ডিবি কার্যালয়ে জবির দুই শিক্ষক, নিজের দোষে ফেল করেছে মিম
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪, ১৭:৪৯
ডিবি কার্যালয়ে জবির দুই শিক্ষক, নিজের দোষে ফেল করেছে মিম
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার মৃত্যু নিয়ে আলোচনার মধ্যেই গত ১৮ মার্চ জবির ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন এবং বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন একই বিভাগের ছাত্রী কাজী ফারজানা মীম।


এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০ মার্চ, বুধবার ওই দুই শিক্ষককে ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। সঙ্গে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকেও ডাকা হয়েছে।


এদিন দুপুর সোয়া ২টা থেকে মূল অভিযুক্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন ও একই বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।


জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিম সাংবাদিকদের বলেন, নিজের দোষে ফেল করেছে মিম। তাকে ডেকেও মিড টার্ম বা এসাইনমেন্ট করানো যায়নি। ১০০ মার্কসের মধ্যে পাস ৪০ এ। সেখানে সে পেয়েছে ২৩.৫০।


ডিবি কার্যালয়ে ডাকা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিভাগীয় চেয়ারম্যান হালিম বলেন, ডিবি প্রধান আমাদের ডেকেছিলেন। নানা বিষয়ে জানতে চাইলেন। আমরা আমাদের মতো করে সব বলেছি। অভিযোগ তো দুই রকমের। এর মধ্যে একটা যৌন হয়রানি সংক্রান্ত। সেটি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। যার ফলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি সংক্রান্ত বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট (তদন্তকারী, অভিযুক্ত, অভিযোগকারী, সাক্ষী) কেউ কথা বলতে পারব না। এটা বিচারাধীন।


তবে অন্য বিষয়টি ছিল মিমের ফেল ইস্যু? মিম নামে ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় কীভাবে শূন্য পেল? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‍বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার রেজাল্ট ফাইনাল করার একটা ফরমুলা আছে। গোপনীয়ভাবে খামে নম্বরপত্র সংগ্রহ করা হয়। এইক্ষেত্রে বিধিটাই এমন। গোপনীয়ভাবে নম্বরপত্র সিলগালা করে সংগ্রহ করা হয়। কেউ যদি ১০০ স্কোরের মধ্যে ৪০ পায় তাহলে সে পাস। বেশি হলে ফরমুলা অনুযায়ী গ্রেড নম্বরটা হয়।


হালিম বলেন, ওই শিক্ষার্থী সেকেন্ড ইয়ারের সেকেন্ড সেমিস্টারে এক কোর্সে যেটা আরেকজন শিক্ষক নিয়েছেন তার নাম হুমায়রা ফাতেমা আমিন। ওই কোর্সে ৪০ মার্কস থাকে। দুটো মিড টার্মে ১০+১০=২০, এসাইনমেন্ট-১০, ক্লাস এটেন্ডেন্ট-১০। এই ৪০ মার্কস শুধুমাত্র ওই কোর্স টিচারের এখতিয়ার। অন্য কেউ বা অন্য কোনো শিক্ষক এটার রেসপন্সিবলও না। ওই শিক্ষার্থী ম্যাডামের ৪০ মার্কসের কোনো কাজে যোগ দেয় নাই। মিড টার্ম বা এসাইনমেন্টও জমা দেয়নি। তিনবার নোটিশ দিয়ে দিয়ে ওই শিক্ষক মিড টার্ম নিয়েছে। কিন্তু মিম যোগাযোগও করেনি। শিক্ষক তো আর অনন্তকাল বসে থাকবে না। সে কারণে সে জিরো পেয়েছে। এখন তার পাস ফেল তো বাকি ৬০ মার্কসের মধ্যে। সেখানে যদি সে ৪০ পাইতো তাহলেও সে পাস করতো। কিন্তু সেটা সে পায়নি।


সে সেকেন্ড ইয়ারে ফেল, এরপর চতুর্থ সেমিস্টারে আরেকটা কোর্সেও ফেল আছে। আর সপ্তম সেমিস্টারে কনটিউনিটি ফিল্ম রাইটিং কোর্স আছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের আমরা চারটা করাই। খুবই কঠিন। সিনেমা তৈরি করতে এসব শেখানো হতো।


অভিযোগকারী শিক্ষার্থী আসলে কতো মার্কস পেয়েছিল? জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে মূলত ১০০ মার্কসের মধ্যে পেয়েছিল ২৩.৫০। যেহেতু সে ৪০ পায় নাই স্বভাবত সে ফেল। ১০০ মার্কসের মধ্যে ৪টা বিষয়। ৪০ মার্কসে সে জিরো। বাকি ৬০ এরমধ্যে সে ২৩.৫০। বার বার চেয়েও এসাইনমেন্ট জমা দেয় নাই। রেজাল্ট তো ঝুলেছে। চেয়েও দেয় নাই আরেকটা ছেলে শাহরিয়ার। এটাই বিষয়।


তিনি আরও বলেন, পাস করতে হলে পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষা ছাড়া ফেল করলে সে দায় তো শিক্ষকের না। তিনটি সেমিস্টারে সে একই কাজ করেছে। অনার্সের যে রেজাল্ট হয়েছে সেখানে তাদের ফেল আছে।


ডিবি কি বিষয়ে জানতে চেয়েছে? এমন প্রশ্নে বিভাগীয় চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়েছে। আমরা তথ্য দিয়েছি। সত্য-মিথ্যা প্রমাণ তো তাদের বিষয়।


বিবার্তা/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com