শিরোনাম
অনলাইন প্লাটফর্ম
‘লাইভ কালেকশনস বাই জেসিয়া’র বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ
প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২১, ১৮:০৫
‘লাইভ কালেকশনস বাই জেসিয়া’র বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

অনলাইন থেকে পছন্দের পোশাক কিনে প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এক গ্রাহক।সম্প্রতি ফেসবুকে ‘লাইভ কালেকশনস বাই জেসিয়া’ নামের অনলাইন পেজ থেকে পোশাক অর্ডার করে এই প্রতারণার শিকার হন বলে জানয়েছেন আফরিন নুসরাত নামের সচেতন গ্রাহক।


অনলাইনে গ্রাহকের সাথে প্রতারণা করার অপরাধে ‘লাইভ কালেকশনস বাই জেসিয়া’ এর স্বত্বাধিকারি জেসিয়ার বিরুদ্ধে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ করেন আফরিন নুসরাত। সেই সাথে শাহবাগ থানায় জিডি করেছেন তিনি।


প্রতারণার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আফরিন নুসরাত বিবার্তাকে বলেন, আমি ‘লাইভ কালেকশনস’নামের অনলাইন পেজ থেকে দুটা ড্রেস অর্ডার করেছিলাম। গতকাল শনিবার (১৭ জুলাই) ছিল ডেলিভারি দেয়ার তারিখ। আমি বাসায় ছিলাম না। সহকারীর কাছে টাকা দিয়ে গিয়েছিলাম। ‘লাইভ কালেকশনস বাই জেসিয়া’ এর পক্ষ থেকে দুইটা ড্রেস দিয়ে যাওয়া হয়। ড্রেস দুইটার মধ্যে একটা ছিল গোটা পাতির কাজ। এমব্রয়ডারি কাজ হওয়ায় সেটা না হয় মানলাম। কিন্তু অন্য ড্রেসটা ব্যবহার করা। উনি আমাকে ব্যবহার করা একটা ড্রেস দিয়েছেন। আমি সিউর উনি এটা লাইভে পরে এসেছিলেন। আর সেটা খুলে আমাকে দিয়ে দিয়েছেন। বগলের কাছে এবং থ্রি কোয়াটার হাতের কাছে জামা পরলে যে কুচকানো থাকে সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।



আফরিন নুসরাত আরো বলেন, ড্রেসটা বাসায় দিয়ে যাওয়ার ১ ঘন্টা পরেই আমি জেসিয়াকেফোন দিয়ে বিষয়টা জানিয়েছি এবং ওনার বাসায় ড্রাইভার দিয়েড্রেসটা পাঠাতেও চেয়েছি। ওনাকে জানানোর পর উনি বললেন, আমি এখন বাইরে আছি।পরে কথা বলে সমস্যাটা দেখছি।এরপরে উনি নানান টাল-বাহানা শুরু করেন।পরে আবার যোগাযোগ করে ভিডিও কলে ড্রেসটা দেখাতে যাওয়ার কথা বললে তাতে তিনি রাজি হননি।


অনলাইনে প্রতারক ব্যবসায়ীদের বিচারের দাবি জানিয়ে সচেতন এই গ্রাহক বলেন, আমার পোশাকের টাকার অ্যামাউন্টটা ছোট সেটার থেকে বড় বিষয় হলো অনলাইনে এইসব প্রতারকদের কারণে যারা ভালো, তারা ব্যবসা করতে পারছেন না।এইসব টাউটদের থেকে বিশাল এই সম্ভবনাময় বাজারকে উদ্ধার করতে হবে।আমি বিশ্বাস করি, এমন ধরনের মানুষদের বিচার হওয়া উচিত।যাতে যারা সত্যিকারের ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা হিসেবে অনলাইনে পোশাক বিক্রি করে চলছেন, মানুষ ঠকায় না তাদেরকে যেন সকলে সম্মান করেন। তাই আমি বিষয়টা নিয়ে গতকালই জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অনলাইনে গ্রাহককে প্রতারণা করার অপরাধে অভিযোগ করি।আজ বিষয়টা নিয়ে আপডেট জানতে চাইলে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর থেকে জানানো হয় নিয়ম মতো এসব বিষয়গুলো কার্যকর হতে ৯০ দিন সময় লাগে।তাছাড়া এখন তো ঈদ অন্যদিকে করোনার সময়।তাই সব মিলে বিষয়টা দেখতে একটু সময় লাগবে।


অনলাইন ব্যবসায়ী জেসিয়ার প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ করে নুসরাত বলেন, বিষয়টা নিয়ে যখন অভিযোগ করেছি তখন আমার সাথে ফোনে বলেছেন এক কথা। এর আগে অর্ডার দেয়ার সময় অনলাইন পেজে বলেছেন এক কথা, এরপরে, লাইভে এক কথা বলেছেন। সবগুলোর ডকুমেন্ট আছে। এখন বলছেন যে এটা ইনট্যাক ছিলো। আর আমি কেন পণ্য দেখার সময় দেখে বুঝে নেইনি।তিনি এও বলেছেন বিক্রি করা পণ্য তো ফেরত নেই না।



এদিকে, বিষয়টি নিয়ে আফরিন নুসরাত নিজের ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দেন। এরপরে শনিবার (১৭ জুলাই) রাতে জেসিয়া অনলাইনে লাইভ করেন। ওই লাইভে এসে আফরিন নুসরাতের অভিযোগ বিষয়ে যে কথা বলেন তার সাথে আগের কথার মিল নেই বলে অভিযোগ নুসরাতের। তিনি বলেন, ভদ্র মহিলা তার লাইভে এসে স্বীকার করেছেন যে এই ড্রেসটা তিনি পরেছেন এবং ওনার ভাষায় সেটা ব্যবহৃত নয়।কারণ উনি সেটা ধুয়ে ফেলেন নাই।উনি ৪৪ সাইজের ড্রেস পরেন সেটাও বলেছেন।এবং এটার সাথে উনি আড়ং বা অনান্য শপে ড্রেস যারা ট্রায়াল দেয় সেটার তুলনা করেছেন।আর ড্রেসটা ডামিতে পরা ছিল।উনার পরনের ড্রেস নাকি সেল হয়।উনি প্রতিদিন তাহলে এমন ড্রেস পরেন যেটা পরে কারো লাগলে সেটা দিয়ে দেন বোঝা গেলো।উনি উল্টো যুক্তি দেখিয়েছেন যে আমি কেনো নেয়ার সময় জিজ্ঞাসা করি নাই যে এটা উনি পরেছেন কিনা।


তিনি বলেন, লাইভে এসে জেসিয়া অনেকটা রুক্ষভাবে আমার বিষয়ে উপস্থাপন করেছেন।আমি তো শুধু উনার কাছে ড্রেসটা পরিবর্তন করতে অনুরোধ করেছি।আর করে দিলেন না।আমি এসব ধোকাবাজদের সঠিক বিচার চাই।


অনলাইন ব্যবসায়ী জেসিয়ার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিবার্তাকে বলেন, ড্রেসটা মিনিকুইন বা ডলে পরানো ছিল।তাই হয়তো উনার মনে হতে পারে ড্রেসটা ব্যবহার করা।আসলে উনি চাইলে আমি তো ড্রেসটা চেঞ্জও করে দিতে পারি। উনি তো কোন কথাই শুনছেন না।আমি তো আজকে নতুন ব্যবসা করছি না।এমনি অভিযোগ আগে কোনোদিন আসেনি।


বিষয়টি নিয়ে আফরিন নুসরাত নিজের ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দিলে ওই স্ট্যাস্টাসের কমেন্টে বিভিন্ন জন মতামত করেছেন।


অনলাইনে কেনাকাটার অভিজ্ঞতা বিষয়ে শ্যামলী আজিজ শিমু বলেন, এই মহিলা ফ্রড বিজনেস করে।আমার সাথেও এমন করেছে। এত লো কোয়ালিটির ড্রেস দিয়ে বলেন নাকি এটা ইন্ডিয়ান ড্রেস। ফালতু একটা মহিলা।আবার লাইভে বড় বড় কথা বলে।আমিও ওই মহিলার বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইছিলাম।কিন্তু আমার হাসব্যান্ড বারণ করেছে।তাই আর করা হয়নি।ডাকাত একটা মহিলা। ডাকাতি করা শুরু করছে।উনাকে আইনের আওতায় আনা দরকার।


অরিত্রা চৌধুরী নামে একজন লিখেছেন, কাপড় না ধুয়ে দিলে ওইটা উইজড না, এটা কেমন কথা! আর, শোরুম থেকে ট্রয়াল দেয়া শেষে ইনট্যাক ছাড়া কাপড় কে কিনে। এই বিশাল সম্ভবনাময় একটা সেক্টর এরকম কিছু মানুষের হাতে পড়ে শেষ হতে চলেছে।


ফুয়াদ হারুন লিখেছেন, আমি জানি লাইভে যে ড্রেসটা পরে লাইভ করে সেটা উপস্থাপনকারীর নিজের হয়। সেটা কখনো কাস্টমারকে দেয়া হয় না। ভালো ভালো যত অনলাইন শপ আছে সব জায়গাতে আমি এরকমই দেখি।আর আপু, উনার লাইভে দেখে বিরক্ত।সে আপনার উপর দোষ চাপাতে চাচ্ছে।ইনিয়ে-বিনিয়ে আপনি রাজনীতি করেন তা বলতে চাচ্ছে।


শামিমা নাসরীন প্রিয়া নামে আরেকজন লিখেছেন, তার কালকের লাইভ রেকর্ড দেখলাম। সেখানে সে উল্টো আপনার দোষ দিচ্ছেন। আপনি কেন চেক করে নিলেন না। প্রোডাক্ট রিসিভ করার পর নাকি রিটার্ন নেয়া হয় না। আর বার বার আপু পলিটিক্স করেন এইসব বলছিলেন। পলিটিক্যাল পাওয়ার দেখাচ্ছেন, তবে তার লাইভ দেখে খুব বিরক্ত আপু। সে খুবই অভদ্র একজন। এখন তার পেজের রিভিউ অপশন হাইড করে দিয়েছে। আপু খুব দ্রুত তার শাস্তি হোক এটাই চাওয়া।


দেশের অনলাইন প্লাটফর্মগুলো নিয়ে শারমিন সুলতানা লিখেছেন, যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা অনলাইনগুলোর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নাই। অনলাইন শপগুলোর এমন ভাঁওতাবাজির শিকার হয়েছি আমিও। তবে কিছু কিছু অনলাইন পেজ ডিফেক্টড প্রডাক্ট দেয়ার পর সরি এবং এক্সচেঞ্জ করে দিয়েছে।এই মহিলার সাথে কথোপকথন দেখে আমার একদম ফালতু এবং রুড টাইপ মনে হলো! অভিযোগ জানানোর পর সত্যি অর্থে ব্যবসায়ী হলে অবশ্যই তার সহযোগিতা করার মনোভাব থাকা উচিত।


বিবার্তা/গমেজ/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com