
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি সরকার মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলেও আন্দোলন স্থগিত করেনি শিক্ষার্থীদের একাংশ। টানা তিন দিনের আন্দোলনের পরও কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি পূরণের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দেয়নি বলে অভিযোগ করছেন তারা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ এখনো কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান করছেন।
শুক্রবার (১৬ মে) রাতে সাড়ে ৮টায় আন্দোলনস্থল থেকে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইস উদ্দীন।
এরআগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বলেছিলেন, আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের স্বার্থ দেখি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছে সরকার।
পরে রাত সাড়ে ৮টায় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইস উদ্দীনের আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান আন্দোলনকারী বহু শিক্ষার্থী। এরপর রাত ৯টায় বৃষ্টি শুরু হলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী কাকরাইল মোড়ে বসে স্লোগান দিতে থাকেন। ‘মুলা মুলা’ স্লোগান দেন অনেকে।
আন্দোলনকারীরা জানান, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দাবি বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণা না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরবেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ) ওমর ফারুক জিলন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদেরকে দাবি আদায়ে আশ্বাস দিয়েছে শুধু, লিখিতভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। আমাদের দাবি অনুযায়ী সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দেয়নি। আমাদের সঙ্গে অনেকজন অনশন করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা যাবো না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শেখ ইব্রাহিম হোসাইন শাওন বলেন, ‘সুস্পষ্ট বিবৃতি এবং লিখিত ছাড়া আমরা ১৯ ব্যাচ মাঠ ছাড়ছি না, ছাড়বো না।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপ ‘আমরা জকসু চাই’ গ্রুপে বহু শিক্ষার্থী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আবির হোসেন নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, “আন্দোলন স্থগিত প্রধান উপদেষ্টা কি নিজের মুখে কিছু বলছেন? আমরা তিন দিন ধরে রাস্তায় কেন? ‘লং মার্চ টু যমুনার’ উদ্দেশ্যেই ছিল দাবিগুলো নিয়ে সরাসরি ড. ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা। এবারও যদি প্রত্যেকবারের মতো উড়ন্ত কোনো আশ্বাস পেয়ে অবস্থান ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে অনেক বড় বোকামি হবে।”
১৭তম ব্যাচের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তাশরিফুর রহমান জয় লিখেছেন, ‘দাবি মেনে নেওয়ার নামে নতুন মুলা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জবির বাজেট হয় ২০১ কোটি টাকা। আমাদের দাবি ছিল প্রস্তাবিত বাজেট ৩০৬ কোটি টাকার সম্পূর্ণ অংশের অনুমোদন দেওয়া এবং আলাদাভাবে আবাসন ভাতার ব্যবস্থা করা। জগন্নাথের এতজন আহত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের রক্তের মূল্য; রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে হাজার হাজার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর রাজপথে নির্ঘুম দুই রাতের আন্দোলনের ফসল মাত্র ৫০ কোটি টাকা?’
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]