
জন্মের সময়ে একটি শিশুর যা ওজন থাকে, তার তুলনায় তিন গুণ ওজন বৃদ্ধি হওয়া উচিত প্রথম বছরে। শিশু কী খাচ্ছে, তার উপর নির্ভর করবে এই ওজন।
ফর্মুলা দুধের তুলনায় মাতৃদুগ্ধ একটি শিশুর পক্ষে অনেক বেশি উপকারী। মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে মায়ের শরীর থেকে অ্যান্টিবডি শিশুর শরীরে যায়। ফর্মুলায় সেটা থাকবে না।
তাই রোগ-ব্যাধি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তবে কর্মরত মহিলাদের ক্ষেত্রে শিশুকে সারা দিন স্তন্যপান করানো সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে ব্রেস্ট-পাম্পের সাহায্যে দুধ মজুত করে রাখেন অনেকেই।
বাড়ির বাইরে মা থাকবেন যে সময়টা, তখন ওই দুধ খাওয়ানো যাবে শিশুকে। দোকানে, মলে বা অনলাইনে নানা সংস্থার ব্রেস্ট-পাম্প পাওয়া যায়। দাম এক হাজার থেকে আট হাজারের মধ্যে।
তবে এই ব্রেস্ট-পাম্প নিয়ে অনেকেই অনেক রকম ভুল ধারণা মাথায় রাখেন। প্রয়োজন সত্ত্বেও অনেক মহিলাই ব্রেস্ট-পাম্প ব্যবহার করতে ভয় পান।
১) ব্রেস্ট-পাম্প ব্যবহার করা যন্ত্রণাদায়ক: অনেকের ধারণা ব্রেস্ট-পাম্প ব্যবহার করলে স্তনের পেশিতন্তুগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, শুধু তা-ই নয়, এই মেশিন ব্যবহার করাও বেশ যন্ত্রণাদায়ক বলে মনে করেন তাঁরা। এই ধারণা কিন্তু ঠিক নয়। সঠিক পদ্ধতি জেনে ব্যবহার করলে কিন্তু ব্রেস্ট-পাম্প ব্যবহারে ব্যথা হয় না। ইদানীং বাজারে যে ব্রেস্ট-পাম্পগুলি পাওয়া যায়, সেগুলিতে ‘অ্যাডজেস্টেব্ল সাকশন লেভেল’ থাকে। অর্থাৎ, মহিলারা তাঁদের প্রয়োজন ও আরামের উপর নির্ভর করে ব্রেস্ট-পাম্পের ‘সাকশন লেভেল’ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তবে যন্ত্রটির ফ্লেজের আকার কিংবা ‘সাকশন সেটিং’ ঠিক না হলে কিন্তু দুধ জমা করার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে মায়েদের।
২) ব্রেস্ট-পাম্প স্তনদুগ্ধের পরিমাণ কমিয়ে দেয়: ব্রেস্ট-পাম্প নিয়ে অনেকেই মনে করেন এর ব্যবহারে মায়ের শরীরে স্তন্যের উৎপাদন কমে যায়। এমনটা কিন্তু নয়। নিয়ম করে ব্রেস্ট-পাম্প ব্যবহার করলে স্তন্যের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকে, কোনও কোনও মায়ের আবার স্তন্যের পরিমাণ বেড়ে যেতেও দেখা যায়।
৩) কর্মরত মহিলারাই কেবল ব্রেস্ট-পাম্প ব্যবহার করেন: কর্মরত মহিলাদের ক্ষেত্রে ব্রেস্ট-পাম্প সত্যিই কাজের, সে বিষয় কোনও সন্দেহ নেই। তবে নিয়ম করে বাইরে যেতে না হলেও মহিলারা কিন্তু এই যন্ত্রের ব্যবহার করতে পারেন। যখন শিশুরা মায়ের স্তন থেকে সরাসরি দুধ খেতে পারে না, যখন মায়েদের শরীরে স্তন্যের মাত্রা অত্যধিক হারে বেড়ে যায় কিংবা যে মায়েরা স্তনদুগ্ধের মাত্রা বৃদ্ধি করতে চান— তাঁরাও কিন্তু এই যন্ত্রের ব্যবহার করতে পারেন। এই পদ্ধতিতে দুধ মজুত রাখলে বাড়ির অন্য সদস্যরা খুব সহজেই শিশুকে দুধ খাওয়াতে পারেন, সে ক্ষেত্রে মহিলারা খানিকটা বিশ্রাম নেওয়ারও সুযোগ পান।
৪) সব ব্রেস্ট-পাম্পই এক রকম: না, সব ব্রেস্ট-পাম্প কিন্তু মোটেই এক রকম হয় না। বাজারে বিভিন্ন নকশার ব্রেস্ট-পাম্প পাওয়া যায়, তাদের কার্যকারিতাও অনেক সময়ে আলাদা হয়। কিছু ব্রেস্ট-পাম্প কেবল মাঝেমধ্যে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়, কিছু আবার নিয়মিত ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে নকশা করা হয়। কোনও ব্রেস্ট-পাম্প হাত দিয়ে ব্যবহার করতে হয়, কোনওটি আবার হয় বিদ্যুৎচালিত। প্রয়োজন বুঝে মায়েরা ব্রেস্ট-পাম্প কিনতে পারেন।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]