গ্রহণ করা হবে না এবং ১৯ মার্চ তারিখের পর প্রাপ্ত আপত্তি/পরামর্শ বিবেচনা করা হয়।
আরো বলা হয়, আপত্তিকারী/পরামর্শকারী বা তাঁর ক্ষমতাপ্রাপ্ত কৌশুলি /আইনজীবি ছাড়া অন্য কেউ তাঁর পক্ষে শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে পারেনি।
বিবার্তা/সানজিদা/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]