বঙ্গভবন ছাড়লেন আব্দুল হামিদ
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৩, ১৪:১৩
বঙ্গভবন ছাড়লেন আব্দুল হামিদ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে বঙ্গভবনের অধ্যায় শেষ হলো মো. আবদুল হামিদের। সোমবার দুপুর একটার দিকে তার রাজসিক বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।


বিদায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই আবদুল হামিদকে বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল গ্রাউন্ডে ‘গার্ড অব অনার’ দেয়া হয়। পরে ফুলে সজ্জিত একটি খোলা জিপে ফোয়ারা এলাকা থেকে প্রধান ফটকের দিকে যাত্রা করেন রাষ্ট্রপতি। এ সময় তার গাড়ির সামনে ছিল পুলিশের বিশেষ অশ্বারোহী দল। বঙ্গভবনের কর্মকর্তারা গাড়ির সামনে রশি বেঁধে রাষ্ট্রপতির গাড়ি টেনে নিয়ে যান মূল ফটক পর্যন্ত। এসময় সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানান বঙ্গভবনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।


বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপতির বিদায়ের দিনে এমন সংবর্ধনাপূর্ণ বিদায় আয়োজন করা হয়েছে। এর আগে, কোনো রাষ্ট্রপতিকে নিজেদের আয়োজনে বিদায় জানানোর সুযোগ হয়নি বঙ্গভবনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের।


বঙ্গভবন ছেড়ে রাজধানীর নিকুঞ্জে নিজ বাসা ‘রাষ্ট্রপতি লজে’ উঠবেন আবদুল হামিদ। ইতোমধ্যে তার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া মাঝে মধ্যে তিনি মিঠামইনে পৈত্রিক ভিটায় গিয়েও সময় কাটাবেন বলে জানা গেছে। এর আগে সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘আপনার শুনেছেন, অনেক সময় বলেছি, আমি একটা বন্দিজীবনে আছি। এর থেকে মুক্তি পাচ্ছি। এখন একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে ফ্রিলি মুভ করতে পারব। এটাই আমার সবচেয়ে বড় আনন্দ।’


সোমবার বঙ্গভবন থেকে বিদায় নেয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আবদুল হামিদ। এ সময় স্বভাবসুলভ হাস্যরসে এসব কথা বলেন তিনি। বিদায়ী রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সারা জীবন মানুষের জন্য রাজনীতি করেছি। মানুষের বাইরে আমার কোনো চিন্তা ছিল না এবং কোনো দিন থাকবেও না। দলমত নির্বিশেষে সকল রাজনীতিবিদদের এ কথাই বলব, এ দেশের মাটি এবং মানুষকে ভালোবেসে যেন তারা রাজনীতি করে। তাহলে রাজনীতি আরও অনেক সুন্দর হবে।’


দায়িত্ব পালন নিয়ে নতুন রাষ্ট্রপতিকে কোনো বার্তা দেবেন কি না, এমন প্রশ্নে আবদুল হামিদ বলেন, ‘সাংবিধানিক দায়িত্ব তিনি সুন্দর এবং সুষ্ঠুভাবে পালন করবেন, এটা সারা জাতির প্রত্যাশা এবং আমারও প্রত্যাশা।’


আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমি স্পিকার ছিলাম। পার্লামেন্টেই স্বচ্ছন্দবোধ বেশি করতাম। ওখানে নিজেকে মুক্ত বলে মনে হতো। এখানে আসার ইচ্ছা ছিল না। আমি জানি এখানে এলে একটা বেড়াজালের ভেতরে পড়ে যাব। তারপরও এসেছি। তবুও মানুষের জন্য আমার ভালোবাসা কমেনি।’


রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে থাকছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অবসরে বাড়িতে লেখালেখি করব। তবে অ্যাক্টিভলি রাজনীতি করার আর পরিকল্পনা নেই। কারণ দেশের মানুষ আমাকে এত বড় ইজ্জত দিয়ে দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি করেছে। আমি যদি আবারও রাজনীতিতে যাই কিংবা অন্য কোনো পদে যাই, এটা করলেই আমি মনে করব, আমি দেশের মানুষকে হেয় করব। আমি সেটা করব না।’


কিশোরগঞ্জের সন্তান আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের মার্চ মাসে অস্থায়ী ও ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। এরপর ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ২১তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বঙ্গভবনে ১০ বছরেরও বেশি সময় কেটেছে আবদুল হামিদের। রবিবার (২৩ এপ্রিল) তার শেষ কর্মদিবস ছিল।


বিবার্তা/কেআর

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com