কর কাঠামোতে নতুন বিন্যাস না হলে মধ্যবিত্তের চাপ বাড়বে। বাধাগ্রস্ত হবে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকাণ্ড। শুধু করের চাপই নয় মূল্যস্ফীতির চাপও বাড়ছে, যা নিম্নবিত্তকে আরো সংকটে ফেলবে। আর এই সংকটে নষ্ট হবে অর্থনীতির ভারসাম্য।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বাজেট সংলাপ ২০১৮’এ এমন শঙ্কা তুলে ধরা হয়।
রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে রবিবার সকালে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ২০১৮-১৯’এর বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা ও বাজেট পাসের জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশমালা নিয়ে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়।
সংলাপে সিডিপির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেন, খেলাপি ঋণ সংস্কৃতি পুরনো, যা জিয়াউর রহমানের আমল থেকে শুরু হয়েছে, এখনো চলমান।তবে বন্ধে তেমন কোনো শক্ত অবস্থান দেখি না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য বণ্ড মার্কেটের নির্ভরতা বাড়ছে, সেখানে আমাদের দেশে সবাই ব্যাংকের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর্থিকখাতে সংস্কার এখন খুব জরুরী।
সংলাপে বলা হয়, ব্যাংক খাতে কর্পোরেট কর কমানোর ফলে কর আদায় কমবে। কিন্তু এর সুফল নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। ব্যক্তি কর আয়সীমা পরিবর্তন দরকার বলে মনে করে সিপিডি।
এতে আরো বলা হয়, অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবা উবার, পাঠাওয়ের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট নিম্ন এবং মধ্যবিত্তকে চাপে ফেলবে। এছাড়া ছোট ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে ২ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করাতে চাপ বাড়বে। উৎপাদন ও ফার্নিচার ব্যবসায় করারোপ করা হয়েছে যা চাপ তৈরি করবে।
এছাড়া গুড়ো দুধ আমদানিতে কর ছাড় এবং তামাক রফতানিতে সুবিধা দেয়ার ফলে সংকট তৈরি করবে। দেশীয় উৎপাদিত পোশাকের উপর শুল্ক বৃদ্ধি বিদেশি কাপড় আমদানিকে উৎসাহিত করবে বলে মনে করছে এই গবেষণা সংস্থা।
কর কাঠামোর বিন্যাসে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তথ্য-প্রযুক্তি খাতও। সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচির আওতা বাড়লেও তা অপ্রতুল বলে মন্তব্য করেছে সিপিডি।
রফতানি আয় ও রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যপূরণ চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করছে সিপিডি। এর ফলে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণও কঠিন হবে।
তবে চালের আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত যৌক্তিক বলে মনে করে এই সংস্থা।
সিডিপির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের সংলাপ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সিডিপির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (লোটাস কামাল), বিশেষ অতিথি হিসেবে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
বিবার্তা/মৌসুমী/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]