ইউজিসির পত্রের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাবি শিক্ষক সমিতি
প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:৪৯
ইউজিসির পত্রের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাবি শিক্ষক সমিতি
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

সম্প্রতি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বাংলাদেশের কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিভাগীয় প্রধান বরাবর একটি পত্র প্রকাশ করেছে। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে বলে মনে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।


৭ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নিজামুল হক ভুইঁয়া ও সাধারণ সম্পাদক ড. জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক ইস্যুকৃত একটি পত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নজরে এসেছে। পত্রে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে কিছু তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে বলে মনে করে সংগঠনটি। যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে।


সরকারি হিসাব সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির বরাত দিয়ে উক্ত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতনের সঙ্গে 'বিধি-বহির্ভূতভাবে প্রদত্ত গবেষণা-ভাতা হিসেবে প্রদত্ত ৮৮, ৪১০০০/- টাকা চার সপ্তাহের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। এক্ষেত্রে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিধিবহির্ভূত শব্দযুগল ব্যবহার করা হয়েছে, যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই বলে মনে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতনের সঙ্গে ইউজিসি কর্তৃক অনুমোদিত এবং বরাদ্দকৃত বাজেট থেকেই নির্দিষ্ট পরিমাণ গবেষণা ভাতা প্রদান করা হতো এবং সেটা দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত একটি রীতি ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। ইতোমধ্যে এই ভাতা প্রদান বন্ধ করা হয়েছে, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকরা সহজভাবে মেনে নেননি।


এতে আরও বলা হয়েছে, গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পেশাগত উন্নতির জন্য বাধ্যতামূলক, সকল শিক্ষককেই গবেষণা করতে হয়। তাই গবেষণা-ভাতা তাদের জন্য একটি যৌক্তিক প্রণোদনা, এটি তাদের অধিকার। তাছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের সিনেট ও সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত বাজেট অনুসারে শিক্ষকদের প্রদত্ত টাকা ফেরৎ চাওয়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত এ রকম একটি সুবিধাকে হঠাৎ করে 'বিধি-বহির্ভূত' হিসেবে আখ্যায়িত করা এবং ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়কে লেখা চিঠিতে অপ্রাসঙ্গিকভাবে এর উল্লেখ ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করেন শিক্ষক সমিতি।


এতে করে শিক্ষক সমিতি মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য নতুন নতুন কঠোর নীতিমালা প্রণয়ণের পাশাপাশি তাদের জন্য প্রচলিত নানা রকম সুবিধা কর্তনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, যা সাধারণ শিক্ষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষের জন্ম দিচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার সম্ভাবনা তৈরি করছে।


উল্লেখ্য যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্ত্বশাসন প্রদান করেছেন। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেও ঘোষণা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, যদিও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাযজ্ঞের পর সে উদ্যোগ আর বাস্তবায়িত হয়নি। পরবর্তী সময়ে ২০১২ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সঙ্গে বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা প্রদানের বিষয়টিকে সমর্থন করেছিলেন। বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র গঠনের সুতিকাগার এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর কোনো ধরনের অযৌক্তিক শর্ত আরোপের অপচেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কোনো অবস্থাতেই মেনে নেবে না।


অনতিবিলম্বে উক্ত চিঠিটি প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবি জানায় শিক্ষক সমিতি। অন্যথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষক সমিতি কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি।


বিবার্তা/সাইদুল/জেএইচ


সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com