পূর্ব জেরুজালেমসহ অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ড ও অধিকৃত সিরিয়ার গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলের বসতি কার্যক্রমের নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। এই নিন্দা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ইসরায়েলিদের বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত দেশ ভারতসহ ১৪৫ দেশ।
গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকে জাতিসংঘে তেলআবিবের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি নিন্দা প্রস্তাবে ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিলো নয়াদিল্লি। প্রথমবার ইসরায়েলের বিপক্ষে উত্থাপিত কোন প্রস্তাবে ভোট দিলো দেশটি। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ সাতটি দেশ এই প্রস্তাবের বিরাধিতা করেছে। আর ভোটদান থেকে বিরত ছিল ১৮টি দেশ।
বৃহস্পতিবারের (৯ নভেম্বর) উত্থাপিত প্রস্তাবে অধিকৃত সিরিয়ার গোলান মালভূমিতেও ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের নিন্দা জানানো হয়।
ফিলিস্তিন ভূখণ্ড ও সিরিয়ার গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলিদের বসতি স্থাপনের বিষয়ে নিন্দা জানালেও আরেকটি প্রস্তাবে ভোট দান থেকে বিরত ছিল ভারত।
এনডিটিভি বলছে, সপ্তাহখানেক আগে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলা লড়াইয়ে ‘অবিলম্বে, টেকসই ও মানবিক যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব তুলেছিল জাতিসংঘ। এ প্রস্তাবে ভারত ভোট দেয়নি।
যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাবে ভোট না দেওয়ার ব্যাপারে নিজেদের সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করেছে ভারত সরকার। একটি সূত্র বলেছে, ভারত সরকার গাজায় মানবিক সঙ্কট নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে ভারত এটিও বিশ্বাস করে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কোনো ক্ষোভ থাকতে পারে না।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের রেজুলেশনের গত ৭ অক্টোবরের হামলার ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো নিন্দা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এক সূত্রের মারফতে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মূল প্রস্তাবে ভোটের আগে এই দিকটি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি সংশোধনী আনা হয়েছিল।
ভারত ওই সংশোধনীর পক্ষে ভোট দেয়। সংশোধনী প্রস্তাবের পক্ষে ৮৮ ভোটও পড়ে। তবে, প্রস্তাব পাসের জন্য প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া যায়নি।
ভারত সরকারের ওই সূত্রটি বলেছে, চূড়ান্ত রেজোলিউশনে আমাদের উত্থাপিত সব উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বলে আমরা ভোট দান থেকে বিরত ছিলাম।
সরকারি সূত্রগুলো পিটিআইকে জানিয়েছে, জাতিসংঘের রেজোলিউশনের বিষয়ে নয়াদিল্লির সিদ্ধান্তটি ‘অটল ও ধারাবাহিক’ অবস্থানে ছিল।
জাতিসংঘের ভোট প্রস্তাবের ব্যাপারে ভারতের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি ইওজনা প্যাটেল বলেন, জিম্মিদের ব্যাপারে আমাদের চিন্তা রয়েছে। আমরা তাদের অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, এই মানবিক সংকট মোকাবিলা করা দরকার। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টাকে ও গাজার জনগণের কাছে মানবিক সহায়তা প্রদানকে স্বাগত জানাই। ভারতও এই প্রচেষ্টায় অবদান রেখেছে।
ইওজনা আরও বলেন, ভারত সবসময় ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যায় আলাপ-আলোচনা ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন করেছে। এটি ইসরায়েলের সাথে শান্তিতে পাশাপাশি নিরাপদ ও স্বীকৃত সীমানার মধ্যে বসবাসকারী ফিলিস্তিনের সার্বভৌম, স্বাধীন এবং কার্যকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে পরিচালিত করে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]