শিরোনাম
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু
প্রকাশ : ২৩ মে ২০১৯, ০৯:১১
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের চতুর্দশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৭ নম্বর লোককল্যাণ মার্গের ঠিকানাতেই কি থাকবেন নরেন্দ্র মোদি? না কি পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অন্য কেউ দখল নেবেন নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের?


বুথফেরত সমীক্ষার সম্ভাবনাকে পিছনে ফেলে বৃহস্পতিবার সরাসরি এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার দিন। বিশ্বের বৃহত্তম নির্বাচনের ভোট গণনা সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে।


ভারতজুড়ে ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত মোট সাতটি ধাপে ভোট গ্রহণ হয়েছে। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য কমপক্ষে ২৭২টি আসন প্রয়োজন।


সারা দেশে মোট ভোটার প্রায় ৯০ কোটি। ১,৮৪১টি রাজনৈতিক দলের ৮০০০-এরও বেশি প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। নির্বাচনে নারী প্রার্থীর সংখ্যা ৭২০ এবং তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীর সংখ্যা চারজন। ১৯৫১-৫২ সালে ভারতের প্রথম লোকসভা নির্বাচন সম্পন্ন হতে সময় লাগে তিন মাস।


নির্বাচন শেষের সন্ধ্যাতেই অবশ্য সামনে এসেছে বিভিন্ন সংস্থার বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফল। সেই ফলাফলের হিসেবে বাকি সবার থেকে বেশ কয়েক যোজন এগিয়ে শাসক এনডিএ জোটই। দেশ জুড়ে ভাল ফল করতে চলেছে বিজেপি, এমনটাই অভিমত পাওয়া গেছে বেশির ভাগ বুথফেরত সমীক্ষাতেই।


বুথফেরত সমীক্ষার এই মেজাজই দেখা যাচ্ছে এনডিএ নেতানেত্রীদের মধ্যে। শরিকদের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে জোটবদ্ধ থাকার একটা প্রচেষ্টা দেখা গেছে মঙ্গলবারের এনডিএ বৈঠকেই।


সূত্রের খবর, সেখানেই মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের সঙ্গে একটা ছোট বৈঠকও করে ফেলেছেন মোদি। পাশাপাশি একটি বৈঠক সেরেছেন বিদায়ী সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আমলাদের সঙ্গেও। কোন পথে যাবে তার নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার, আগের এনডিএ সরকারের থেকে কতটা আলাদা হবে তার সরকারের নীতি, সেই নকশাও নাকি তৈরি করে ফেলেছেন মোদি-শাহ জুটি।


নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থন পাওয়ার জন্য দেশের জনতাকে আগাম অভিনন্দন জানিয়ে দিয়েছেন বিদায়ী সরকারের বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও।


বুথফেরত সমীক্ষার ফল সামনে আসার পর শাসক দলের মধ্যে আবেগে ভাসার প্রবণতা দেখা দিলেও কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা করতে বিরোধীদের মধ্যে তৎপরতার কোনো অভাব নেই। ভোট শেষ হওয়ার পরই ইভিএম কারচুপির প্রসঙ্গ তুলে নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ তৈরি করে স্ট্রং রুম পাহারা দেয়ার ডাক দিয়ে তারা দলীয় কর্মী-সমর্থকদের হতাশা ঢাকার চেষ্টা করছেন।
অন্য দিকে, ফলাফল সামনে আসার পর বিরোধীদের কী কৌশল নেয়া হবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে একের পর এক ম্যারাথন বৈঠক। ভোটের পরই সামনে আসবে মহাজোটের চরিত্র, যার মেরুদণ্ড হবে বিজেপি বিরোধিতা- এই কথা বার বার বলেছেন মমতা ব্যানার্জি, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, চন্দ্রবাবু নায়ডু, অখিলেশ যাদব, ফারুক আবদুল্লারা।


সেই ভোট পরবর্তী জোটের ছবিই যেন স্পষ্ট হল গত তিনদিনে চন্দ্রবাবু নায়ডুর গতিবিধিতে।


ভোটের আগেই ভোট পরবর্তী জোট সমীকরণ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিয়েছিলেন চন্দ্রবাবু। তা যেন আরো তীব্রতা পেল ১৯ মে শেষ দফার ভোটের পরই। সুদূর দক্ষিণ থেকে কখনও কলকাতা, কখনও নয়াদিল্লি, কখনও লখনউ, দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত চষে ফেলছেন তিনি।


মঙ্গলবারই নয়াদিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে বিরোধীদের একজোট করে একটি বৈঠক সেরে ফেলেছেন তিনি। সেই বৈঠকে কংগ্রেস ছাড়াও ছিলেন তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, ন্যাশনাল কনফারেন্স, তেলুগু দেশম, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল সমেত আরো বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা।


বিজেপি প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে একক বৃহত্তম দল হলেও যাতে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা না পায়, সেই কৌশলের কথাই হয়েছে সেই বৈঠকে, সূত্রের খবর এমনটাই।


বুথফেরত সমীক্ষার ফল আসল ফলাফলের সঙ্গে মিলছে না, এমন ঘটনা যে আকছার ঘটে, তার নিদর্শন আছে অনেক। কিছুদিন আগেই অস্ট্রেলিয়া আর ব্রাজিলে ঘটেছিল এমনই ঘটনা। বুথফেরত সমীক্ষা বলল এক, হয়তো হল আর এক।


অনেকে বলছেন, ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা। সেই নির্বাচনেও ক্ষমতায় ফিরবে এনডিএ সরকারই, এমনটাই বলেছিল বুথফেরত সমীক্ষা। যদিও তা মেলেনি। উল্টো তৈরি হয়েছিল মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার। এ রকম কিছু হবে, সেই আশাতেই বুক বেঁধে আজ ভোটগণনার দিকে কড়া নজর রাখছে বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা ও বিবিসি


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com