শিরোনাম
রাজীব গান্ধীকে ফের আক্রমণ নরেন্দ্র মোদির
প্রকাশ : ০৯ মে ২০১৯, ১১:৪২
রাজীব গান্ধীকে ফের আক্রমণ নরেন্দ্র মোদির
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বফোর্স, শিখ দাঙ্গা, ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা। ভোটে আচমকাই ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর প্রসঙ্গ তুলে এই তিন তির নিক্ষেপ করতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।


রাজধানী দিল্লিতে বুধবার তার প্রথম সভাতেও তার অন্যথা হল না। তবে সেই রাজীব-অস্ত্রেই তিনি সুকৌশলে মিশিয়ে দিলেন চতুর্থ হাতিয়ার সেনা ও দেশভক্তি। আর সেটা করতে শুধু রাজীব নয়, ইন্দিরা-জওহরলাল নেহরুকেও ভোটের ময়দানে নামালেন মোদি।


যা দেখে কংগ্রেস বলছে, নেহরু-ইন্দিরা-রাজীবরা কি ভোটে লড়ছেন! হার নিশ্চিত বুঝে মোদি তাদের এত আক্রমণ করছেন কেন? করছেন নোটবন্দি, জিএসটি নিয়ে অপদার্থতা ঢাকতে আর বেকারত্বের মতো সমস্যা মোকাবিলায় নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে।


দিল্লির রামলীলা ময়দানে রাজীবকে নিয়ে কংগ্রেসকে বিঁধতে বিঁধতে মোদি তুলে আনেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর অভিযোগের কথা। মোদি বলেন, নামদার আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, সেনাকে আমার ব্যক্তিগত সম্পত্তি করে ফেলেছি। কিন্তু আমি আজ জানাচ্ছি, আসলে কে সেনাকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি করেছেন?


এরপরেই তিনি শোনালেন, রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সমুদ্র নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইএনএস-বিরাট যুদ্ধজাহাজে গোটা পরিবার নিয়ে একটি নির্জন দ্বীপে দশ দিনের ছুটি কাটাতে যান। নিয়ে যান শ্বশুরবাড়ির লোকেদেরও। যুদ্ধজাহাজকে ট্যাক্সি হিসেবে ব্যবহার করেন তারা।


মোদী বলেন, ভারতীয় সেনার বিমানেও ইতালি থেকে আসা বিদেশিদের ছুটিতে নিয়ে যান। তাদের দেখভালের জন্য সেনার বিশেষ হেলিকপ্টারও মোতায়েন ছিল। আর শুধু রাজীব নন, নেহরু-ইন্দিরার আমল থেকেই এই পারিবারিক ছুটি কাটানোর চল রয়েছে।


রামলীলায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা তখনো শেষ হয়নি, রাজীবের সপরিবার ছুটি কাটানো নিয়ে পত্র-পত্রিকায় ছাপা খবরও জানাতে শুরু করল বিজেপি। বিজেপি জানাল, ১৯৮৭ সালে লক্ষদ্বীপের বাঙ্গারাম দ্বীপে দশ দিনের ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন রাজীব। সোনিয়া, রাহুল, প্রিয়াঙ্কাসহ ছিলেন সোনিয়া মা, বোন ও বোনের স্বামী। ছিলেন অমিতাভ বচ্চন, জয়া বচ্চন ও তাদের ছেলে-মেয়েরাও।


আর ছিলেন মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন সিংয়ের ভাই ও তার স্ত্রী। যে অর্জুনের আমলে ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা ঘটেছিল।


১৯৫০ সালে জওহরলাল নেহরুও ‘আইএনএস দিল্লি’-তে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার সময়ে পরিবারকে নিয়ে যান। সেই জাহাজের ডেকে ছোট্ট রাজীব ও সঞ্জয়ের ছবিও পোস্ট করে বিজেপি।


মোদি ও বিজেপির এই আচমকা নতুন আক্রমণের জবাবে কংগ্রেস বলছে, আসলে পাঁচ বছরে নিজের যাবতীয় ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরাতেই আবোল-তাবোল বকছেন প্রধানমন্ত্রী।


দলের নেতা পবন খেরা বলেন, ভোট হচ্ছে ২০১৯ সালে। কেন প্রধানমন্ত্রী বার বার প্রয়াত রাজীব গান্ধীর কথা তুলছেন? কেন নেহরু-ইন্দিরাকে টেনে আনছেন? কোন আসনে ভোটে লড়ছেন তারা? দরকার হলে নিজের গুরু নাথুরাম গডসের নামে ভোট লড়ুন না মোদি! দলের ইস্তাহার আর সরকারের কাজ নিয়ে ভোটে লড়ুন। হার নিশ্চিত বুঝে মানুষের নজর ঘোরানোর চেষ্টা।


প্রিয়াঙ্কাও বলেন, নোটবাতিল, জিএসটি, মেয়েদের নিরাপত্তা ও অপূর্ণ প্রতিশ্রুতি নিয়ে দিল্লির মেয়ে হিসেবে আপনাকে চ্যালেঞ্জ করছি। অপ্রাসঙ্গিক বিষয় তুলে নজর ঘোরাবেন না।


বুধবার সকালে হরিয়ানা রাজ্যের সভা থেকেই রাজীবের প্রসঙ্গ তুলে আসছেন মোদি। দিল্লিতেও বললেন, কংগ্রেস এখন ন্যায়ের কথা বলছে। শিখ দাঙ্গার অন্যায়ের হিসেব কে দেবে? শিখ দাঙ্গার সঙ্গে জড়িতকে মুখ্যমন্ত্রী (কমল নাথ) করা কীসের ন্যায়? আমার আমলে শিখ দাঙ্গার দোষীরা জেল ও ফাঁসিকাঠে পৌঁছেছে।


এর পরেই বফোর্সের সঙ্গে অগুস্তা আর ভোপালকে জড়িয়ে রাহুলকে আক্রমণ করলেন কুত্রোচ্চি মামা, মিশেল মামা, অ্যান্ডারসন মামা বলে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com