
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ রাত ৮ টায় তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে মা সায়েরা খাতুনের কোল আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন শেখ বংশের আদরের ‘খোকা’। সময়ের পরিক্রমায় সেই খোকাই একসময় হয়ে উঠেছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু’ এবং তারও পরে জাতির পিতা। শত বছর ধরে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা লালন করা বাঙালি জাতি এই মহান নেতার নেতৃত্বেই পেয়েছিল স্বাধীনতার স্বাদ। বিশ্বের বুকে জন্ম নিয়েছিল বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র।
অসীম সাহসিকতা আর ব্যক্তিত্বে জাতির পিতা নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন হিমালয়সম উচ্চতায়। আর তাই বিশ্বের মহান মনীষী ব্যক্তি ও গণমাধ্যম বাঙালির মুক্তির মহানায়ককে ব্যাখা করেছেন বহু বিশেষণে। কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলেছিলেন- 'আমি হিমালয় দেখিনি কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব এবং সাহসিকতায় তিনি হিমালয়'। ফিলিস্তিনি মুক্তিসংগ্রামের নেতা ইয়াসির আরাফাতের বর্ণনায় বঙ্গবন্ধু ছিলেন- 'আপসহীন সংগ্রামী নেতৃত্ব আর কুসুম কোমল হৃদয় ছিল মুজিব চরিত্রের বৈশিষ্ট্য'।
বিশ্বখ্যাত গণমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে লিখেছিল- 'মুজিব না থাকলে বাংলাদেশ কখনই জন্ম নিত না'। আর বিশ্বখ্যাত নিউজ ম্যাগাজিন নিউজ উইক জাতির পিতাকে ভূষিত করেছিল 'পয়েট অব পলিটিক্স' বা রাজনীতির কবি হিসেবে।
বাঙালির জাতির সর্বকালের সেরা এই মহানায়কের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী আজ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন- বাঙালির মুক্তির জন্য বহু কালে বহু মনীষী চেষ্টা করে গেছেন। কিন্তু কেউই বাঙালি জাতিকে কাঙ্খিত মুক্তির স্বাদ দিতে পারেননি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম হয়েছিল বলেই বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। আর মুক্তির স্বাদ পেয়েছে বাঙালি জাতি।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন কালজয়ী মহাপুরুষ: হানিফ
বাঙালি জাতি বহু আগে থেকে নির্যাতিত-নিপীড়িত। এই জাতির মুক্তির আকাঙ্খা দীর্ঘদিনের কিন্তু মুক্তি জাগানোর মতো কোনো মানুষ ছিল না। অনেক বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা মুক্তির জন্য লড়াই সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। বাঙালি জাতির সেই মুক্তির স্বপ্ন একসময় বিলীন হয়ে গিয়েছিল। অবশেষে সেই বিলীন হয়ে যাওয়া স্বপ্ন বাঙালি জাতিকে আবার নতুন করে দেখালেন টুঙ্গিপাড়ার নিভৃত পল্লীতে জন্মগ্রহণ করা শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শুধু স্বপ্নই দেখাননি, দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর আমাদের স্বাধীনতাও এনে দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ইতিহাসের মহানায়ক হওয়ার মতো যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ সব কালে, সব যুগে সৃষ্টি হয় না। যুগ-যুগান্তরের পরিক্রমায় হাতেগোনা এক-আধজনই শুধু ইতিহাসের মহানায়ক হয়ে উঠতে পারেন। ইতিহাস তার আপন তাগিদেই ‘মহানায়কের’ উদ্ভব ঘটায়, আর সেই মহানায়কই হয়ে ওঠেন ইতিহাস রচনার প্রধান কারিগর ও স্থপতি। বঙ্গবন্ধু ছিলেন তেমনই একজন কালজয়ী মহাপুরুষ।
হানিফ বলেন, বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, পৃথিবীর ইতিহাস যত দিন থাকবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একইভাবে প্রজ্জ্বলিত হবেন প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে, প্রতিটি মুক্তিকামী, শান্তিকামী, মানবতাবাদীর হৃদয়ে। বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন চিরকাল বাঙালি জাতিকে অনুপ্রাণিত করবে- পথ দেখাবে। বাঙালি জাতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসায় বাংলাদেশের ইতিহাস বিনির্মাণের কালজয়ী এ মহাপুরুষকে চিরকাল স্মরণ করবে।
মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা স্বাধীনতা পেতাম না: আফজাল হোসেন
বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা স্বাধীনতা পেতাম না, বাঙালি জাতির পরিচয় হতো না। বিশ্বের দরবারে আমরা মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে পারতাম না। যতদিন দিন যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর কর্ম, জীবনাদর্শ মানুষের কাছে নতুনভাবে উদ্ভাসিত হচ্ছে। আজকের এই দিনে প্রত্যাশা এটাই, বঙ্গবন্ধু ন্যায়নিষ্ঠ ও ত্যাগী ছিলেন। আমাদের উচিত সেগুলো অনুসরণ করা।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলার গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। আজ বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে আমাদের মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই ঐক্যকে ধরে রেখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ যাত্রাকে আমাদের অক্ষুন্ন রাখতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধী, একাত্তরের পরাজিত শক্তি, পঁচাত্তরের অপশক্তির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন
সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
বঙ্গবন্ধু সারা জীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন: নিখিল
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পৃথিবীর বুকে এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। তিনি সারা জীবন মানুষের কল্যাণে, দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে গেছেন।
যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে, তারা কখনো জাতির অকল্যাণে কাজ করতে পারে না। সর্বদা মানুষের সেবা, দেশের কল্যাণে কাজ করা। আর আমরা যদি সেটা করতে পারি তাহলে আমি বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সুখী ও সমৃদ্ধশালী হওয়ার পথে আমরা আরো দ্রুত এগিয়ে যাব।
মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল
সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী যুবলীগ।
বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির জন্য আশীর্বাদ: আফজালুর রহমান বাবু
বঙ্গবন্ধু এই দেশের জন্য, জাতির জন্য আশীর্বাদ। বাঙালির মুক্তির জন্য মাস্টার দা সূর্যসেন, তিতুমীর, হাজী শরিয়তুল্লাসহ অসংখ্য মানুষ চেষ্টা করেছিলেন। তিতুমীর বাঁশেরকেল্লা করে মানুষ নিয়ে আন্দোলন করার চেষ্টা করেছেন। মাস্টার দা সূর্যসেন বলেছিলেন তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদেরকে স্বাধীনতা দিব, কিন্তু মুক্তি আসেনি।
তিনি বলেন, টুঙ্গীপাড়ার বাঘিয়া নদীর তীরে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্ম হয়েছিল বলে বাঙালি জাতির মুক্তি এসেছিল। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাঙালি জাতি কখনোই মুক্ত হতে পারত না। তিনি আমাদের মুক্তির স্বাদ দিয়েছেন। স্বকীয় জাতিসত্তা, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত আত্মপরিচয় দিয়েছেন এবং আজ বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।
একেএম আফজালুর রহমান বাবু
সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
বিবার্তা/সোহেল/রোমেল/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]