শিরোনাম
‘কোন কিছু পাওয়া বা হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কখনও রাজনীতি করিনি’
প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১:২৭
‘কোন কিছু পাওয়া বা হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কখনও রাজনীতি করিনি’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রবীণ রাজনীতিবিদদের নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে এসবের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।


তিনি বলেন, "আমাদের নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে হলে তাদেরকে এসবের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। আর এ দায়িত্বটা আমাদের সকলের। তাই আমি প্রবীণ রাজনীতিবিদদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।"


বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতি তার নিজের প্রণীত 'আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি' ও 'স্বপ্ন জয়ের ইচ্ছা' বই দুটির প্রকাশনা উৎসবের বক্তব্যে এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজন করা হয়।


অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিশেষ অতিথি হিসেবে স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বক্তব্য রাখেন।


তিনি বলেন, স্বাধীনতা বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় অর্জন। আমাদের মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।


দুইবারের রাষ্ট্রপতি নিজেকে হাওড় অঞ্চলের দুর্গম এলাকায় জন্ম নেওয়া ও হাওড়ের কাদাজলে বেড়ে ওঠা একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, কোন কিছু পাওয়া বা হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কখনও রাজনীতি করেননি। স্কুল জীবন থেকে তার রাজনীতি শুরু।


"তখনও বঙ্গবন্ধুকে দেখিনি। কিন্তু সেই মহামানবের ভরাট কন্ঠের উদাত্ত আহ্বান সবসময়ই আমাকে স্বাধিকার আন্দোলনের চেতনায় উদ্ভাসিত করতো। ১৯৬৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সাথে প্রথম সাক্ষাত। আর সেই থেকেই শুরু হয় সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে পথচলা।"


তিনি আরও বলেন, "বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ও আদর্শই হয়ে ওঠে আমার পাথেয়। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৮’র সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ছাত্রলীগের ১১ দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০’র সাধারণ নির্বাচন ও ৭১’র মুক্তিযুদ্ধসহ সবকিছুতেই আদর্শ ও অনুপ্রেরণার উৎস একজনই। আর তিনি হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।"


জীবনে চড়াই ‍উৎরাই, উত্থান পতন চরম পরীক্ষার মুখোমুখিসহ সবকিছু মোকাবিলা করতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও অনুপ্রেরণাই শক্তি যুগিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন এই বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ।



আবদুল হামিদ বলেন, "আমি নিজেকে বঙ্গবন্ধুর একজন কর্মী ভাবতেই বেশি পছন্দ করি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ও আদর্শকে সমুন্নত রাখতে পারি এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে বেঁচে থাকতে পারি।"


নিজের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি’ এবং রাষ্ট্রপতি হিসাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভাষণসমূহের সংকলন ‘স্বপ্ন জয়ের ইচ্ছা’ শীর্ষক বই দু’টির প্রকাশনা উৎসবে উপস্থিতি, গ্রন্থ দুটির সম্পাদনা ও প্রকাশনার সাথে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত সবাইকে ধন্যবাদও জানান।


আমাদের প্রাণের মেলা একুশের বইমেলা। এবছর একুশের বইমেলা উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেছেন।


'বঙ্গবন্ধুই রাজনৈতিক গুরু, তাঁর কাছেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি' উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমার রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার অভিপ্রায়েই মূলত এই আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থটি লেখা শুরু করি। লেখা শুরু করার অনুপ্রেরণা জোগানোর জন্য আমি আমার সহধর্মিণীকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। এ বিষয়ে মরহুম মাঈন উদ্দিন খন্দকারও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন।


বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দিতে যারা বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য পেয়েছেন সকলেরই আত্মজীবনী লেখার আহবান জানিয়ে হামিদ বলেন, তাহলেনবঙ্গবন্ধুর অনেক অজানা গুণাবলি জানতে পারবে


এছাড়া ‘স্বপ্নজয়ের ইচ্ছা’ শীর্ষক গ্রন্থের প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড মূলত ২০১৩-২০১৮ সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভাষণের সংকলন। বঙ্গভবনের প্রেস উইং বইটি সংকলন ও সম্পাদনা করেছে।


স্বাগত বক্তব্য শেষে বই দুটির উপর আলোচনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও রাষ্ট্রপতির দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী তোফায়েল আহমেদ। বিশেষ অতিথিদের বক্তব্য শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ফার্স্ট লেডি রাশিদা খানম।


একাদশ জাতীয় সংসদের ২০২৩ সালের প্রথম অধিবেশনের সমাপ্তি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রীবর্গ, সংসদ সদস্যবৃন্দের সম্মানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।


দীর্ঘ একমাসের বেশি সময় ধরে জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় দেশ ও জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আপনাদের সুচিন্তিত মতামত প্রদান করেন সংসদ সদস্যরা। এজন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্পীকারসহ সকলকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদও জানান।


জনগণের কল্যাণে আপনারা আরো বেশি আন্তরিকতা ও দরদ দিয়ে নিজ নিজ এলাকায় উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রাখার জন্য বলেন তিনি।


বিবার্তা/সানজিদা/বিএম

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com