গরু পাচার করার অভিযোগে ২৪ জনকে একসঙ্গে বেঁধে, রাস্তায় হাঁটু মুড়ে, কান ধরে বসিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে একদল গোরক্ষকদের বিরুদ্ধে।
ভারতের মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়া জেলার সাভালিকেড়া গ্রামে রবিবার এ ঘটনা ঘটে।
মোবাইলে পুরো ঘটনার ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়তেই শুরু হয় নিন্দার ঝড়। ভিডিওতে দেখা গেছে, দলের ১৫ জনের হাত দড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় রাস্তা দিয়ে হাঁটু মুড়ে বসিয়ে ওই অবস্থাতেই চলতে বাধ্য করা হয়। তখনও তাদের মুখে তখন শোনা যাচ্ছে ‘গো মাতা কি জয়’ ধ্বনি!
ভিডিওটিতে আরো দেখা গেছে, সাদা শার্টের একজন মানুষ মোবাইলে সবার মুখের ক্লোজআপ ছবি বা ভিডিও নিচ্ছে। যাতে বোঝায় যায়, সবাই গো মাতা কি জয় বলছেন কিনা। বাকি দু’জন কড়া নজর রাখছেন হাত-বাঁধা পুরুষদের ওপর।
আক্রান্তরা খান্ডোয়া, সেহোর, দেওয়াস ও হরদা জেলার বাসিন্দা। ২৪ জনের মধ্যে ছয়জন মুসলিম ছিলেন।
তাদের দাবি, মহারাষ্ট্রে পশু মেলায় গরু নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। সাভালিকেড়া গ্রামে পৌঁছতেই এক দল গোরক্ষক তাদের ঘিরে ধরেন। তারা সংখ্যায় প্রায় ১০০ জনের মতো ছিল। গরু চুরির অভিযোগ তুলে বেধড়ক মারধর করা শুরু করেন গোরক্ষকরা। তারপর দড়ি দিয়ে বেঁধে তিন কিলোমিটার তাদের হাঁটিয়ে খালোয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। হামলাকারীরা তাদের জোর করে ‘গো মাতা কি জয়’ বলতে বাধ্য করেন।
জেলা পুলিশ সুপার শিবদয়াল সিং জানিয়েছেন, আক্রান্তরা মেলায় গরু নিয়ে যাওয়ার দাবি করলেও তেমন কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। তাদের কাছে কোনো বৈধ নথি ছিল না এবং যে গাড়িতে করে গরুগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সেটারও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রদেশ গোবংশ বধ প্রতিষেধ অধিনিয়ম-এ আক্রান্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রেফতারও করা হয়েছে তাদের।
এই ঘটনায় হামলাকারীদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তারা জানিয়েছে, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এই মধ্যপ্রদেশেই মে মাসে গোমাংস নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে গাছে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল গোরক্ষকদের বিরুদ্ধে। বার বার একই ঘটনা ঘটছে, তারপরেও দোষীরা ছাড় কী ভাবে ছাড় পেয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য প্রশাসন।
ইতোমধ্যেই সেখানে গো-সংরক্ষণের জন্য একটি বিল চালু করার কথা চলছে। বিলটি পাস হলে গরু পাচারকারীর ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল এবং ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। তবে গরু সুরক্ষাকারীদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তির বিধান নেই। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা ও এনডিটিভি
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]