এডিস মশা থেকে শিশুকে রক্ষা করতে করণীয়
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৩
এডিস মশা থেকে শিশুকে রক্ষা করতে করণীয়
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রতিদিনই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ডেঙ্গুর রোগী, যার একটি বড় অংশ শিশু। আক্রান্ত শিশুদের জটিলতা হওয়ার ঝুঁকি যেমন বেশি, তেমনি মৃত্যুহারও নেহাত কম নয়।


নির্দিষ্ট করে ডেঙ্গুর কোনো চিকিৎসা নেই, প্রায় পুরোটাই উপসর্গ বা জটিলতা কমানোর চিকিৎসা। তাই চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ বেশি গুরুত্বপূর্ণ।


মশার হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করাই হবে সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ।


ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণু বহন করে এডিস নামের মশা। এই এডিস মশা যেন কামড়াতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায়। সেই সঙ্গে ধ্বংস করতে হবে এডিস মশার আবাসস্থল।


এডিস মশা সাধারণত জমে থাকা আবদ্ধ পানিতে বংশবিস্তার করে। বাড়ির কাছাকাছি কোথাও এডিস মশার বংশবিস্তারের উপযোগী পানি জমে থাকলে তা অপসারণ করতে হবে। এসি, ফুলের টব, ফ্রিজের নিচসহ বাসায় যেসব স্থানে পানি জমে থাকতে পারে, সেগুলো থেকে নিয়মিত পানি সরিয়ে ফেলতে হবে।


পানি জমে থাকতে পারে—এমন জিনিস, যেমন বালতি, খালি বোতল, মগ, পাতিল, এগুলো উল্টে রাখার চেষ্টা করতে হবে।


বাড়ির আশপাশ ও বারান্দা–করিডর পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, প্রয়োজনে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো যেতে পারে।


এ ছাড়া পরিত্যাক্ত টায়ার, ডাব বা নারকেলের খোলা, বাড়ির আশপাশে থাকা পরিত্যক্ত জিনিস, যেসবে পানি জমে এডিস মশা জন্মাতে পারে, সেগুলো কমপক্ষে তিন দিন পরপর পরিষ্কার করার চেষ্টা করতে হবে।


মশার কামড় থেকে বাঁচাতে



ঘুমানোর সময় শিশুর বিছানায় মশারি ব্যবহার করতে হবে। শুধু রাতের বেলা নয়, দিনের বেলায়ও। বিশেষ করে নবজাতককে প্রায় সার্বক্ষণিক মশারির ভেতরে রাখার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া হাসপাতালে কোনো শিশু যদি অন্য রোগের চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়, তাকেও মশারির ভেতরে রাখা উচিত। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কাউকে এডিস মশা কামড়ে পরে কোনো শিশুকে কামড়ালে তার শরীরেও ডেঙ্গুর ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। বাড়িতে কারও ডেঙ্গু হলে তাকে আলাদা ঘরে মশারির ভেতর রাখা দরকার।


শিশু ঘরের বাইরে খেলতে গেলে বা বেড়াতে যাওয়ার সময় তাদের যথাসম্ভব গা ঢাকা পোশাক পরাতে হবে। এ ক্ষেত্রে ফুলহাতা শার্ট ও টি-শার্ট, ফুলপ্যান্ট, লম্বা ঝুলের ফ্রক, মোজা ও জুতা পরাতে হবে। সাদা বা হালকা রঙের পোশাক পরালে ভালো।


অনাবৃত স্থানে শিশুর বয়স ও ত্বকের উপযোগী (মশা ও অন্যান্য পোকামাকড় প্রতিরোধক) ক্রিম বা স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। কয়েক ঘণ্টা পরপর এই রেপেলেন্ট প্রয়োগ করতে হবে। শিশু যদি বেশি ছোট হয় বা তাদের শরীরে ক্রিম বা স্প্রে ব্যবহার করা না যায়, তাহলে তাদের হাতে মসকুইটো রেপেলেন্ট বেল্ট বা পোশাকে প্যাচ ব্যবহার করা যেতে পারে।


মশা প্রতিরোধে বাজারে প্রচলিত অ্যারোসল বা মশার কয়েলের ধোঁয়া ছোট–বড় সবার ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এর বদলে মসকুইটো কিলার বাল্ব, ইলেকট্রিক কিলার ল্যাম্প, ইলেকট্রিক কয়েল, মসকুইটো কিলার ব্যাট, মসকুইটো কিলার ট্র্যাপ ইত্যাদির সাহায্যে মশা ঠেকানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে মশা নিরোধক সামগ্রী যেন শিশুর নাগালের বাইরে থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।



ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবচেয়ে যেটা জরুরি, তা হলো সামাজিক সচেতনতা। শুধু নিজের বাড়ির আশপাশে আবদ্ধ পানি অপসারণ করলেই হবে না; বরং প্রতিবেশীর বাসার আশপাশেও যেন জলাবদ্ধতা না থাকে, সে বিষয়ে পাড়ামহল্লার সবাইকে সচেতন হতে হবে। স্কুলগুলোতেও এ নিয়ে সচেতনতা কার্যক্রম চালানো উচিত। অনেক শিশু স্কুল বা কোচিং থেকেই মশার কামড় খেয়ে আসে, তাই এসব জায়গাকেও মশামুক্ত করার পদক্ষেপ নিতে হবে।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com