বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শেরেবাংলা হলের তিনটি কক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ব্যবহৃত দুই শতাধিক জিআই পাইপ, ১৩টি রড, দুটি রাম দা উদ্ধার করেছে হল কর্তৃপক্ষ।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (৩ জুন) সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
হলটির ২০০৬, ৩০০৫ এবং ৫০০৯ নম্বর কক্ষ থেকে এসব অস্ত্র উদ্ধার করেন প্রভোস্ট আবু জাফর মিয়া। বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেন। এ ঘটনার পর শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল করেছে।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, কক্ষগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ নেতা তাহমিদ জামান নাভিদ এবং একই বর্ষের ইংরেজি বিভাগের তানজিম মঞ্জুসহ তাদের অনুসারীরা অবস্থান করে থাকেন। অভিযানকালে কক্ষগুলো থেকে এসব দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রুম্মান ইসলাম জানান, নাভিদ, মঞ্জু এবং আরও কয়েকজনকে শুক্রবার গভীর রাতে হলে অস্ত্র ঢোকাতে দেখেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে শনিবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ২০০৬ নম্বর কক্ষে তালা লাগিয়ে প্রভোস্টকে খবর দেন। বিষয়টি টের পেয়ে কক্ষটিতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা জানালা দিয়ে দুটি বগি দা নিচে ফেলে দেয়। পরে প্রভোস্ট এসে তালা খুলে এ কক্ষ থেকে বস্তাবন্দি ২৫টি জিআই পাইপ উদ্ধার করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, ২০০৬ নম্বর কক্ষে অভিযান পরিচালনা করার পর ৩০০৫ এবং ৫০০৯ নম্বর কক্ষে অভিযান চালানো হয়। সেই কক্ষ থেকে দেড় শতাধিক জিআই পাইপ, প্রায় ৩০টি রড উদ্ধার করা হয়। এসব কক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা নাভিদ ও মঞ্জু নিয়ন্ত্রণ করত।
রাতের মিছিলে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী ইরাজ রাব্বানী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে অভিযান পরিচালনা করার জন্য দীর্ঘদিন থেকে কর্তৃপক্ষকে বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা নানাভাবে গড়িমসি করেছে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম গতিশীল রাখতে এবং সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক।’
এ ব্যাপারে হল প্রভোস্ট আবু জাফর মিয়া বলেন, ‘বিকেলে একটি কক্ষে তালা দেয়ার খবর পেয়ে দ্রুত হলে যাই এবং শিক্ষার্থীদের সামনে ২০০৬ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করি। সেখান থেকে ২৫টি জিআই পাইপ উদ্ধার করা হয়েছে। কক্ষটিতে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের তানজিদ মঞ্জু ও তাহমিদ জামান নাভিদ থাকে। এরপর আরও দুটি কক্ষে অভিযান চালিয়ে কিছু রড, দা ও জিআই পাইপ পাওয়া গেছে। দাগুলো আগে আনা ছিল হয়তো। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনার পর কক্ষগুলো সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।’
বিবার্তা/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]