ইরানের হামলার শঙ্কা, ইসরায়েলি সৈন্যদের ছুটি বাতিল
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৩৩
ইরানের হামলার শঙ্কা, ইসরায়েলি সৈন্যদের ছুটি বাতিল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে কনস্যুলেট ভবনে হামলা চালিয়ে ইরানি কয়েকজন জেনারেলকে হত্যার ঘটনায় তেহরান প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দেয়ার পর ইসরায়েলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নতুন করে সহিংসতার আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার সামরিক বাহিনীর সব কমব্যাট ইউনিটের ছুটি বাতিল করেছে ইসরায়েল।


এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ‌‌পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) সব কমব্যাট ইউনিটের ছুটি সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে গাজা যুদ্ধের উত্তেজনা পুরো অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।


এতে বলা হয়েছে, বর্তমানে আইডিএফ যুদ্ধে রয়েছে এবং প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ক্রমাগত মূল্যায়নের মাধ্যমে সৈন্য মোতায়েন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


এর আগে, বুধবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদার করার জন্য রিজার্ভ সৈন্যদের খসড়া তালিকা তৈরি করেছে আইডিএফ।


বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিনিধি ও তেল আবিবের বাসিন্দারা বলেছেন, সেখানে জিপিএস পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে রক্ষা করার জন্য এই জিপিএস ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়।


গত সোমবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের একটি কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলায় পাঁচ সামরিক উপদেষ্টা ও দুই জেনারেল নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান। ওই হামলা ইসরায়েল চালিয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।


তবে এই হামলা ইসরায়েল চালিয়েছে দাবি করে প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দিয়েছে ইরান। যদিও ইসরায়েল এই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনায় ওই অঞ্চলে নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।


গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ঢুকে এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা ও ২৫৩ জনকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রাখে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। ওই হামলার পর সেদিনই গাজায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ছয় মাস ধরে চলা যুদ্ধে ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে।


গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে আসছে ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। এই দুই গোষ্ঠী ছাড়াও ওই অঞ্চলের ইরান-সমর্থিত অন্যান্য মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোও ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করছে।


এই যুদ্ধে ইসরায়েল এবং মার্কিন স্বার্থে মিত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর হামলায় সমর্থন জানালেও সরাসরি যুদ্ধে জড়ানো এড়িয়ে গেছে ইরান। ইসরায়েলি সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আমোস ইয়াদলিন বলেন, মুসলিমদের পবিত্র মাস রমজানের শেষ এবং ইরানি কুদস (জেরুজালেম) দিবসের দিন অর্থাৎ আগামী শুক্রবারকে বেছে নিতে পারে ইরান। ওই দিন সরাসরি বা প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে দামেস্কে হামলার প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে তেহরান।


ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বরাত দিয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুলের বেলফার সেন্টারের জ্যেষ্ঠ ফেলো ইয়াদলিন বলেন, ‘‘ইরান আগামীকাল হামলা চালালে আমি অবাক হব না। আতঙ্কিত হবেন না। আশ্রয়কেন্দ্রে দৌড়াবেন না। আগামীকালের জন্য প্রস্তুত হোন। তারপর হামলার পরিণতির ওপর এটি বাড়বে কি না তা নির্ভর করবে।


সূত্র: রয়টার্স


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com