দেশে প্রতি বছর ৮ হাজারের বেশি নারী জরায়ুমুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত। শনাক্ত ও মৃত্যুর দিক থেকে নারীদের ক্যান্সারের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের পরেই জরায়ুমুখের ক্যান্সারের স্থান।
১৪ জানুয়ারি, শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে জরায়ুমুখের ক্যান্সার সচেতন দিবস ও সচেতনতা মাস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এমনটি জানান আলোচকগণ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আইএআরসির তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর ৮ হাজারের অধিক নারীর জরায়ুমুখের ক্যান্সার শনাক্ত হয়। শনাক্ত ও মৃত্যুর দিক থেকে নারীদের ক্যান্সারের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের পরেই জরায়ুমুখের ক্যান্সারের স্থান।
এ অবস্থায় সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি টিকা কার্যক্রম জোরদার করা জরুরি বলে জানানো হয়। জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে ৯ থকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের দুই ডোজ টিকা দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে বিশেষজ্ঞরা বলেন, কিশোরীদের এই টিকার আওতায় আনা গেলে জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য রোগে পরিণত হবে।
অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউটের ক্যান্সার ইপিডেমিওলজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন।
ডা. রাসকিন বলেন, আমি জোর দিয়ে বলছি বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোনো ক্যান্সার স্ক্রিনিং জাতীয় কর্মসূচি নেই। আমি পদে থাকা অবস্থায় যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি কিন্তু নীতি নির্ধারকদের বোঝাতে পারিনি। উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও ৩ ধরণের ক্যান্সার স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম করা সম্ভব। ব্রেস্ট, সারভাইকাল ও ওরাল ক্যানসার। আমাদের দেশে ওরাল ক্যান্সার স্ক্রিনিং-এর নাম গন্ধও নেই।
ডা. রাসকিন আরও বলেন, জরায়ুমুখে ক্যান্সার প্রতিরোধে যে স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম চলছে তা অসংগঠিত, অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ। এভাবে হলে আগামী একশ বছরেও ২০ শতাংশ মানুষকে আওতায় আনা সম্ভব হবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সদস্য ও সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের কর্মক্ষেত্র ও আন্তরিকতায় অনেক সমস্যা আছে। মানুষের মাঝে সচেতনতারও অভাব আছে। কিন্তু আমাদের দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক ভালো। প্রাথমিকভাবে রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থাও আছে। আমাদের স্বাস্থ্য নীতিমালা এখনও অসম্পূর্ণ। আমরা কারও বুদ্ধি নিতে চাই না। আমরা যা বুঝি তাই। এভাবে চললে আসলে কোনো কার্যকরী নীতিমালা তৈরি সম্ভব না।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. টি এ চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) গাইনী বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লতিফা শামসুদ্দিন, গাইনী অনকোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন ও জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. হালিদা হানুম আক্তার প্রমুখ।
বিবার্তা/রিয়াদ/জামাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]