বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ও সংকটময় দেখাতে একটা গোষ্ঠী মরিয়া: শেখ পরশ
প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:১৪
বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ও সংকটময় দেখাতে একটা গোষ্ঠী মরিয়া: শেখ পরশ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের এক পরিকল্পিত নীলনকশার বাস্তবায়ন চলছে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা চলছে যে, সাধারণ মানুষ যেন সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে। দেশের সুশীলসমাজের একটি অংশ এখন জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তৎপর হয়েছেন। আর এ নীলনকশার বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছেন এক-এগারোর কুশীলবরা। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।


৮ এপ্রিল, শনিবার বেলা ১১টায় তুরাগ, কামারপাড়া স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা’র খাদ্যসামগ্রী উপহার বিতরণ কার্যক্রমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন।


যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, আর ৯ মাস পরে আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা সংসদ নির্বাচন। ঐ নির্বাচনে আমার বিশ্বাস আপনারা নিশ্চয় তাদেরকেই ভোট দিবেন, যারা আপনাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং আশা-আকাঙ্খার বাস্তবায়নে কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। আপনারা নিশ্চয় তাদেরকেই ভোট দিবেন, যাদের দ্বারা গণতন্ত্র সুসংহত হবে, শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সকলের জন্য সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। এই অঙ্গীকারসমূহ পূরণে আমাদের সকলেরই একযোগে কাজ করা উচিত, যাতে করে আমরা গড়ে তুলতে পারি আগামীর সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ।



তিনি বলেন, ধারাবাহিকভাবে ২০০৮ সালের পর থেকে দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রয়েছে বলেই একটা স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে। কিছু প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ সৃষ্টি হবে ইনশাআল্লাহ। গত পরশু পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও একটি বড় মাইলফলক সাফল্য অর্জন হলো। এত অর্জন সত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজকে যে ষড়যন্ত্র চলছে সেটা এ দেশের উন্নয়ন ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, এদেশের মেহনতি কর্মজীবী মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আপনাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবিলায় আমাদের বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তাই গ্রুপিং, বিভক্তি এবং ভেদাভেদের কোনভাবেই এখন কাম্য না।


তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত এখন বেশ জোরেশোরে চলছে। তিনি বলেন, কিছু গণমাধ্যম এখন খুবই নগ্নভাবে বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ। যার ন্যাক্কারজনক বহিঃপ্রকাশ সম্প্রতি জনগণের সম্মুখে এসেছে প্রথম আলোর হলুদ সাংবাদিকতার মাধ্যমে। এটাকে শুধু হলুদ সাংবাদিকতা বলা যায় না। এই ধরণের সাংবাদিকতা সমগ্র সাংবাদিক পেশাজীবীদের কলঙ্কিত করেছে। এর মাধ্যমে শিশুর সরলতাকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রদ্রোহিতা করা হয়েছে। একজন সাংবাদিকের সন্তান হিসেবে ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। আমি প্রথম আলোকে প্রত্যাখ্যান করে এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেবার জন্য সরকারের কাছে দাবি করছি। চক্রান্তকারীরা দেশটাকে ঝুঁকিপূর্ণ, সংকটময় ও রাষ্ট্রকে ব্যর্থ দেখানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।


তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবরা মনে করছেন, তারা যদি নির্বাচনে না অংশগ্রহণ করে, সংসদ নির্বাচন বৈধতা পাবে না। এই বলে তারা আমাদের ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে। আমি তাদের স্মরণ করিয়া দিতে চাই, এর আগেও তারা নির্বাচন বয়কট করেছে। তাতে বৈধতার কোন সংকট হয় নাই। নির্বাচন এবং জাতীয় সংসদ বৈধতা পেতে কোন ঘাটতিও হয় নাই এবং সর্বোপরি দেশের উন্নতির ধারাও অব্যাহত রয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। কোন একটা দল নির্বাচনে না অংশগ্রহণ করলে বৈধতার কোন সংকট হয় না।


পরশ বলেন, সম্প্রতি রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এত নিকৃষ্ট বিএনপির রাজনীতি যে, আজকে বঙ্গবাজারে ঘটে যাওয়া ট্রাজেডি নিয়েও তারা অপরাজনীতি করে। সাম্প্রতিককালে ঘন ঘন অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনা খুবই দুঃখজনক ও সন্দেহজনক ঘটনা এবং বিএনপির যেহেতু অগ্নিসন্ত্রাসের রেকর্ড আছে স্বাভাবিকভাবে সন্দেহভাজনদের তালিকায় তাদেরকে গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। তাদেরকে সন্দেহের বাইরে ছেড়ে দেয়া যায় না। আর ফখরুল সাহেবের কথা শুনে মনে হয়েছে, সে অনেক কিছু জানে।


বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা, ইফতারের নামে প্রহসন না করা, ইফতারের নামে অর্থ ব্যয় না করে সেই অর্থ অসহায় মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার যে নির্দেশনা, সেই নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যাচ্ছে আওয়ামী পরিবারের নেতা-কর্মীরা। বঙ্গবন্ধু কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা একটাই মানুষের পাশে দাঁড়াও। আমরা সেই নির্দেশনাই পালন করছি। আমরা যখন বঙ্গবন্ধু কন্যার নির্দেশে মানুষের কল্যাণে কাজ করছি, মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছি সেই সময় এই বিএনপি-জামায়াত নামি-দামি হোটেলে, নামি-দামি খাবার খেয়ে ইফতার পার্টি করছে। অথচ আমার মা-বোনেরা, আমার বাবারা রোজা রেখে একটু চা-মুড়ি দিয়ে ইফতার করবে সে সাধ্য তাদের নেই। করোনার মহামারির সময় সারা পৃথিবী বিধ্বস্ত, অর্থনীতির চাকা থেমে গিয়েছিল। ঠিক তারপরই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পৃথিবীর সবদেশ আজকে অর্থনৈতিকভাবে বিধ্বস্ত। বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকা থমকে গিয়েছে। সেখানে নিত্যপণ্য সামগ্রী কিনতে মানুষের নাভিশ্বাস ওঠছে। অথচ বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের ধারাবাকিতা রক্ষা করে। তাই আমি বলতে চাই-আগামী নির্বাচনে আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে আবারও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বানাবেন এই প্রত্যাশা করি।



বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হাবিব হাসান এমপি বলেন, আপনাদের যেকোন দুর্যোগ-দুর্বিপাকে আমরা আপনাদের পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এদেশ থেকে দারিদ্রতা দূর করবেন। তাই আগামী দিনেও নৌকায় ভোট দিবেন এবং বঙ্গবন্ধু কন্যাকে প্রধানমন্ত্রী বানাবেন।


এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দফতর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা।


এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক অ্যাড. মো. হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, সহ-সম্পাদক মো. মাইদুল ইসলাম, ইঞ্জি. মো. কামরুজ্জামান, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, মো. হুমায়ুন কবির, গোলাম শাহরিয়ার রঞ্জু, ইঞ্জিনিয়ার মো. মুক্তার হোসেন চৌধুরী কামালসহ-কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।


বিবার্তা/সোহেল/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com