প্রাথমিকের নতুন শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বুধবার শুরু
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৪:১৮
প্রাথমিকের নতুন শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বুধবার শুরু
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের ১০ দিনের ইনডাকশন প্রশিক্ষণ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে। ২৯১টি উপজেলার বা থানার রিসোর্স সেন্টারে নতুন নিয়োগ পাওয়া সহকারী শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।


প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এ প্রশিক্ষণ চলবে। ২৯১টি উপজেলায় ৪৩৪টি ব্যাচের ১০ দিনের প্রশিক্ষণ জাতীয় ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া নিরবিচ্ছিন্নভাবে চলবে। ১০ দিনের এ প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে নতুন শিক্ষকদের প্রত্যেকে ৫ হাজার টাকা করে সম্মানী পাবেন। এর বাইরে প্রতিজন শিক্ষক খাবারভাতা পাবেন ২ হাজার ৮০০ টাকা। ২৯১টি উপজেলায় এ প্রশিক্ষণ আয়োজনের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১২ কোটি ১৪ লাখ টাকা।


গতকাল সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এ প্রশিক্ষণ আয়োজনের নির্দেশনা দিয়ে সব উপজেলা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।


অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ শাখার উপপরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান বিল্লাহ স্বাক্ষরিত চিঠিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের এ প্রশিক্ষণ আয়োজনের বিস্তারিত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।


অধিদপ্তর জানিয়েছে, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ২৯১টি উপজেলা ও থানা রিসোর্স সেন্টারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষদের ১০ দিনব্যাপী ৪৩৪টি ব্যাচে ইনডাকশন প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রশাসনিক অনুমোদন রয়েছে। প্রশিক্ষণের বরাদ্দ ও ব্যয় মঞ্জুরী দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণটি আগামী ২৯ মার্চ (বুধবার) শুরু করতে হবে।


অধিদপ্তর আরও বলছে, এ প্রশিক্ষণের সময়কাল ১০ দিন। প্রশিক্ষণ শুরু করার পর বিরতিহীনভাবে (জাতীয় দিবস ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া) প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে হবে। প্রতি ব্যাচে প্রশিক্ষণার্থী সংখ্যা হবে সর্বনিম্ন ২০ জন এবং সর্বোচ্চ ২৫ জন। একই উপজেলা থেকে শিক্ষক পাওয়া না গেলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে একই জেলার অন্য উপজেলা থেকে শিক্ষক ডেপুটেশন দেয়া যাবে। তাছাড়া ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানকৃত কোনো শিক্ষক ডিপিএড ও ইনডাকশন প্রশিক্ষণ গ্রহণ না করে থাকলে তাদেরকে এ প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নবনিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করবেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে ব্যাচ ও অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রশিক্ষণ পরিচালনা করতে হবে। প্রাক-প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা এ প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত হবেন না। প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল অনুসারে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করতে হবে।


অধিদপ্তর জানিয়েছে, ইউআরসি-টিআরসি ইন্সট্রাক্টররা প্রশিক্ষণ শুরুর আগেই প্রশিক্ষণ পরিচালনার প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করে নির্ধারিত দিনে সরবরাহ করবেন। উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসার প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাচের অংশগ্রহণকারীদের ডেপুটেশন দেবেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসার শিক্ষকের নাম, পদবী ও অন্যান্য তথ্য পিইএমআইএস সফটওয়্যারে এন্ট্রি করে কেবলমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নবনিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষককে ইনডাকশন প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবেন। পিইএমআইএস সফটওয়্যার এ এন্ট্রি করা ছাড়া প্রশিক্ষণে মনোনয়ন দেয়া যাবে না।


প্রতি ব্যাচে দুইজন প্রশিক্ষক থাকবেন। তারা হলেন, ইউআরসি-টিআরসি ইন্সট্রাক্টর বা সহকারী ইন্সট্রাক্টর একজন এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার কর্তৃক নির্বাচিত একজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার। প্রশিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ইতোপূর্বে যারা ইনডাকশন প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দক্ষ তাদের মধ্যে থেকে নির্বাচন করতে হবে। প্রশিক্ষকের সংকট হলে পিটিআই সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অন্য ইউআরসি বা টিআরসি ইন্সট্রাক্টর বা পিটিআই ইন্সট্রাক্টর অথবা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনোনয়নের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রশিক্ষণ পরিচালিত হবে। প্রশিক্ষণার্থীদের সকাল সাড়ে ৮টায় ভেন্যুতে উপস্থিত থাকতে হবে। ইউআরসি ও টিআরসি ইন্সট্রাক্টররা প্রশিক্ষণে আয়ন ব্যয়ন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং যেকোনো ধরনের আর্থিক অনিয়মের জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন। নির্দেশনা না মেনে কোনো শিক্ষককে ইনডাকশন প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার তিন দিনের মধ্যে প্রশিক্ষণার্থী এবং প্রশিক্ষকদের নাম ও সংখ্যার পুর্ণাঙ্গ প্রতিবেদক অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ বিভাগে পাঠাতে হবে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের।


এ প্রশিক্ষণের বাজেট বিভাজন হাতে এসেছে। ২৯১টি উপজেলায় নতুন শিক্ষকদের এ প্রশিক্ষণের জন্য ১২ কোটি ১৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ টাকার প্রশিক্ষণার্থী প্রতিজন শিক্ষক প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে দশ দিনের প্রশিক্ষণে ৫ হাজার টাকা পাবেন। প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা প্রতিদিন ২৮০ টাকা করে দশ দিনে ২ হাজার ৮০০ টাকা খাবার ভাতা পাবেন।


প্রশিক্ষকরা প্রতিদিন ৮০০ টাকা করে দশ দিনের প্রশিক্ষণের জন্য সম্মানী পাবেন ৮ হাজার টাকা। সহয়াক কর্মচারীরা প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে সম্মানী পাবেন ৩ হাজার টাকা। প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের ব্যাগ, ফাইল, প্যাড, কলম ইত্যাদি দেয়া হবে।


বিবার্তা/কেআর

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com