শিরোনাম
আসামে গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগে মুসলিমকে গণপ্রহার
প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:১২
আসামে গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগে মুসলিমকে গণপ্রহার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে ৬৮ বছর বয়সী এক মুসলিমকে গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে।


গণপ্রহারের পরে শওকত আলি নামে ওই ব্যক্তিকে শূকরের মাংসও খাওয়ানো হয় বলে তিনি অভিযোগ করেছেন পুলিশের কাছে। এদিকে পুলিশ বলেছে, মাংস বিক্রির অভিযোগ আনা হলেও শওকতের দোকানে কোনো মাংস পাওয়া যায়নি।


শওকতকে ছাড়াও একজন হিন্দুকেও ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মারধর করা হয়।


বিশ্বনাথ চরিয়ালি জেলার পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট রাকেশ রোশন বলেন, রবিবার স্থানীয় একটি বাজারে কিছু দুষ্কৃতি শওকত আলিকে মারধর করে এই অভিযোগ তুলে যে তিনি নাকি রান্না করা গোমাংস বিক্রি করছিলেন। বাজারের ম্যানেজার কমল থাপাকেও মারা হয়।


এই ঘটনার ৩৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে সাদা দাড়িওয়ালা এক ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে, তার কাপড় ছেঁড়া এবং কাদামাখা। চারপাশে একদল লোক, তারা উত্তেজিত গলায় প্রশ্ন করছেন, যে তার মাংস বিক্রির লাইসেন্স আছে কিনা, তিনি বাংলাদেশী কিনা, তার নাম জাতীয় নাগরিকপঞ্জীতে আছে কিনা ইত্যাদি।


বাজারের ইজারাদার কমল থাপাই নাকি গরুর মাংস বিক্রির অনুমতি দিয়েছিলেন - এ অভিযোগে তাকেও মারধর করা হয়।


রোশন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছলেই দুষ্কৃতিরা সবাই পালিয়ে যায়। আমরা গোমাংস কেন, কোনো ধরনের মাংসই শওকতের খাবারের দোকানে খুঁজে পাইনি।


ওই দুজনকে পুলিশ উদ্ধার করার পর একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।


রোশন বলেন, গরুর মাংস বিক্রি করুক বা না করুক, তাকে মারধর করার অধিকার কারো নেই। আর এটাকে কোনো বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ঘটানো সেটাও বলা যায় না, কারণ একজন হিন্দুকেও মারা হয়েছে।


এ ব্যাপারে আসামের হাইলাকান্দির সমাজকর্মী আব্দুল মান্নান লস্কর বলেছেন, আসামের এক হাজারের বছরের ইতিহাসে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতির ইতিহাস রয়েছে। ধর্মের ভিত্তিতে এখানে কোনো সহিংসতার প্রমাণ নেই। কিন্তু এই গত কয়েক বছর ধরে বিশেষ করে গত ২০১৪ সালে বিজেপি যখন কেন্দ্রীয় সরকারে এবং ২০১৬ সালে আসামে ক্ষমতায় আসে তারপর থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি হিন্দু-মুসলিম ইস্যুগুলোকে নিয়ে ঝামেলা করা হচ্ছে। এরই একটা অংশ হিসেবে একে আমরা দেখছি।


ভারতের অনেক রাজ্যে এখন গরু জবাই বা মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ , তবে আসামে গবাদিপশু জবাই করার জন্য পশুপালন দফতরের একটা অনুমোদন দরকার হয়। সাধারণত ১৪ বছরের বেশি বয়স্ক বা 'স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারানো' পশুই জবাইয়ের অনুমতি দেয়া হয়। সুত্র: বিবিসি ও পার্সটুডে


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com