দেশের চার কোটি মানুষের জীবনযাপনের মান ইউরোপের মানুষের মতো বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশের ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপের মানুষের সমান। এই ৪ কোটি মানুষ দাম দিয়ে ভালো পণ্য কিনতে পারেন।’

১৭ অক্টোবর, মঙ্গলবার ১৮তম জাতীয় ফার্নিচার মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

রাজধানীর বসুন্ধরার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে মেলার আয়োজন করে বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি (বিএফআইওএ)।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এ এইচ এম আহসান, দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ ফার্নিচার রপ্তানিকারক সমিতির (বিএফইএ) সভাপতি ও এফবিসিসিআই পরিচালক কে এম আকতারুজ্জামান, বিএফআইওএ ভাইস চেয়ারম্যান ও মেলা কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব শেখ আব্দুল আউয়াল, বিএফআইওএ মহাসচিব ইলিয়াস সরকার ও সাংগঠনিক সম্পাদক এ করিম মজুমদার। বিএফআইওএ চেয়ারম্যান সেলিম এইচ রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

টিপু মুনশি বলেন, ‘ফার্নিচার প্রোডাক্ট আধুনিক হয়েছে। খুবই ভালো লাগে, দেশের আধুনিক টেকসই ফার্নিচার দেখে। দক্ষ লোকবল তৈরি না হওয়া সত্ত্বেও যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে তা আকর্ষণীয়।’

ফার্নিচার তৈরিতে ব্যবহৃত বেশ কিছু কাঁচামাল দেশে তৈরি হয় না। আমদানি করতে হয়। এর বিপরীতে বিভিন্ন ধরনের শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। শিল্প সংশ্লিষ্টদের শুল্ক ছাড়ের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বেশ কিছু জিনিস আমদানি করতে হয়। সেগুলো আমদানি করে রপ্তানি করতে গেলে কম্পিটিটিভনেস পাবে না। এই বিষয়টাও দেখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এসব বিষয় আলোচনা হয়েছে। যে পরিমাণ রপ্তানি করা হবে, তার বিপরীতে যতটুকু কাঁচামাল আমদানি করা হবে তাতে যেন বন্ডের সুবিধা চান তারা। এটা সম্ভব। এখানে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আছেন, আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি, কীভাবে এটার একটা ওয়ে আউট বা পথ বের করা যাবে, যাতে করে আমদানি বাড়ে।’

দেশীয় ফার্নিচার সম্পর্কে টিপু মুনশি বলেন, ‘একসময় ইমপোর্ট হতো, এখন আর ইমপোর্ট দরকার নেই। আমরাই দেশে অনেক ভালো প্রোডাক্ট বানাতে পারি। এত সুন্দর কোয়ালিটি আপনারা তৈরি করেছেন।’

ফার্নিচার রপ্তানির বিষয়ে তিনি বলেন, বিদেশে রপ্তানি বাড়ানো দরকার, এতে উৎপাদন বাড়বে, লোকবল বাড়ানো যাবে, বৈদেশিক মুদ্রা আসবে।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু লোকাল মার্কেটে না থেকে এক্সপোর্ট বাড়ান, বৈদেশিক মুদ্রার দরকার আছে।

মূল মেলার পাশাপাশি দুপুর আড়াইটার দিকে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুরা এতে অংশ নিতে পারবে। ২টি গ্রুপে প্রথম ১০ জন করে মোট ২০ জনকে দেওয়া হবে পুরস্কার। এ ছাড়া প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে সার্টিফিকেট ও স্কেচ বুক প্রদান করা হবে।

প্রসঙ্গত ১৭ বছর ধরে জাতীয় ফার্নিচার মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবার মেলার ১৮তম আয়োজন। মেলার উদ্দেশ্য হলো, দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের বিকাশ ঘটানোর পাশাপাশি দেশের বাইরেও রপ্তানি বাড়ানো। এরই মধ্যে বিদেশে ফার্নিচার রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে জানান আয়োজকেরা।

মেলায় হাতিল, আখতার, ওমেগা ফার্নিচার, নাভানা, পারটেক্স, রিগ্যাল, নাদিয়া, ব্রাদার্স ফার্নিচারসহ ৩০টি প্রতিষ্ঠানের মোট ১৮৫টি স্টল রয়েছে।

দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের সর্ববৃহৎ এ আয়োজন চলবে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত।

বিবার্তা/জবা