পাকিস্তানের চেয়েও ভালো বাংলাদেশের সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ সূচক
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:২৬
পাকিস্তানের চেয়েও ভালো বাংলাদেশের সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ সূচক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

পাকিস্তানের চেয়েও ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশের সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ সূচক। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশ তাদের পূর্বসূরির তুলনায় এক্ষেত্রে ভালো পারফর্ম করছে।


ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ (ইউএইচসি) হলো একটি বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য অগ্রাধিকার এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) প্রধান লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি।


পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন সাম্প্রতিক একটি নিবন্ধে ইসলামাবাদের শিফা তামির-ই-মিল্লাত ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জাফর মির্জা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য কভারেজ বিষয়ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেষ্টা পাকিস্তানে স্বাস্থ্যসেবার অবস্থা সম্পর্কে কিছু চমকপ্রদ প্রকাশ করেছেন।


তারা জানিয়েছেন, নবজাতক মৃত্যুর হার পাকিস্তান বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। অর্থাৎ প্রতি এক হাজার জীবিত নবজাতকে প্রথম ২৮ দিনের মধ্যে অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু হয়।


এই পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। গত দুই দশকে বাংলাদেশে ৫ বছরের কম বয়সি শিশুমৃত্যুর হার ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে প্রতি হাজারে বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর হার ৩০ জন।


পাকিস্তানে ১৫-৪৯ বছর বয়সা নারীদের প্রায় ৪২ শতাংশ (প্রজনন বয়সের নারী) মাঝারি আয়রনের ঘাটতিতে ভুগছেন। এছাড়া তাদের রক্ত স্বল্পতা থাকে। যা শিশুদের কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া ও জন্মের পর মৃত্যুঝুঁকির অন্যতম একটি কারণ।


এদিকে, বাংলাদেশে ২০০৭ সাল থেকে সরকারের মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কিম দরিদ্র নারীদের আর্থিক পরিষেবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এতে মাতৃস্বাস্থ্য পরিষেবা ও ব্যবহার উন্নত হয়েছে। এর মাধ্যমে যোগ্য নারীদের একটি প্রণোদনা দেওয়া হয় যা গর্ভধারণ ও সন্তান প্রসবের পর বিভিন্ন জরুরি স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে।


মাতৃমৃত্যুর হার কমানোর জন্য অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। সেগুলো হলো- স্বাস্থ্য সুবিধার উন্নত অ্যাক্সেস এবং ব্যবহার, নারী শিক্ষার উন্নতি এবং মাথাপিছু আয়। বাংলাদেশে ৬-৫৯ মাস বয়সি শিশুরা প্রতি ছয় মাসে একবার করে ভিটামিন এ ক্যাপসুল গ্রহণ করে।


যদিও পাকিস্তান বিশ্বের দুটি দেশের মধ্যে একটি, যেখানে বিলিয়ন ডলার ব্যয় করার পরও পোলিওমাইলাইটিস (পোলিও) ছড়িয়ে আছে। এদিকে প্রায় এক দশক আগে ২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক সার্টিফিকেশন কমিটি বাংলাদেশকে পোলিওমুক্ত দেশ ঘোষণা করেছিল।


অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। প্রফেসর মির্জা যেমন উল্লেখ করেছেন, পাকিস্তানে আনুমানিক ১০ মিলিয়ন লোক হেপাটাইটিস সিতে বসবাস করছে। এতে আক্রান্ত সবচেয়ে বেশি রোগী পাকিস্তানে। এক্ষেত্রে তারা চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে।


এদিকে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মা সোফোভির সি ব্র্যান্ড নামে হেপাটাইটিস সি-এর চিকিৎসার জন্য বিস্ময়কর ওষুধ সোফসবুভির-এর জেনেরিক সংস্করণ চালু করেছে।


উন্নত বাজারে ওষুধটির দাম প্রতি ট্যাবলেট প্রায় ১ লাখ টাকা (এক হাজার ডলার)। সেখানে বাংলাদেশে একটি ট্যাবলেটের দাম ৬০০ টাকা। উন্নত দেশগুলোতে এর পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসায় ব্যয় হয় ৬৭ লাখ টাকা। সেখানে ১২ সপ্তাহের বাংলাদেশে এই চিকিৎসা করা যায় ৫০ হাজার ৪০০ টাকায়।


২০১৯ সালে বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল এবং থাইল্যান্ড হেপাটাইটিস বি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রথম দেশ হয়ে উঠেছে, যেখানে পাঁচ বছর বয়সি শিশুদের মধ্যে মারাত্মক রোগের প্রকোপ এক শতাংশেরও কম।


গত এক দশকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি বাংলাদেশকে শিশুদের বেঁচে থাকার জন্য এমডিজি-৪ এর ট্র্যাকে নিয়ে এসেছে এবং মাতৃমৃত্যুর হার ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।


বিবার্তা/জেএইচ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com