এখন থেকে জবিতে এসি সংযোজনে লাগবে পূর্বানুমতি
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৬:৩০
এখন থেকে জবিতে এসি সংযোজনে লাগবে পূর্বানুমতি
জবি প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

অনুমতি ব্যতীত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) কোনো বিভাগ, ইন্সটিটিউট ও দপ্তরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) লাগানো যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


৫ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ।


তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসি লাগাতে গেলে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অনেক সংকীর্ণ জায়গা। বিশেষ করে নতুন ভবনে অনেক রুম আছে যেখানে আসলেই এসি দরকার। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি অনেক বিভাগে প্রয়োজনের বাইরেও এসি লাগানো হচ্ছে।


তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা। সেটা মাথায় রেখে এর আগেও আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের নির্দেশনা দিয়েছি। প্রয়োজন ব্যতীত যেন কোথাও এসি লাগানো না হয় সেটা আমরা খেয়াল রাখবো। বিভাগ বা দপ্তর যারাই লাগাতে চাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনুমতি নিবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব লোক আছে তারা লাগিয়ে দিবে।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়েই চলছে অনুমোদনহীন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের (এসি) ব্যবহার। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন বিভাগ, দপ্তর কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রকৌশল দপ্তরকে না জানিয়েই চলছে এসি লাগানোর মহোৎসব। পরিকল্পনা ছাড়াই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এসির ব্যবহারে বেড়েছে বিদ্যুতের ব্যবহার। এতে বাড়ছে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও।


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, শুধুমাত্র নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনেই এক হাজার টনের বেশি এসি রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নিয়মবহির্ভূতভাবে লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া গণিত ভবন, বিজ্ঞান ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান ভবন, কলা ভবন মিলিয়ে প্রায় চারশ’ টনের বেশি এসি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই একটি মাত্র সাব-স্টেশন থেকে পুরো ক্যাম্পাসের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। সেটির কার্যক্ষমতা কমতে কমতে বর্তমানে প্রায় ১২০০ কেভিতে নেমেছে, যা কোনোভাবেই ভবনগুলো বৈদ্যুতিক লোড নিতে পারত না। পরে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনসহ বিভিন্ন ভবনের জন্য সাব-স্টেশনটি ২০০০ কেভি ধারণক্ষমতার করা হয়েছে।


উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এসব এসি ব্যবহারে দৈনিক যে পরিমাণ বিদুৎ খরচ হয়, তার যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে নতুন স্থাপনকৃত বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনটিও। ফলে কিছুদিন পরপরই ক্যাম্পাসে বৈদ্যুতিক গোলযোগ দেখা দিচ্ছে। বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়াতে চলতি বছরের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাবলগুলোর আংশিক পরিবর্তন করা হলেও তা কোনো কাজে আসছে না।


শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা নয়, অনুমোদনহীন এসব এসি ব্যবহারে প্রতি মাসে বিশাল অঙ্কের বিদ্যুৎ বিলও গচ্চা দিতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়কে। চলতি বছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে প্রায় ১২ লাখ টাকার বিদুৎ বিল পরিশোধ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত মাত্রায় অনুমোদনহীন এসির ব্যবহারের ফলে এর পরের তিন মাসে তা প্রায় দেড় গুণ বেড়েছে। জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে বিদ্যুৎ বিল বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে সতেরো লাখ টাকা।


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী বেশিরভাগ তারই অনেক পুরোনো। কোনো ভবনে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি হয়ে গেলে ওইসব তার লোড নিতে পারে না। তখন বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে। প্রকৌশল দপ্তরকে না জানিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ এসি লাগিয়েছে। এতে তারগুলোর ওপর লোড আরও বেড়েছে। যার ফলে শর্ট সার্কিটসহ বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার পরিমাণও বেড়েছে। আমরা বারবার বলার পরও তারা শোনেনি। এখন সমস্যা হলে আমাদেরকে জানানো হচ্ছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।


তিনি আরও বলেন, এর আগেও আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অনুমতি নিয়ে এসি লাগাতে বলেছি। রুটিন উপাচার্যের সাথে কথা বলে আবারও দ্রুত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।


বিবার্তা/এহসান/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com